ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য কঠোর পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর প্রায় সর্বত্রই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ছিনতাই। নগরীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি, বস্তি এলাকা থেকে অভিজাত পাড়া- সব জায়গায় ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ায় আতঙ্কে নগরবাসী। পথচারীদের রাস্তা আটকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে যেমন ছিনতাই হচ্ছে, তেমনি প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেলেও ছিনতাইকারীরা হামলে পড়ছে নিরীহ মানুষের ওপর। গত কয়েক মাসে ছিনতাইকারীদের হামলায় বেশ কয়েকটি হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। মোহাম্মপুরে সম্প্রতি একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনায় আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো পুরোপুরি সক্রিয় না হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। পাশাপাশি কারাগারে থাকা অপরাধীরা জামিনে এসে ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। তবে, ছিনতাইয়ের প্রকৃত ঘটনার তুলনায় থানায় মামলার সংখ্যা কয়েকগুণ কম। মামলা নিতে অনীহা, আবার কখনো ঝামেলা এড়াতে পুলিশের দ্বারস্থ না হওয়াই এর বড় কারণ। ছিনতাই বন্ধে মোহাম্মদপুরে রাস্তায় নেমে এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে পুলিশি টহল জোরদার ও চেকপোস্ট বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন অপরাধ বিশেজ্ঞরা। এদিকে, আগের চেয়ে রাজধানীতে ছিনতাই বাড়েনি বলে মনে করছেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ছিনতাইসহ সব ধরনের অপরাধ দমনে ভবিষ্যতেও পুলিশ আরও শক্ত ভূমিকা নেবে এমনটাই আশা করছেন নগরবাসী, পুলিশ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
এটা সত্য, ছিনতাইকারীরা সাধারণত গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। তবে ভোরের দিকে ছিনতাই বেশি হয়ে থাকে। দিনের বেলায়ও রাজধানী ঢাকায় ছিনতাই হয়ে থাকে। ছিনতাইকারীরা মহিলাদের ভ্যানিটিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় সহজেই। এ জন্য ছিনতাইকারীরা মোটর সাইকেল ব্যবহার করে থাকে। কখনো কখনো তারা প্রাইভেট কারও ব্যবহার করে থাকে। এই শহরে চালককে হত্যা করে গাড়ি, সিএনজি চালিত বেবিট্যাক্সি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশের হিসাবেই রাজধানী ঢাকায় ছয় হাজারের বেশি ব্যক্তি ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৭৩৭ জন ছিনতাই এবং ৪ হাজার ৪৬১ জন ডাকাতিতে জড়িত। সরকার পতনের আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৈরি করা কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারে এসব অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বৃত্তান্ত ছিল। এতে ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় ছিনতাই-ডাকাতিতে জড়িত ব্যক্তিদের তথ্য ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অপরাধীদের নিয়ে গড়ে তোলা তথ্যভান্ডার অপরাধী শনাক্ত ও ঘটনা প্রতিরোধের একটি মাধ্যম।
আমরা মনে করি, কেবল এর ওপর নির্ভর করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। কারণ, অনেক সময় অপরাধীরা তাদের এলাকা থেকে সরে যায়। তখন এই জায়গায় আবার নতুন অপরাধী যুক্ত হয়ে অপরাধ ঘটায়। তাই পুলিশকে নিয়মানুবর্তিতার সঙ্গে ঘটনা ঘটার আগেই অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে হবে। পাশাপাশি সেসব এলাকা টহল ও নজরদারির মধ্যে রেখে অভিযান চালাতে হবে। আমরা মনে করি, পুলিশ সক্রিয় হলেই রাজধানী থেকে ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধ কমে যাবে। নিশ্চিত হবে নাগরিকদের যাতায়াতজনিত নিরাপত্তা।