ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা কার্যকর উদ্যোগ জরুরি
প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের ভোগান্তির ঘটনা ঘটে। প্রতি বছরই দেখা যায়, ঈদযাত্রার আগে বিভিন্ন রকম ভোগান্তির শঙ্কা উঠে আসে- যা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক। এক্ষেত্রে বলা দরকার, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য ঘরে ফিরতে ব্যাকুল থাকেন দেশের মানুষ। অন্যদিকে, স্বাচ্ছন্দ্যে যাওয়ার জন্য বেশিরভাগেরই ভরসা থাকে ট্রেন। কিন্তু ঈদের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। যাত্রীদের এই চাপ সামাল দিতে বিশেষ ট্রেন চালু করে রেলওয়ে। কিন্তু সম্প্রতি খবরে প্রকাশ, এবার বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা কমেছে অর্ধেকে। এতে ঈদের ছুটিতে ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে- যা কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই।
রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পবিত্র ঈদুলফিতরের সময় ২০টি (১০ জোড়া) বিশেষ ট্রেন চালানো হয়েছিল। কিন্তু এবার চলবে মাত্র ১০টি ট্রেন (৫ জোড়া)। এর মধ্যে একটি রুটে বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা কমানো হয়েছে এবং চারটি রুটে কোনো বিশেষ ট্রেন দেওয়া হচ্ছে না। ঈদের ছুটিতে ঘরে ফেরা যাত্রীদের চাপ থাকার পরও ট্রেন কমানোর বিষয়ে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের দাবি, ইঞ্জিন ও কোচের সংকটের পাশাপাশি চাহিদাও কমেছে বিশেষ ট্রেনের। তাই, বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা কমানো হয়েছে। ট্রেন কমলেও যাত্রীদের সমস্যা হবে না এমনও বলা হচ্ছে। কিন্তু আমলে নেওয়া জরুরি, রেলওয়ের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে মানুষ সড়কপথের চেয়ে রেলে ভ্রমণকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। ঈদের সময়েও এ চাপ বাড়বে। এ অবস্থায় বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি না করে উল্টো কমিয়ে দেওয়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। ফলে, সার্বিকভাবে যাতায়াতে দুর্ভোগের যে শঙ্কা উঠে আসছে তা আমলে নিতে হবে।
জানা যায়, ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে ১৪ মার্চ, ওই দিন ২৪ মার্চের টিকিট দেওয়া হবে। অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত। আর ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২৪ মার্চ এবং ওই দিন ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে। টিকিট ক্রয় সহজ করার জন্য পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট সকাল ৮টা থেকে এবং পূর্বাঞ্চলের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দুপুর ২টা থেকে বিক্রি করা হবে। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবার চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে দুই জোড়ার পরিবর্তে এক জোড়া ট্রেন চলবে। গত বছর চলাচল করলেও এবার পার্বতীপুর-দিনাজপুর রুট, ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর রুট, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুট এবং চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে কোনো বিশেষ ট্রেন চলবে না। ফলে, সার্বিকভাবে যাত্রীরা নিরাপদ ও ভোগান্তিহীনভাবে যাতায়াত করতে পারবে কিনা এই বিষয়গুলো এড়ানো যাবে না। বলা দরকার, শুধু ট্রেন নয়, ঈদযাত্রায় সড়কেও নানা দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। বেশি টাকা আদায়, যানজটসহ দুর্ভোগের শিকার হন। ফলে, ঈদযাত্রায় ভোগান্তি দূর করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
সর্বোপরি বলতে চাই, দেশের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে মানুষ সড়কপথের পরিবর্তে ট্রেনে করে ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন বলেও জানা যায়। ফলে, যাত্রী ভোগান্তির যে শঙ্কা উঠে আসছে তা দূর করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। ঈদের সময় সড়কপথে বাড়তি ভাড়া ও যানজট নিয়ে অব্যবস্থাপনা তৈরি হয় এবং ঈদের সময় বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি না করে কমানোর ঘটনা জন-আকাঙ্ক্ষার বিপরীত- এমন আলোচনাও উঠে আসছে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে- যেন যাত্রী ভোগান্তি না হয়।