জেল পালানো ৭৮ জঙ্গি অধরা দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
জেল ভেঙে পালানো ৭৮ জন জঙ্গি আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সারাদেশের ৮টি কারাগারে কয়েদি ও হাজতিরা বিদ্রোহ করে। এদের মধ্যে ৮৮ জন মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্ত আসামিও পালিয়ে যায়। পলাতক মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ৮ জন পুলিশ ওর্ যাবের হাতে ধরা পড়ে। বাকি ৮০ জন এখন ফেরারি। জঙ্গি আসামিদের মধ্যে কাশিমপুর কারাগার থেকে শতাধিক আসামি পালিয়ে যায়। এর মধ্যে এখনো ৭৮ জন আসামি অধরা রয়েছেন। গত ৬ আগস্ট সকালে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি জেলে কয়েদিদের মধ্যে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। কয়েদিরা কারা অভ্যন্তরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে মোট ১৯৯ জন পালিয়ে যায়। এর মধ্যে ৮৮ জন রয়েছেন মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্ত আসামি। নরসিংদী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২০৩ জন আসামি আত্মসমর্পণ করে, তবে, বেশ কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কাশিমপুর কারাগারে দেশের অন্যান্য কারাগার থেকে মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের এনে রাখা হয় যাদের সবাই পালিয়ে যায়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ ওর্ যাবের হাতে ৮ জন আসামি গ্রেপ্তার হন।
কারাগারগুলো থেকে মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবন এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার ২ হাজার ২০০ বন্দি পালিয়ে যায়, যার মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনকে গ্রেপ্তারের পর ফের কারাবন্দি করা হলেও এখনো ৭০০ বন্দি পলাতক রয়েছে। ওই সময়ে আটটি কারাগার থেকে অস্ত্র লুট হয়েছিল ৯৪টি। এর মধ্যে ৬৫টি উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের ৬৯টি কারাগারের মধ্যে ১৭টি কারাগার অনেক পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। ৫ আগস্টের আগে বন্দি ছিল ৫৫ হাজার। যদিও পরবর্তী সময়ে সেই সংখ্যা কমে গিয়েছিল। এখন আবার গ্রেপ্তার চলছে। এখন বন্দি সংখ্যা ৬৫ হাজার।
এখানে উলেস্নখ করা প্রয়োজন, কোটা আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই বিক্ষোভকারীরা নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা করে। সেদিন কারাগারের মূল গেট ভেঙে ১০ থেকে ১২ হাজার লোক ভেতরে ঢুকে পড়ে। ওই কারাগারে যারা কয়েদখানার লকার ভেঙেছে, তারা ১০-১২ জনের একেকটি গ্রম্নপে বিভক্ত ছিল। এরা কয়েদিদের মুক্ত করার পাশাপাশি ৯ জঙ্গিকে ছাড়িয়ে আনে। এ সময় কারাগারে থাকা ৮২৬ বন্দির সবাই পালিয়ে যায়। এরপর অস্ত্রাগারে থাকা ৮৫টি অস্ত্র ও ৮ হাজার ১৫০টি গুলি লুট করে। কয়েদখানা, রক্ষীদের ব্যারাক এবং কারা হাসপাতালে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুড়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নথিপত্র।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে পলাতক ৭শ বন্দির তালিকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন শাখায় দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশ,র্ যাব ও বিজিবির কাছেও তালিকা দেয়া হয়েছে। তারা এ ব্যাপারে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।
আমরা মনে করি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জঙ্গি আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।