গণপিটুনিতে নিহত ৪ জন কঠোর পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
যতই দিন যাচ্ছে দেশে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বিপজ্জনকভাবে বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হুঁশিয়ারির পরও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা না কমায় উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে দেশের মানুষ। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে। মানবাধিকার সংগঠনের উদ্বেগের পরও কেন থামছে না মব জাস্টিস সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। ঢাকা ও নড়াইলে গণপিটুনিতে গত বুধবার ৪ জনের মৃতু্য হয়েছে। রাজধানীর সবুজবাগে বাইকদিয়া এলাকায় নিহত রমজান শীর্ষ সন্ত্রাসী বলে স্থানীয়রা দাবি করেছে। নড়াইলে গরুচোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে পথচারী নিহত হলে সন্দেহভাজন একজনকে গণপিটুনি দেয়া হয়। কিছুদিন আগে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পর পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত হয়েছিল। এ ধরনের ঘটনা সমাজে প্রায়ই ঘটছে কোনোরকম প্রতিকার ছাড়াই।
মনে রাখতে হবে, যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারায় তখন সমাজে এ ধরনের ঘটনা বেড়ে যায় এবং মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণপিটুনিতে হত্যা নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমানে এর সংখ্যা ভয়ানকভাবে বেড়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এটি বাড়ছে। সরকারে উচিত, এ ধরনের হত্যার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। দেশে সারাক্ষণ আন্দোলন ও অবরোধের ঘটনা ঘটেই চলছে। এমন পরিস্থিতিতে একশ্রেণির মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নেয়। সুতরাং, কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের ঘটনা থামানো দুষ্কর হয়ে পড়বে।
যে কোনো অভিযোগে বা অপরাধেই হোক না কেন, পিটিয়ে হত্যা কাম্য হতে পারে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। ফলে, এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার প্রধান বিষয় মব জাস্টিস। এটা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। যে কোনো অভিযোগ বা অপরাধের ক্ষেত্রে আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না- এমনটি প্রত্যাশিত। এ ব্যাপারে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও যথেষ্ট করণীয় রয়েছে। পাশাপাশি সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে না পারে।