ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ টাইগারদের অভিনন্দন

প্রকাশ | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৫৭

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ জয়ে মন্দা লেগেছিল। কেননা, পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পরে সিরিজ জয়ে মন্দা দেখা যায়। টানা ছয় সিরিজের কোনোটিতেই জিততে পারেনি। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় দিয়ে সেই মন্দা কাটিয়েছে টাইগাররা। সিরিজ জয়ের পরে শুক্রবার হোয়াইটওয়াশ করে সফল শেষ করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বলা দরকার, সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য শেষ ম্যাচ ছিল মান বাঁচানোর লড়াই। ঘরের মাঠে ক্যারিবিয়ানরা সেটা রক্ষা করতে পারল না। শেষ ম্যাচে ৮০ রানের ব্যবধানে উইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা। এই জয়ে আমরা টাইগারদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। একইসঙ্গে প্রত্যাশা করি, এই বিজয়ের প্রেরণায় আগামী দিনেও নিজেদের শানিত করবে টাইগাররা, একইসঙ্গে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবে। তথ্য মতে, শুক্রবার সেন্ট ভিনসেন্টে টস জিতে ব্যাট করে জাকের আলী, পারভেজ ইমনদের ব্যাটে ৭ উইকেটে ১৮৯ রানের ভালো সংগ্রহ পায় লাল-সবুজের দল। পরে স্পিনার রিশাদ হোসেন ও শেখ মাহেদীর তোপে ১৬.৪ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও শেষ এই ম্যাচেও লিটন দাস রান পাননি। তবে ওপেনিংয়ে ইমনের সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি দেন তিনি। ১৪ রান করে আউট হন অধিনায়ক লিটন। সৌম্য সরকারের জায়গায় একাদশে ফিরে ইমন খেলেন ২১ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে চারটি ও দুটি ছক্কা আসে। চারে নেমে মেহেদী মিরাজ ২৩ বলে ২৯ রান যোগ করেন। এবারে, দলের পক্ষে সেরা ইনিংসটা খেলেছেন জাকের আলী। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে রান পাওয়া এই ব্যাটার ৪১ বলে ৭২ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। ছয়টি ওভার বাউন্ডারি মারেন তিনি। তার ব্যাট থেকে চারের শট আসে তিনটি। শেষে তানজিম সাকিব ১২ বলে ১৭ রান যোগ করেন। অন্যদিকে, লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতে হোঁচট খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের প্রথম ওভারে ব্রেক থ্রম্ন দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারেই অভিষিক্ত জাস্টিন গ্রেইভসকে তুলে নেন শেখ মেহেদী। ৭ রানে ২ উইকেট হারানো দল জনসন চার্লস ও নিকোলাস পুরানের ব্যাটে পাল্টা আক্রমণে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ৪৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দেখা যায়, ক্যারিবীয়দের হয়ে ওপেনার চার্লস ২৩ ও চারে নামা পুরান ১৫ রান করেন। রোমারিও শেইফার্ড ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ২১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তাসকিন ও শেখ মেহেদী দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। সিরিজ সেরা হয়েছেন স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী। এবারের জয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এটা স্মর্তব্য যে, এর আগে কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতেনি বাংলাদেশ। এছাড়া, ২০ ওভারের ক্রিকেটে তিন ম্যাচের সিরিজে এবারই প্রথম হোয়াইটওয়াশ হলো ক্যারিবিয়ানরা। সঙ্গত কারণেই এবার জিতে ইতিহাস গড়ল টাইগাররা। অন্যদিকে, এটাও উলেস্নখ্য যে, ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে তাদের মাঠে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডের পর চতুর্থ দল হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। আমরা মনে করি, এই জয় যেমন আনন্দের, তেমনিভাবে এটাকে আমলে নিয়ে আগামী দিনেও জয়ের ধারায় নিজেদের এগিয়ে নিতে সব চেষ্টা জারি রাখবে টাইগাররা। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এবারে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের মধ্য দিয়ে যে ইতিহাস গড়ল টাইগাররা তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। ফলে, এই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দল বার বার দেশকে বিশ্বের সামনে উজ্জ্বল করেছে। ফলে, দেশের কিক্রেটের সার্বিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ক্রমাগত এগিয়ে যাক জয়ের ধারায় এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।