স্মরণীয়-বরণীয়

উস্তাদ গোলাম মুস্তফা খান

প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
উস্তাদ গোলাম মুস্তফা খান ছিলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। তিনি মূলত হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রামপুর-সহসওয়ান ঘরানার একজন শিল্পী। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সঙ্গীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার পান। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার কর্তৃক তিনি ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মশ্রী, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মভূষণ এবং ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পদ্মবিভূষণে ভূষিত হন। গোলাম মুস্তফা খান ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন আগ্রা ও অবধের যুক্তপ্রদেশের অধুনা উত্তর প্রদেশের বদায়ূতে ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বয়স থেকেই গোলাম মুস্তফা সঙ্গীতের পরিবেশে বড় হয়েছেন এবং পিতাই ছিলেন তার প্রথম গুরু। অল্প বয়সে প্রথমদিকে তিনি সুর স্মরণে রাখতে পারলেও, গানের কথা বুঝতে পারতেন না। পিতার কাছে প্রাথমিক শিক্ষার পর তিনি ওস্তাদ ফিদা হুসেন খানের কাছে সঙ্গীতের তালিম নেন। ফিদা হুসেন সে সময় বরোদার রাজদরবারের গায়ক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সম্পর্কিত দাদা উস্তাদ নিসার হুসেন খানের কাছেও তালিম নেন। সে কারণে উস্তাদ গোলাম মুস্তফার গায়কিতে রামপুর সাহসন এবং গোয়ালিয়র ঘরানার ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত শৈলির প্রভাব। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ হতে উস্তাদ গোলাম মুস্তফা খান মারাঠি ও গুজরাটি ছবিতে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার প্রথম মারাঠা ছবি ছিল 'চাঁদ প্রীতিশা'। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃণাল সেনের 'ভুবন সোম' ছবিতে কণ্ঠ দেন 'সজনা কাঁহে নাহি আয়ে' গানটিতে। বিজয় রাঘব রাও ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক। 'বদনাম বস্তি' ছবিতেও নেপথ্য সঙ্গীতে ছিলেন রাও-এর সঙ্গীত পরিচালনায়। তিনি চলচ্চিত্র বিভাগ দ্বারা নির্মিত ৭০ টিরও বেশি তথ্যচিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি দেশে-বিদেশের বহু স্থানে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। উস্তাদ গোলাম মুস্তফা ১৯৫০-এর দশক থেকেই সঙ্গীত শিক্ষা দিতে শুরু করেন। তার কাছে তালিমপ্রাপ্ত খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পীরা হলেন- আশা ভোঁসলে, মান্না দে, কমল বারাত, ওয়াহিদা রেহমান, রানু মুখার্জি, গীতা দত্ত, এ আর রহমান, হরিহরণ, শান, সোনু নিগম, সানাহ মাইদুতি প্রমুখ। বর্ষীয়ান এই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পীর তেমন শারীরিক সমস্যা ছিল না। কিন্তু ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি আচমকাই মুম্বাইয়ে নিজ বাসভবনে প্রয়াত হন।