ব্যাংক এশিয়ার উচ্চশিক্ষা বৃত্তি সামর্থ্যের বাধা অতিক্রমের শক্তি

শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে- এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ব্যাংক এশিয়া শিক্ষাসূচকে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছেলেমেয়েদের বৃত্তিদানে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।

প্রকাশ | ২১ জুন ২০১৯, ০০:০০

এম এ ওয়াদুদ
মেধাবী কিন্তু সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতায় উচ্চশিক্ষার পথ অনিশ্চিত, এমনটা আমাদের দেশের গ্রামীণ জনপদের স্বাভাবিক চিত্র। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সামর্থ্যহীন পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর যথেষ্ঠ সম্ভাবনা থাকার পরও শুধুমাত্র আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে উচ্চশিক্ষার পথে পা বাড়াতে পারে না। কেউ কেউ সামর্থ্যের পিছুটানে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সাহস করে না, কারো কারো ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পরও আর্থিক অসঙ্গতির কারণে ভর্তির ব্যাপারটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, কেউ আবার ভর্তির পর উচ্চশিক্ষার পথ শেষ করার ব্যাপারটা নিয়ে উদ্বিগ্নতা ও অনিশ্চয়তায় ভোগে। ফলে অনেক সম্ভাবনাই সময়ের আগে থেমে যায়, কারো কারো ভবিষ্যৎ গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়। অথচ উচ্চশিক্ষার পথে সামান্য আর্থিক সহায়তা এসব মেধাবী শিক্ষার্থীর যথাযথ শিক্ষাগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথে আর্থিক নিশ্চয়তা শিক্ষার্থীর আগ্রহের পথে অনুপ্রেরণা জোগায়, সাহস দেয়, সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেয়। এ শক্তিতে তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত হয়। তারা নিজেদের সম্ভাবনার সবটুকু কাজে লাগিয়ে পরিবার, সমাজ তথা জাতির জন্য সম্পদ হয়ে উঠে। নিজেকে যোগ্যতম স্থানে অধিষ্ঠিত করে সমাজকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রত্যন্ত জনপদের এসব মেধাবী শিক্ষার্থীর বড় হওয়ার স্বপ্নকে সত্যি করতে "আমিও অনেক বড় হবো" স্স্নোগান নিয়ে ব্যাংক এশিয়া সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ২০০৫ সাল থেকে উচ্চশিক্ষা বৃত্তি প্রকল্প চালু করে। ব্যাংক এশিয়া ফাউন্ডেশনের আওতায় পরিচালিত এ প্রকল্পে প্রতি বছর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় বাছাইকরণের মাধ্যমে সারাদেশের উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে উচ্চশিক্ষা বৃত্তির জন্য মনোনীত করা হয়। গ্রামীণ জনপদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের অধিকারী যে সব শিক্ষার্থী বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়/ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ/ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়/ মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় বা প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত, কেবল তারাই বৃত্তির জন্য আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। প্রতিবছর এপ্রিল/ মে মাসে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বছরের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বৃত্তির আবেদন আহ্বান করা হয়। শিক্ষার্থীকে ব্যাংক এশিয়ার ওয়েবসাইট বা নিকটবর্তী শাখা থেকে সংগ্রহকৃত আবেদন ফরম যথাযথভাবে পূরণপূর্বক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে নিজ এলাকার/এলাকার নিকটবর্তী ব্যাংক এশিয়ার শাখায় জমা দিতে হয়। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের বই ক্রয় ও টিউশন ফি এবং বাৎসরিক বৃত্তিসহ প্রথম বছর আনুষ্ঠানিকভাবে এককালীন মোট ৫১,০০০ টাকার চেক প্রদান করা হয়। পরবর্তী বছর একইভাবে ৫১,০০০ টাকা শিক্ষার্থীর ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়। এভাবে প্রতি বছর একই হারে একজন শিক্ষার্থীকে তার স্নাতক মেয়াদের (চার/পাঁচ বছর) বৃত্তি প্রদান করা হয়। জীবনের শুরুতে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখতে ভীতশ্রদ্ধ কিংবা উচ্চশিক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগা শত শত শিক্ষার্থী ব্যাংক এশিয়ার শিক্ষাবৃত্তির কল্যাণে উচ্চশিক্ষা শেষ করে আজ দেশে বিদেশে স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের দরিদ্র পরিবারের সুলতান আহমেদ এখন উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা, নোয়াখালীর চাটখিলের সামর্থ্যহীন পরিবারের সামছুল আরেফিন এখন বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্টের বড় কর্মকর্তা, সাভারের আশুলিয়ার ইয়াসমিন আক্তার বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের গাইনি এন্ড অবস্‌ নিয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনে অধ্যয়নরত, লালমনিরহাটের রুবেল কানাডা প্রবাসী প্রকৌশলী, লক্ষ্ণীপুরের রামগঞ্জের আসিফ সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা- এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক এশিয়ার শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে উচ্চশিক্ষা শেষে ব্যাংক এশিয়ায় সম্মানজনক পদে নিয়োগ পেয়েছে এ রকম উদাহরণও কম নয়। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে- এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ব্যাংক এশিয়া শিক্ষাসূচকে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছেলেমেয়েদের বৃত্তিদানে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। ব্যাংক এশিয়া শুধুমাত্র বৃত্তির টাকা প্রদান করেই দায়িত্ব শেষ করে না, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে এবং ভালো ফলাফল অর্জনের তদারকিতে সেমিস্টার শেষে প্রত্যেক বৃত্তিপ্রাপত্ম শিক্ষার্থীর নম্বরপত্র যাচাই করে থাকে। কোনো শিক্ষার্থী একটি সেমিস্টারে সন্তোষজনক ফলাফল অর্জনে ব্যর্থ হলে তাকে তার বৃত্তির প্রাপ্য কিস্তির টাকা পেতে পরবর্তী সেমিস্টারে সন্তোষজনক ফলাফল নিশ্চিত করে তার নম্বরপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হয়। পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফলের রিপোর্ট প্রাপ্তির আগ পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থীর প্রাপ্য কিস্তির টাকা না মঞ্জুর করে রাখা হয়। ফলে ব্যাংক এশিয়ার বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সবসময়ই লেখাপড়ায় ভালো করার ব্যাপারে তৎপর থাকে। উলেস্নখ্য, সরকারি/বেসরকারি অন্য কোনো সংস্থা বা উৎস থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষার্থী ব্যাংক এশিয়ার বৃত্তির আবেদনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। এমনকি বৃত্তির জন্য নির্বাচিত কোনো শিক্ষার্থীর প্রদত্ত তথ্যে পরবর্তী সময়ে কোনো গরমিল বা উদ্দেশ্যমূলক তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া গেলে বরাদ্দকৃত বৃত্তি বাতিল করা হয়। বৃত্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের ব্যাংক এশিয়ায় তাদের স্ব স্ব হিসাবের মাধ্যমে বৃত্তির টাকা প্রদান করা হয়। \হমেধা যোগ্যতা তোমার, আর্থিক নিশ্চয়তা ব্যাংক এশিয়ার- এ দুয়ের সম্বন্বয়ে যোগ্যতমদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত হবে, সমাজ হবে আলোকিত এ মর্মে ব্যাংক এশিয়ার বৃত্তি প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত। বৃত্তি সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য ব্যাংক এশিয়ার ওয়েবসাইটে (িি.িনধহশধংরধ-নফ.পড়স) কিংবা নিকটবর্তী যে কোনো শাখায় যোগাযোগ করে জানা যাবে। এম এ ওয়াদুদ: ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড