ভয়ার্ত মানুষ দুর্বৃত্তের লাগাম টানতে হবে

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জনসাধারণ আতঙ্কিত হয়ে পড়লে তা ভীতিকর পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। খুন, ছিনতাই, লুটপাটসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকলে জনজীবনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে, সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। সম্প্রতি খবরে প্রকাশ, মহাসড়কে বাসের ভেতরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ। মধ্যরাতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে সোনাদানা ছিনতাই। দিনদুপুরে খোদ রাজধানীতে চলন্ত বাসে অস্ত্র ঠেকিয়ে লুটতরাজ। প্রান্তিক জনপদে ট্রিপল মার্ডার। বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়ানো কিশোর গ্যাং। 'ডেভিল হান্ট' নামে বিশেষ অভিযানের মধ্যেও খুনোখুনি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, মব ভায়োলেন্স- এমন কোনো অপরাধ নেই- যা ঘটছে না! এছাড়া, অপরাধের নানা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে ভীতি। এছাড়া হত্যা, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, ছিনতাই, ডাকাতিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে গত সোমবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। আমলে নেওয়া দরকার, 'ডেভিল হান্ট' নামে বিশেষ অভিযানের মধ্যেও অপরাধীরা এমন বেপরোয়া। উঠেছে নানামুখী প্রশ্ন। অন্যদিকে, প্রতিদিন ঘর থেকে বেরিয়ে আবার নিরাপদে ফিরতে পারবে কিনা, অনেকের মধ্যে এমন শঙ্কাও ভর করেছে। আবার ঘরে ফিরেও ডাকাত-চোর আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি জনজীবনের স্বাভাবিকতার পরিপন্থি। জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হলে তা কতটা ভয়াবহ সেটা অনুধাবন করাও জরুরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে একযোগে সেনাবাহিনী, বিজিবি,র্ যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযান 'ডেভিল হান্ট' চলমান থাকলেও এরই মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দুর্বৃত্তরা- যা অত্যন্ত শঙ্কাজনক। অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন কর্মস্থল, এমনকি নিজ বাসাবাড়িতেও মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। জানা যায়, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নাজুক এ পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে খোদ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিলেও জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েই গেছে। ফলে, সর্বাত্মক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আতঙ্কিত অনেকেই ব্যবসাবাণিজ্যের পাশপাশি অন্য নিয়মিত কার্যক্রমও বেশ কিছুটা গুটিয়ে নিয়েছে। এছাড়া, শুধু নারীই নয়, অনেক পুরুষও এখন সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে থাকতে ভয় পাচ্ছে। নতুন করে ঘরবাড়ি, কলকারখানা ও দোকানপাটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বাড়িয়েও মানুষ এখন আতঙ্কে দিন পার করছে। দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে স্থাবর-অস্থাবর যে কোনো সম্পদ আকস্মিক দখল করে নিতে পারে এ আতঙ্কে অনেকের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ফলে, দেশের জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভীতি দূর করতে যত দ্রম্নত সম্ভব পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি, দুর্বৃত্তদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার নেপথ্যের কারণ বিশ্লেষণ করতে হবে। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে। জানা যায়, শুধু ঢাকা নয়- সারাদেশেই ছিনতাই, ডাকাতি, দসু্যতার পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও দখলবাজি বেড়েছে। একের পর এক খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এই বিষয়গুলো এড়ানো যাবে না। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে- যেন জননিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং জনমনে যে শঙ্কা, ভয় তৈরি হয়েছে- তা দূর হয়।