স্মরণীয়-বরণীয়

আবুল কালাম শামসুদ্দীন

প্রকাশ | ০৪ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আবুল কালাম শামসুদ্দীন ছিলেন একধারে একজন সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিক। তিনি ১৮৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ময়মনসিংহের ত্রিশালের ধানীখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯১৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করার পর কলকাতার রিপন কলেজে (অধুনা সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) বিএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। কিন্তু ওই সময় খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে তিনি তাতে যোগ দেন এবং বিএ পরীক্ষা না দিয়ে কলকাতার গৌড়ীয় সুবর্ণ বিদ্যায়তন থেকে পাস করেন। ১৯২৩ সালে দৈনিক মোহাম্মদী পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক হিসেবে তার সাংবাদিকতা চর্চা শুরু হয়। পরবর্তিতে তিনি ১৯২৪ সালে সাপ্তাহিক মোসলেম জগৎ, দি মুসলমান, দৈনিক সোলতান, মাসিক মোহাম্মদী প্রভৃতি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। ১৯৩৬ সালে দৈনিক আজাদে যোগদান করে তিনি ১৯৪০-৬২ সাল পর্যন্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বাঙালি মুসলিম সমাজকে ইসলামী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত করার জন্য কলকাতায় যে 'পূর্ব পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটি' প্রতিষ্ঠিত হয় তিনি তার সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৪ সালে প্রেস ট্রাস্ট অব পাকিস্তান পরিচালিত দৈনিক পাকিস্তানের সম্পাদক নিযুক্ত হন, তিনি ১৯৭২ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থায় মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে প্রভাবিত হয়ে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পরিণত বয়সে প্রথমে তিনি প্রচন্ড পরিমাণে আইয়ুব খানের বিরোধী ছিলেন এবং ভাষা অন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন, কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় তিনি পাকিস্তানের অখন্ডতার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তার সম্পাদিত 'দৈনিক আজাদ' পত্রিকা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বাংলা ভাষার দাবি সংক্রান্ত সম্পাদকীয় প্রকাশ করতেন নিয়মিত। তিনি ২১ ফেব্রম্নয়ারির গুলি চালনার প্রতিবাদে পরের দিন আইনসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। ২৩ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে প্রথমবার যে শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছিল, আবুল কালাম শামসুদ্দীন এটার উদ্বোধন করেছিলেন। ১৯৭০ বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৭৬ একুশে পদক পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৮ সালের ৪ মার্চ তিনি মৃতু্যবরণ করেন।