মশা নিধনে কোনো উন্নতি নেই

প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে

প্রকাশ | ২৫ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মশার কারণে অতিষ্ঠ নগরবাসী- এমন খবর পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময়েই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার বিষয়ও আলোচনায় এসেছে বার বার। এমনকি কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুতে প্রাণহানি এবং গত দুই বছর চিকুনগুনিয়া নগরবাসীর অনেকের গিঁটে গিঁটে ব্যথা ধরিয়ে দেয়ার পর মশা নিধনে ব্যাপক কর্মযজ্ঞের হাঁকডাকও দেয়া হয়েছে। তবু পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি- এমন তথ্যই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপে উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত পরিতাপের। কেননা প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটার পরও মশা নিধনে উন্নতি না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল- মশা নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবার বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও জরিপে বলা হয়েছে। তথ্য মতে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গত ৩ থেকে ১২ মার্চ ১০ দিন এই জরিপ চালানো হয়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯৭টি ওয়ার্ডের ১০০টি জায়গায় গিয়ে জরিপকারীরা ওইসব এলাকার ৯৯৮টি বাড়ি ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া জরুরি যে, বাসার মেঝেতে জমানো পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, পস্নাস্টিকের ড্রাম, পস্নাস্টিকের বালতি, পানির চৌবাচ্চা ও ফুলের টবে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার জীবাণু ছড়ানো এডিস মশার লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। ফলে এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। আর জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি এড়াতে মশা নিধনের কর্মসূচি চালানোর জন্য সিটি করপোরেশনের প্রতি যখন আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক, তখন সেটিও বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এমনটি কাম্য। প্রসঙ্গত আমরা উলেস্নখ করতে চাই, এমন বিষয়ও সামনে এসেছে যে, গত বছরের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, অবনতিও হয়নি। একই রকম আছে। ফলে বিষয়টি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই বলেই আমরা মনে করি। এছাড়া আমলে নেওয়া দরকার, জরিপে রাজধানীর উত্তরের চেয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার উপস্থিতি বেশি ধরা পড়েছে। ফলে এই এলাকায় বাড়তি উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক। আমরা মনে করি, একদিকে সিটি করপোরেশনকে মশা নিধনে যেমন যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে তেমনি জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধিতেও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার ভিত্তিতে মশা নিধনে যথাযথ অগ্রগতি হোক এমনটি অপরিহার্য। বলা দরকার, প্রতি একশটি প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া যায় তাহলে সেটাকে 'ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি; বলা যায়। আবার একশ' বাড়ির মধ্যে পাঁচ বা তার বেশি বাড়িতে লার্ভা বা পিউপা পাওয়া গেলে তা 'ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত হয়। সর্বোপরি বলতে চাই, ঢাকা দক্ষিণের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মশার উপস্থিতি বেশি থাকার বিষয়ে তিনি অবগত। আর তিনি এটাও জানিয়েছেন যে, ইতোমধ্যে এই সিটি করপোরেশনের পাঁচটি অঞ্চলে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে করণীয় নিয়ে সচেতনতা কর্মসূচি শুরু হয়েছে যা ইতিবাচক বলেই আমরা মনে করি। একইসঙ্গে যেসব এলাকায় মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে, সেসব এলাকায় বিশেষ নজর দেয়ার পাশাপাশি জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি পাক এবং মশা নিধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।