প্রশ্নের মুখে গোলাপি বাসসেবা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন
প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
সড়কে যানজট নিরসন ও গণপরিবহণে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা রাজধানী ঢাকার জন্য কতটা জরুরি বলাই বাহুল্য। যানজট ও যত্রতত্র অনিয়মে নগরবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই। এমন প্রেক্ষাপটে গোলাপি বাসসেবা আশার সঞ্চার করেছিল। কিন্তু শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু কেন? তাহলে কি গণপরিবহণে সরকারের ওপরও সরকার রয়েছে? যদি নাই থেকে থাকে তাহলে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তথ্য মতে, রাজধানীর আব্দুলস্নাহপুর থেকে শহরের বিভিন্ন রুটে চালু হওয়া গোলাপি রঙের বাসসেবা চালুর সাত দিনের মধ্যে ভেঙে পড়েছে কাউন্টার ও ই-টিকিটিং পদ্ধতি। এমনকি আগের মতোই যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করছে। টিকিট ছাড়াও তোলা হচ্ছে যাত্রী। রয়েছে টিকিটে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগও।
অথচ নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট স্টপেজ থেকে যাত্রী ওঠানামা, ভাড়া নিয়ে গন্ডগোল না করে টিকিট শো করা, যত্রতত্র গাড়ি না দাঁড়ানো বা প্রতিযোগিতা করে রাস্তার মাঝখানে এক স্টপেজে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এ সেবা চালু নিয়ে বেশ উৎফুলস্ন ছিলেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু শুরুর দিন থেকেই চরম অসযোগিতা করে আসছেন বাসমালিক বা চালকরা। তারা এসব নিয়ম মানতে নারাজ। অন্যদিকে, আগের মতো যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা ও চুক্তিতে বাস চালাতে চান তারা। ফলে, এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষের যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক।
রাজধানীর যানজট এবং এর ফলে জনসাধারণের দুর্ভোগের শেষ নেই। এ নিয়ে লেখালেখি, অভিযোগ, প্রতিবাদ কম হয়নি। যানজট নিরসন ও জনভোগান্তি লাঘবে নানা পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবু দুর্ভোগ নিরসন হয়নি। এখন গোলাপি বাসসেবা নিয়ে যেসব বিষয় জানা যাচ্ছে- তা পরিতাপের। তাই আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি।
ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সড়কে যানজট নিরসন ও গণপরিবহণে শৃঙ্খলা আনতে কাউন্টার পদ্ধতি এবং ই-টিকিটিংয়ের বিকল্প নেই। এ পদ্ধতি চালুর ফলে, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা বন্ধ হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী বহন নিয়ে চালকদের প্রতিযোগিতাও বন্ধ। তবে, বাসচালকরা নিজেদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানা যায়। এ বিষয়গুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তবে কোনো অজুহাত না দেখিয়ে নগরবাসীর দুর্ভোগ নিরসন ও যাতায়াত সহজ করতে যে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং তার বাস্তবায়ন জরুরি। জনসাধারণ যেন ইতিবাচক সুফল ভোগ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে তা দূর করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। উলেস্নখ্য, গত ৬ ফেব্রম্নয়ারি উত্তরার আব্দুলস্নাহপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন গন্তব্যের বাসে টিকিট কাউন্টার এবং ই-টিকিটিং পদ্ধতি চালু হয়। এর আগে, ১৯ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এক সভায় সড়কে শৃঙ্খলা, ঢাকা মহানগরে যানজট নিরসন এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হয়। পরে বাস মালিকদের সঙ্গে চালকের ট্রিপভিত্তিক চুক্তি না করে পাক্ষিক বা মাসিক ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদন করতে নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা। সে নির্দেশনার আলোকেই টিকিট কাউন্টার স্থাপন ও ই-টিকিটিং পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত হয়।
সর্বোপরি, উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে গোলাপি রঙের বাসসেবা শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এই বিষয়টি আমলে নিতে হবে। করণীয় নির্ধারণ করে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। গোলাপি বাসসেবার কারণে জনসাধারণ উচ্ছ্বসিত ছিল। কিন্তু এই সেবা ব্যাহত বা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা পরিতাপের। সঙ্গত কারণেই সর্বাত্মক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।