শেয়ারবাজারে ব্যাপক উত্থান উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সরকারের পতনের পর প্রথম দিনের লেনদেনে শেয়ারবাজারে ব্যাপক উত্থান হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বেড়েছে লেনদেন হওয়া ৮৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। এক দিনে ডিএসইর সূচক বেড়েছে প্রায় ২০০ পয়েন্ট। এছাড়া চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) উত্থান হয়েছে। বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। এ প্রসঙ্গে এটাও আমলে নেওয়া দরকার, সূচকের এতটা উত্থান ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর বা গত পৌনে চার বছরে আর দেখেনি এ বাজার। প্রসঙ্গত আমরা উলেস্নখ করতে চাই, শেয়ারবাজারে ব্যাপক উত্থান হয়েছে বলে যখন জানা যাচ্ছে তখন, বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে অনিশ্চয়তার মাঝে এশিয়ায় ঊর্ধ্বমুখী গতির বিয়ষটিও সামনে এসেছে। তথ্য মতে, অনিশ্চয়তার পূর্বাভাস থাকলেও সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ (ইন্ট্রাডে) শেয়ারদরের নিরিখে গত মঙ্গলবার জাপানি পুঁজিবাজারে ২০০৮ সালের অক্টোবরের পর সবচেয়ে বড় ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। এর আগের দিন সোমবার বিশ্বব্যাপী শেয়ার বিক্রির চড়া প্রবণতা দেখা যায়, এতে পুঁজিবাজারের সূচকে বড় ধরনের পতন ঘটে। এর একদিন পরই অনিশ্চয়তার বিপরীতে এশিয়ার পুঁজিবাজার উচ্চ গতি নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে বলেও জানা যায়। আমরা মনে করি, যখন গত পৌনে চার বছর পর সূচকের এমন উত্থান দেখল দেশের শেয়ারবাজার তখন এটি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ উদ্যোগও অব্যাহত রাখতে হবে। তথ্য মতে, গত মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৯৬টির কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ৩১৭টির বা ৮২ শতাংশের দর বেড়েছে, ৫৮টির দর কমেছে এবং অপরিবর্তিত ৯টির দর। অন্যদিকে, দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর লেনদেন চিত্রও ছিল একই রকম। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১১৭ শেয়ার বা ২৬ শতাংশ দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে (১০ শতাংশ বেড়ে) কেনাবেচা হয়েছে। তবে লেনদেনের মাঝে এ সংখ্যা ২৩৫টিতে উন্নীত হয়। ৫ শতাংশ বা এর বেশি হারে দর বেড়েছে ২৪৩ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের। আমরা বলতে চাই, নানা সময়ে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা উঠে এসেছে। ফলে, যখন সম্প্রতি পুঁজি বাজারে স্বস্তি এসেছে এটাকে আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা যাচ্ছে এমন আলোচনা যেমন উঠে এসেছে, তেমনি জানা যাচ্ছে একটু বেশি দাম দিয়ে হলেও শেয়ার কেনার জন্য অনেকে মরিয়া ছিলেন। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, কয়েক সপ্তাহের অচলাবস্থার পর এখন দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে এমন মতামতও সামনে এসেছে। লক্ষণীয় যে, লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বিনিয়োগকারীদের নতুন করে শেয়ার কেনার চাপ এতটাই বেশি ছিল, লেনদেন শুরুর মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে শেয়ার কেনার চাপ দেখা গেছে। এতে সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর প্রথম মুহূর্তেই ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ১৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৫৩৮৯ পয়েন্টে উঠে যায়। মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যে সূচকটি আরও ৯০ পয়েন্ট বা আগের দিনের তুলনায় ২৫১ পয়েন্ট বেড়ে ৫৪৮১ পয়েন্ট ছুঁইছুঁই অবস্থানে পৌঁছায়। ডিএসইতে এদিন ৭৫০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়- যা ৫৪২ কোটি টাকা বা ২৬১ শতাংশ বেশি। সর্বোপরি বলতে চাই, নানা সময়ে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত উদ্বেগ উৎকণ্ঠা উঠে এসেছে। যা আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। যখন এটা আলোচনায় আসছে যে, পুঁজি বাজারে স্বস্তি এসেছে তখন তা ইতিবাচক। এছাড়া গত পৌনে চার বছর পর সূচকের এমন উত্থান দেখল শেয়ারবাজার, এই বিষয়টিও এড়ানো যাবে না। বেশি দাম দিয়ে হলেও শেয়ার কেনার জন্য অনেকে মরিয়া ছিলেন বলেও যখন জানা যাচ্ছে তখন এই বিষয়টি থেকেও আগ্রহ ও স্বস্তি স্পষ্ট হয়। আমরা মনে করি, শেয়ারবাজারে ব্যাপক উত্থানের বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।