টাইগার বাহিনীর জয়

আমাদের অভিনন্দন

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জয় দিয়ে শুরু করেছিলেন টাইগাররা। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে ইতিহাস কাঁপানো জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। গত সোমবার আবারও বিশ্ব দেখল টাইগারদের জয়জয়কার। অনবদ্য ব্যাটিং করে সমর্থকদের বিপুল আনন্দে ভাসিয়ে যে জয় উপহার দিল টাইগার বাহিনী, সন্দেহাতীতভাবেই তার নায়ক সাকিব আল হাসান। আর তার সঙ্গে জুটি বেঁধে নিজের প্রথম ম্যাচেই লিটন দাসের ব্যাটিং ছিল দুর্দান্ত। সাকিব আল হাসান বিশ্বকাপে পেলেন নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ৮৩ বলে ১৩টি বাউন্ডারিতে গলায় জড়ান শতরানের মালা। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য যে, বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ৩২২ রানের টার্গেটে। তার আগে তিনটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। সাকিব নেন দুটি উইকেট। রেকর্ড রান তাড়া করতে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগার বাহিনীর ওপেনিং জুটি ভেঙে যায় ৫২ রানে। সৌম্য সরকার বিদায় নেয়ার পর ক্রিজে যান সাকিব, মাঠ ছাড়েন বীরোচিত জয় নিয়ে। বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার ৯৯ বলে খেলেন ১২৪ রানের অনিন্দ্য ইনিংস। যার পরতে পরতে লেখা হয় ১৬টি বাউন্ডারি। সাকিব আল হাসান কেন বিশ্বের সেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডার, তা আরও একবার দেখালেন বিশ্বমঞ্চে, বিশ্বকাপের এই মহাআয়োজনে। তামিমের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট ৬৯ রানের জুটি ছিল সাকিবের। রানআউটের দুর্ভাগ্য বরণ করে ৪৮ রান সঙ্গে নিয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম। এরপর সাকিবকে সঙ্গ দিতে এসে ক্রিজে থিতুই হতে পারলেন না মুশফিকুর রহিম। যখন টাইগার বাহিনী চাপের মুখে, তখন মাঠে অগ্রজ সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ে ক্যারিবীয়রা যে রানের পাহাড় সামনে তুলেছিল তা যেন নিমিষেই গুঁড়িয়ে দিলেন সাকিব-লিটন। ক্যারিবীয় বোলারদের তুলোধোনা করতে থাকেন এই জুটি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ১৮৯ রানের হার না মানা জুটি গড়েন তারা। আর নিশ্চিতভাবেই এই রেকর্ড জুটির কৃতিত্বে গতকাল জয়ের আনন্দে ভাসে বাংলাদেশের সমর্থকরা। বিশ্বকাপ নিজের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরির খুব কাছে চলে যান লিটন। ৬৯ বলে ৯৪ রানে অপরাজিত ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। আটটি চার আর চারটি ছয় দিয়ে লিটন সাজান তার ইনিংস। ছক্কার হ্যাট্রিক করেন। লিটনের দিনটা ছিল আসলে প্রাপ্তির। যে ব্যাটসম্যান ফর্মে থাকার পরও টানা তিন ম্যাচে একাদশে সুযোগ পান না, ওপেনার হওয়ার পরও জায়গা না পাওয়ায় যাকে পাঁচ নম্বরে নেমে যেতে হয়- তার জন্য বিশ্বকাপে দেশের স্মরণীয় এক জয়ে বড়সড় অবদান রাখা, চলতি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানের জুটিতে যুক্ত থাকা, দাপুটে শটে জয়ের মুহূর্ত এনে দেয়া- এ যে ভাবনার চেয়েও বেশি কিছু। অপরাজিত ৯৪ রানের ইনিংসটি তাই লিটনের ক্যারিয়ারের অন্যতম এক মাইলফলকই হয়ে থাকুক আজীবন। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের দলের আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজেই বেশ কয়েকটি জায়গায় উন্নতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল টাইগার বাহিনীর। আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের ম্যালাহাইডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় ক্রিকেট সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তখন ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে বাংলাদেশ। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে যে দৃঢ়তা দেখা গিয়েছিল, তার আরেক বিচ্ছুরণ দেখা গেল সোমবারের ম্যাচে সাকিব-লিটনের ব্যাটিংয়ে। সারা বিশ্ব দেখল দুরন্ত ব্যাটিংয়ের এক দুর্দান্ত বিজয়। উলেস্নখ করা দরকার, রেকর্ডের পর রেকর্ড দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেন সাকিব আল হাসান। নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেন ৭৫ রান। ওই ম্যাচ ২০০ উইকেট আর পাঁচ হাজারি রান ক্লাবের সদস্য হন তিনি। সোমবারে ২০০ উইকেট আর ছয় হাজারি রান ক্লাবের নতুন সদস্য হলেন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ছয় হাজার রান হলো তার। আমরা বলতে চাই, টাইগাররা বিভিন্ন সময়েই তাদের সেরাটুকু উপহার দিয়ে দেশকে উচ্চতায় তুলে ধরছেন। বিশ্বকাপের এই ম্যাচে আবারো তার প্রমাণ মিলল। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, আগামী দিনগুলোতেও টিম টাইগার্স জয়ের এই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে সচেষ্ট থাকবে। এই জয় উপহার দেয়ায় টাইগার বাহিনী এবং ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আমরা অভিনন্দন জানাই।