বায়ুদূষণ রোধে উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৪

অনলাইন ডেস্ক
কোনোভাবেই দূষণমুক্ত হচ্ছে না রাজধানী ঢাকা। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত খবরে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত যেসব তথ্য উঠে আসে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রসঙ্গত, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২০টি শহরের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল ১৩তম। এ সময় আইকিউআরের বাতাসের মান সূচকে ঢাকার স্কোর ছিল ১০৬। এক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, বাতাসের এই মান 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর।' প্রসঙ্গত, বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে। আমরা বলতে চাই, এটা বিবেচনায় নিতে হবে যে, আইকিউএয়ারের দেওয়া তালিকায় বলা হয়েছে, বাতাসের মান 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর।' যখন জানা যাচ্ছে ঢাকার বাতাসের মান 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর।' তখন এটাও স্মর্তব্য, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মধ্যে আছে বয়স্ক, শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা। তথ্য মতে, বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২০টি শহরের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল ১৩তম। অন্যদিকে প্রথম অবস্থানে ছিল উগান্ডার কাম্পালা। সূচকে শহরটির স্কোর ১৮৩। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর ও ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা। লাহোরের স্কোর ১৫৬ আর জাকার্তার ১৫৪। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ্য যে, আইকিউএয়ারের মানদন্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১-১০০ হলে তাকে 'মাঝারি' বা 'গ্রহণযোগ্য' মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১-১৫০ স্কোরকে 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর' ধরা হয়। স্কোর ১৫১-২০০ হলে তা 'অস্বাস্থ্যকর' বায়ু। স্কোর ২০১-৩০০ হলে তাকে 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে 'দুর্যোগপূর্ণ' বা 'ঝুঁকিপূর্ণ' ধরা হয়। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ সংক্রান্ত উদ্বেগ বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে। এর আগে এমনটিও আলোচনায় এসেছিল যে, বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ইটভাটাগুলো। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ প্রকল্পের গবেষণায় উঠে এসেছিল, সারাদেশে ইটভাটা আছে প্রায় ৮ হাজার। আর ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতে রয়েছে সাড়ে ৭০০টির বেশি। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, ইটভাটাগুলো প্রতি মৌসুমে ২৫ লাখ টন কয়লা ও ২২ লাখ টন জ্বালানি কাঠ পোড়ায়। ইটভাটার দূষণে ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার টন গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হয়। ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা প্রায় ৫৮ শতাংশ দায়ী বলেও তথ্য উঠে এসেছিল। অন্যদিকে, বায়ুদূষণের কারণ হিসেবে নির্মাণকাজ, যানবাহন, সড়ক ও মাটি থেকে সৃষ্ট ধুলার কারণে, বিভিন্ন জিনিসপত্র, পস্নাস্টিক পোড়ানোসহ নানা কারণ উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, দূষণের কারণগুলো আমলে নিয়ে দূষণমুক্ত করতেও যথাযথ পদক্ষেপ জরুরি। সামগ্রিক পরিস্থিতি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি বায়ুদূষণের ভয়াবহতা বিশ্লেষণপূর্বক প্রয়োজনীয় উদ্যোগও অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, বায়ুদূষণে প্রাণহানি শুধু নয়, নানা ধরনের অসুখ-বিসুখসহ জনসাধারণের জীবনে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি বায়ুদূষণের ভয়াবহতা বিশ্লেষণপূর্বক প্রয়োজনীয় উদ্যোগও অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, বায়ুদূষণে প্রাণহানি শুধু নয়, নানা ধরনের অসুখ-বিসুখসহ জনসাধারণের জীবনে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সর্বোপরি বলতে চাই, এর আগে জানা গিয়েছিল বায়ুদূষণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবেশগত স্বাস্থ্য হুমকি। ফলে বায়ুর মানের বিষয়টি আমলে নিতে হবে। বায়ুদূষণের কারণে বাচ্চাদের স্বল্প ও দীর্ঘস্থায়ী রোগব্যাধি হয়। ফুসফুসে ক্যানসার, হৃদরোগ, লিভার ও কিডনিতে জটিলতা বাড়তে পারে এমন বিষয়ও এর আগে উঠে এসেছে। ফলে ঢাকার বায়ুদূষণ সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বায়ুদূষণ রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বায়ুদূষণ রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক- এমনটি প্রত্যাশিত।