পণ্য রপ্তানি বেড়েছে অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি অর্জনে রপ্তানি আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে, যখন রপ্তানি বাড়ে তখন সেই পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক বলেই প্রতীয়মান হয়। সঙ্গত কারণেই রপ্তানি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। এছাড়া, রপ্তানি বাড়াতে যে কোনো ধরনের সংকট তৈরি হলে তার সমাধানেও কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। সম্প্রতি খবরে প্রকাশ, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত আট মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই আট মাসে বাংলাদেশ ৩২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। এক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, গত অর্থবছরের এ সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ২৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কেবল জানুয়ারিতেই রপ্তানি আয় ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। এসব তথ্য প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো (ইপিবি)। জানা যায়, আটমাসের হিসাবই শুধু নয় গত মাসেও দেশের পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে- যা সুখকর বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। তথ্য মতে, গত মাসে ৩৯৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের ফেব্রম্নয়ারির তুলনায় ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। যদিও চলতি অর্থবছরের সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে গত ফেব্রম্নয়ারিতে। আমরা মনে করি, পণ্য রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে এটি ইতিবাচক- যা আমলে নিয়ে অগ্রগতি ধরে রাখতে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। প্রসঙ্গত, ইপিবির তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত প্রথম আট মাসে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয়ে বরাবরের মতোই ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এছাড়া, উলেস্নখযোগ্য খাতের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিপণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত মাছ ও পস্নাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। ফলে, যেসব পণ্যে রপ্তানি বেড়েছে সেগুলোর দিকে যেমন আরও বেশি নজর দিতে হবে তেমনি যেসব পণ্যের রপ্তানি বাড়েনি এর নেপথ্যের কারণ শনাক্ত করতে হবে। রপ্তানি না বাড়ার কারণ বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এ কথাও বলার দরকার, বিভিন্ন সময়ে এই আলোচনা সামনে এসেছে যে, অনেক সম্ভাবনাময় পণ্য আছে যেগুলো যথাযথ তদারকির মাধ্যমে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব। সঙ্গত কারণেই এই দিকটি সামনে রেখে উদ্যোগী হওয়া জরুরি। এছাড়া, বিবেচনায় নেওয়া দরকার, প্রথম আট মাসে অর্থাৎ জুলাই-ফেব্রম্নয়ারিতে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ২৯৪ কোটি ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৯৮০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ বিলিয়ন ডলার- যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১২.৪৪ শতাংশ বেশি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রপ্তানি আয় বাড়লে তার ইতিবাচক প্রভাবে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি নিশ্চিত হয়। এক্ষেত্রে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিযোগ্য পণ্যর দিকে আরও নজরদারি বাড়াতে হবে। বৈশ্বিক বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে হবে। এছাড়া, রপ্তানিযোগ্য পণ্য নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। সম্ভাবনাময় পণ্যর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। দেশের পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে- এটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।