থেমে নেই সড়কে মৃতু্য

কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একের পর এক সড়কে মৃতু্যর ঘটনা ঘটছেই। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, সড়ক নিয়ে নানা পরিকল্পনা, দুর্ঘটনার জন্য নতুন শাস্তির বিধান, চালক ও নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টাসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের পরও- কোনো কিছুই যেন রোধ করতে পারছে না সড়ক দুর্ঘটনা। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, সড়ক পথে যেন মানুষের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে অত্যন্ত নির্মমভাবে। আমরা মনে করি, সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় জেলায় ট্রাক চাপায় ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। তথ্য মতে, ময়মনসিংহের আলালপুর এলাকায় ট্রাক চাপায় মাহিন্দ্র ও অটো রিকশার ৪ যাত্রী নিহত হয়েছে। গত শনিবার কুষ্টিয়া শহরতলির ত্রিমোহিনীতে ট্রাক চাপায় সাবুল মন্ডল নামে এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছে। অন্য এক দুর্ঘটনায় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার রানাখড়িয়া এলাকায় ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে পথচারী নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে উপজেলার সাগরদীঘি-গারোবাজার সড়কের মুরাইদ এলাকায় ট্রাক ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাইম মিয়া নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। শনিবার শৈলকূপায় ট্রাকের ধাক্কায় বশির আলী নামে এক ভ্যানচালকের মৃতু্য হয়েছে। একইদিনে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে ট্রাকের চাপায় রমিজ উদ্দীন নামে এক পথচারী নিহত হয়েছে। এ ছাড়া শনিবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মিনি ট্রাক উল্টে এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। আমরা বলতে চাই, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে প্রতিনিয়তই সড়ক দুর্র্ঘটনার যে চিত্র পরিলক্ষিত হয়, তাতে এটা স্পষ্ট যে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই দেশের মানুষের। এই ধরনের ঘটনা বারবার কেন ঘটছে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখা দরকার, কিছুদিন আগে যাত্রী কল্যাণ সমিতির এমন হিসাবও সামনে এসেছিল যে, সড়কে প্রতিদিন গড়ে ২০ জনের মৃতু্য হচ্ছে। এই ধরনের সংবাদ নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। আমরা মনে করি, পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমন মনে হয়, যেন মানুষের জীবন কত তুচ্ছ! দুর্ঘটনায় ঝরে যাচ্ছে একেকটি তরতাজা প্রাণ। কোমলমতি শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। সঙ্গত কারণেই সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়। এ কথাও মনে রাখতে হবে, যোগ্য ও দক্ষ লোকেরাই যেন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পায় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিআরটিএর। যদি যোগ্য লোককে লাইসেন্স দেয়া হয়, তা হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে এমন আশা করা অযৌক্তিক নয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দক্ষ চালক নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা যেসব কারণে ঘটছে সেগুলোকে সামনে রেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। গাড়ির ফিটনেস, সড়ক-মহাসড়কের পরিস্থিতি, যত্রতত্র ওভারটেকিংসহ সামগ্রিক বিষয়গুলোকে আমলে নিয়েই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতাকে বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি। দক্ষ ও শিক্ষিত চালকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।