মা-মেয়েকে গুলি করে হত্যা

দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশে খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা সামগ্রিক উন্নয়ন ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের পরিপন্থি। এ ক্ষেত্রে এই ধরনের অপকর্মকে প্রতিহত করতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। কেননা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, অপরাধমূলক ঘটনা রোধ করতে না পারলে সর্বস্তরে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা অত্যন্ত আতঙ্কজনক বাস্তবতাকেই সামনে আনবে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমান সময়ের দিকে দৃষ্টি দিলে যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই জানা যায়, একের পর এক খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছেই। অথচ এসব ঘটনা জনজীবনের স্বাভাবিক গতিধারার জন্যে বিপজ্জনক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ষাটোর্ধ্ব এক নারী ও তার মেয়েকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের দুর্গম গবাছড়ি এলাকায় মঙ্গলবার ভোরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, কে বা কারা এ দুই নারীকে নিজ বাসায় ঢুকে গুলি করে হত্যা করেছে। এছাড়া দুটি মৃতদেহই ময়না তদন্তের জন্য রাঙামাটি পাঠানো হয়। আর ঠিক কী কারণে, কারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে সে সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত বা প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়নি বলেও ওসি জানিয়েছেন। যদিও পুলিশ এই রহস্যজনক ঘটনাটির মোটিভ খুঁজে বের করতে চেষ্টা করছে। এছাড়া উলেস্নখ্য, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাহাড়ে সংঘাতে জড়িত চার আঞ্চলিক সংগঠনের কোনোটিই এ ঘটনার জন্য কেউ কাউকে দায়ী করেনি। তবে আমলে নেয়া দরকার, রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, 'শুনেছি জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণেই মা-মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তবে জমিজমা সংক্রান্ত ব্যাপারে এমন ঘটনা আসলেই সন্দেহজনক। যেহেতু দু'জনকেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, এতে করে আমার মনে হয় এর পেছনে অন্য ঘটনার সম্পৃক্ততা রয়েছে।' আমরা মনে করি, যত দ্রম্নত সম্ভব সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, এর আগেও নানা সময়েই পাহাড়ে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানেও প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছে মানুষ, সঙ্গত কারণেই এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে হবে। আমরা মনে করি, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা জনমনে কীরূপ প্রভাব ফেলে এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রে তা কতটা নেতিবাচক- সেটি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি আমরা সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত হত্যাকান্ড, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবজিসহ সব ধরনের ঘটনার চিত্র পর্যবেক্ষণ করুন এবং এই ঘটনাগুলো কীভাবে ঘটছে, এর নেপথ্যে কারা জড়িত, তাদের স্বার্থই বা কি? এই বিষয়গুলোকে বিশ্লেষণ করুন এবং কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের মা্যধ্যমে আইনের আওতায় এনে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করুন। যেভাবে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে- তার পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে না পরলে এই ধরনের ঘটনা কখনই বন্ধ হবে না। এবারের ঘটনাটি আমলে নিয়ে কারণ অনুসন্ধান এবং হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপরাধমূলক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।