'ভারত ছাড় আন্দোলন' বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে কতটা প্রাসঙ্গিক

ভারত ছাড় আন্দোলন শুধু ভারতবাসীর নয়- এই বঙ্গের মানুষেরও উদার, মুক্তমনা ও প্রগতিবাদী হতে এবং সর্বোপরি স্বাধিকারের কথা ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছিল। তাই এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, বাংলাদেশের অঙ্গনেও ভারত ছাড় আন্দোলনের রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধে বাংলার শেষ নবাব সিরাজুদ্দৌলার পতনের পর দীর্ঘদিন ধরে পাক ভারত উপমাহদেশের জনগণ বিটিশের কলোনিয়াল বাসিন্দা হয়ে বসবাস করে আসছিলেন। পরাধিনতার চাপ উপমহাদেশের মানুষকে অনেকটাই হত-উদ্যোম, হীনবল ও বীর্যহীন করে তুলেছিল। অধিকন্তু তোষামোদকারী, মেরুদন্ডহীন, ব্যক্তিত্বহীন, লেজুরবৃত্তীয়, ধামাধরা একটি শ্রেণির অভু্যদয় ঘটেছিল। যেমন- পলাশীর যুদ্ধে মীর জাফর বা তার সঙ্গীরা যে ষড়যন্ত্র ও কুটচালের বীজ বপন করে গেছেন সে বীজ থেকে সময়ান্তরে নতুন নতুন মীর জাফরদের সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। এ সংখ্যা এখন পর্যন্ত কোনো কমতি নেই বলে বলা চলে। এর বৃদ্ধিকে থামিয়ে রাখা যাচ্ছে না। অথচ উন্নত বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ অনৈতিকতা, দুর্নীতি ইত্যাদি অনেক কিছুই থামিয়ে দিয়েছেন। বা অন্তত নিয়ন্ত্রিত রেখেছেন। কিন্তু আমাদের এ অঞ্চলে তার কোনো নিয়ন্ত্রণ রেখা মানতে চাচ্ছেন না বা মানছেন না। আর সে জন্য জাতি রাষ্ট্রকে রাজনৈতিকভাবে বিধ্বস্ততার শিকার হতে হয়েছে। আমাদের প্রিয় দেশ বাংলাদেশ। অধিক জনসংখ্যার ছোট আয়তনের এই বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে বিদেশি উদ্বাস্তু বা শরণার্থীরা এসে আমাদের এক বিশেষ এলাকার উপর আশ্রয়প্রার্থী হয়ে মানবিক সাহায্য পেতে চান। সেটা আমরা কেমন করে কত দিনের জন্য সামাল দিতে পারব- সে কথা-কি কখনো ভেবে দেখা হচ্ছে? হয়তো হচ্ছে- আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে বসে নেই। তিনি বিশ্ব সভায় প্রতিনিয়ত সমস্যা-সমাধানের কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের দেশের এসব সচেতন ও দেশপ্রেমী মানুষ এ বিষয়ে কেন এক হয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছেন না। সতের কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে তা সমাধান আসে না তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। অর্থাৎ আমাদেরই সমাজে ও রাষ্ট্রের এক শ্রেণির মানুষ হয়তোবা এই ইসু্যকে এক ব্যবসায়িক ইসু্য হিসেবে নিয়ে অথবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে অপরিপক্ব কোনো বিরোধিতার ধামাধরা খেয়াল নিয়ে জাতীর সর্বনাশ করতে ওতপেতে বসে আছেন- কে জানে? তারাই হচ্ছে তথাকথিত ধামাধরা, তোষামোদকারী ও সুবিধাভোগী শ্রেণি। এই শ্রেণির মানুষের মধ্যে আছে ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারী, লুটেরা ও যুগযুগের সেবাদাস মীর জাফর আলীর মতো ব্যক্তিত্বহীন কাপুরুষ মানুষ। তারা মানবতা ও সভ্যতার কলঙ্ক। এই কালিমা থেকে বাঙালি জাতির প্রাণপুরুষ জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানও রেহাই পাননি। তার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে যখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করে চলেছেন তাকে কীভাবে হত্যা করে জাতিকে আবার কলঙ্কিত করা হবে। সে অপতৎপরতায় মেতে উঠেছেন এক শ্রেণির নরঘাতক। রাতের আঁধারে পালিয়ে বা নোংরা কোনো সহিংসতায় জাতিকে অস্থিতিশীল রেখে জাতির শান্তিশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে চায়। তবে এর জন্য রাষ্ট্রের অনেক নিরীহ ও প্রগতিবাদী মানুষেরও ভরাডুবি হয়েছে বা তাদের পাঁঠার বলিরমতো অবস্থাও হয়েছে। এই নৃশংস হত্যাকান্ডে হোতা বা যড়যন্ত্রের খলনায়ক যেমন আছেন তেমনি এই মাটিতে সাহসী সূর্যসেনারাও আছেন- যারা কখনো মৃতু্যর ভয়ে ভীত নন। সাহস নিয়ে তারা এগিয়েছেন, এগোচ্ছেন বা এগিয়ে যাবেন। সমস্ত বিরোধ ও বৈরী আবহাওয়ার মোকাবেলা করেই তরী তীরে ভিড়াবেন। এই অঙ্গীকার ও আস্তার উপর ভর রেখেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। বিশ্ব এখন বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে- আগামী ২০২১, ২০৩০ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সফল হবে। ১৯৪২ সালের ক্রিপস মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর সমগ্র ভারতব্যাপী তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। ভারতীয় রাজনীতিতে নেমে আসে চরম হতাশার ছায়া। যুদ্ধকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি ক্রিপস সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলে ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে ভারতীয় কংগ্রেসের আলোচনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এ সময় গান্ধীজী আনুষ্ঠানিকভাবে আবার জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। শুরু হয় তার নেতৃত্বে ইংরেজদের বিরুদ্ধে 'ভারত ছাড়' আন্দোলন। ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মতো এ আন্দোলনেও ছাত্র এবং যুব সম্প্রদায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ নেয়। নারীরা, বিশেষ করে কলেজ ও স্কুলের ছাত্রীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গোপনে নারীদের সংগঠিত করার কাজে প্রধান সংগঠক ছিলেন অরুণা আসফ আলী ও সুচেতা কৃপালি। এ আন্দোলনে শ্রমিকরাও বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিলেন। দীর্ঘস্থায়ী ধর্মঘট করেও সাহসের সঙ্গে রাস্তায় পুলিশের নির্যাতন মোকাবেলা করে তারা যথেষ্ট আত্মত্যাগ করেছেন। তবে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে কৃষকরাই ছিল এ আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। কৃষকরাই এ আন্দোলনকে জঙ্গী চরিত্র দান করে। অনেক ছোট ছোট জমিদার এ আন্দোলনে অংশ নেন। তবে বড় বড় জমিদাররা নিরপেক্ষ থেকেছেন। সরকারি কর্মকর্তারা, বিশেষ করে পুলিশ ও প্রশাসনের নিচুতলার কর্মকর্তারা এ আন্দোলনে দরাজ হাতে সাহায্য করেছেন। এ আন্দোলনে মুসলমান সম্প্রদায় ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেননি সত্য, কিন্তু মুসলিম লীগের সমর্থকরা গোপনে কর্মরত কর্মীদের আশ্রয় দিয়ে সাহায্য করেছেন। তা ছাড়া এ আন্দোলনে কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ঘটেনি। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি সরকারিভাবে এ আন্দোলনের বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও অঞ্চল ও গ্রামস্তরের শত শত কমিউনিস্ট এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকার এই গণ-আন্দোলনকে অত্যন্ত নির্মমভাবে দমন করেন। সংবাদপত্রগুলোকে স্তব্ধ করে দেয়া হয়। সমগ্র ভারতকে এক বিশাল জেলখানায় পরিণত করা হয়। ১৯৪২ সালের শেষদিক পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৬ হাজার লোককে কারাদন্ড দেয়া হয় এবং ভারত রক্ষা আইনে ১৮ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়। বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী জনতার উপর মেশিনগানের সাহায্যে গুলিবর্ষণ করা হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যারোপেস্নন থেকে বোমা ফেলে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। জেলের কয়েদিদের ওপর অকথ্য উৎপীড়ন চালানো হয়। পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের হাতে দেশকে ছেড়ে দেয়া হয়। বহু ছোট-বড় শহর সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়। প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর লোকদের দ্বারা নিহত হয়। যেসব গ্রামে গণবিপস্নব দেখা দেয় সেখানে পাইকারি হারে জনগণের ওপর পিটনি কর ধার্য করা হয়। ১৮৫৭ সালের পর সরকারি দমননীতির ব্যাপক তান্ডবলীলা আর কখনো দেখা যায়নি। প্রবল সরকারি নিপীড়ন ও আক্রমণের ফলে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সংগ্রাম অচিরেই স্তিমিত হয়ে পড়ে। ভারতের আগেকার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মতো এ আন্দোলনও ব্যর্থ হয়। এ আন্দোলনের ব্যর্থতার জন্য অনেক কারণই দায়ী ছিল। প্রথমত, এ আন্দোলন ব্যর্থ করতে ব্রিটিশ সরকার অমানবিক দমননীতি অনুসরণ করেছিল। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ইংরেজরা কোনো সরকার বিরোধী আন্দোলন সহ্য করতে প্রস্তুত ছিল না। গান্ধীর কাছে যা ছিল 'উড় ড়ৎ ফরব' ইংরেজদের কাছেও তা ছিল জীবন-মরণ সমস্যা। দ্বিতীয়ত, এ আন্দোলন কোনো সুপরিকল্পিত পথে ও সুসংগঠিতভাবে পরিচালিত হয়নি। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন যে, আন্দোলনের রূপরেখা সম্পর্কে গান্ধীজীর কোনো সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না। তা ছাড়া আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই সরকার কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে। ফলে সব আন্দোলনের মধ্যে কোনো শৃঙ্খলাবোধ বা সমচরিত্র ছিল না। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ ইংরেজরা এ আন্দোলন দমনে ঠান্ডা মাথায় ও ভেবে-চিন্তে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছিল। তৃতীয়ত, শুধু সরকারের দমননীতি ও গান্ধীজীর অদূরদশিতাই নয়, ভারতের কিছু মানুষ ও সম্প্রদায়ের অসহযোগিতাও এই ব্যর্থতার জন্য অনেকাংশে দায়ী ছিল। মুসলিম জনগণ এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। হিন্দু মহাসভাও এ আন্দোলন সমর্থন করেনি। হরিজন নেতা আন্বেদকারের নেতৃত্বে ভারতের হরিজন সম্প্রদায়ও এ আন্দোলন থেকে দূরে ছিল। ভারতের বামপন্থি দলগুলোও এ আন্দোলন সমর্থন করেনি। চতুর্থত, ১৯৪২ সালের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যা এবং ১৯৪৩ সালে বাংলায় মনুষ্যসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ 'ভারত ছাড়' আন্দোলনের প্রচন্ড ক্ষতি করেছিল। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছিল খুবই কঠিন। তা ছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভারতকে স্পর্শ না করলেও সাধারণ মানুষকে খুবই দুঃখ-দুর্দশা সহ্য করতে হয়েছিল। গোটা দেশজুড়ে চলেছিল মারাত্মক মুদ্রাস্ফীতি। এ ছাড়া ব্যাপক দুর্নীতি, কৃত্রিম সংকট ও কালোবাজারি মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। এর ফলে একদিকে যেমন ইংরেজ বিরোধিতা বেড়েছিল, তেমনি তা গণ-আন্দোলনের পথে বাঁধার সৃষ্টি করেছিল। পঞ্চমত, ব্রিটিশ শক্তিকে মোকাবিলা করার মতো উন্নত অস্ত্রশস্ত্রের, জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তির যথেষ্ট অভাব ছিল। 'ভারত ছাড়' আন্দোলন নানা কারণে ব্যর্থ হলেও এর রাজনৈতিক গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। প্রথমত, এই আন্দোলন থেকে এটা প্রতিভাত হয় যে, জাতীয়তাবাদী চেতনা ভারতবাসীর মধ্যে কত গভীরভাবে বদ্ধমূল হয়ে বসেছে। কারণ এর আগে ভারতের স্বাধীনতা তথা ভারত থেকে ইংরেজ বিতাড়নের ক্ষেত্রে এত উৎসাহ, এত গণ-স্বতঃস্ফূর্ততা ও মারমুখী পরিস্থিতির কখনো সৃষ্টি হয়নি। এ আন্দোলনের মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় জনগণ যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। গান্ধীজী নেতৃত্ব না দিলেও জনগণ নিজ পথে আন্দোলন পরিচালনা করতে সক্ষম। দ্বিতীয়ত, 'ভারত ছাড়' আন্দোলনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ ব্রিটিশদের নির্মম অত্যাচার ও গুলিবর্ষণে প্রাণ হারায়। ভারতের স্বাধীনতার জন্য এত রক্তদান ব্রিটিশ সরকারকে স্তম্ভিত করে দেয়। তারা বুঝতে পারে ভারতে তাদের দিন ফুরিয়ে আসছে। কাজেই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরই হবে বু্ি‌দ্ধমানের কাজ। তৃতীয়ত. 'ভারত ছাড়' আন্দোলনের ফলে গান্ধীজীর মর্যাদা বিশেষভাবে বৃদ্ধি পায়। ঐতিহাসিক বিপিন চন্দ্রের মতে জেলখানায় সরকারি দমননীতির প্রতিবাদে ১৯৪২ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসে ২১ দিনের অনশন গান্ধীজীকে এক বিরল নৈতিক মর্যাদা এনে দেয়। এই অনশন দ্বারা জাতির হৃদয়ে তিনি স্থায়ী আসন লাভ করেন। কংগ্রেস তার হারানো মর্যাদা ফিরে পায়। পরিশেষে বলা যায়, 'ভারত ছাড়' আন্দোলন ভারতে পূর্ববর্তী সব আন্দোলনের চেয়ে ছিল অধিক গণমুখী ও বৈপস্নবিক। এ আন্দোলনের তীব্রতা উপলব্ধি করে ব্রিটিশ সরকার নীতিগতভাবে ভারত ছাড়তে প্রস্তুতি গ্রহণ করে। প্রকৃতপক্ষে ১৯৪২ সালের বিপস্নব ভারতবাসীর স্বাধীনতা সংগ্রামের চরম পর্যায় বলে অভিহিত করা যায়। এই বাংলাদেশে অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ববঙ্গে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বেও কৃষক প্রজা পার্টি ভারত ছাড়াও আন্দোলনকে বেগবান করতে সাহায্য করেছিল। তাদের সেদিনের ভূমিকা ব্রিটিশ শাসকদের শক্তিশালী গর্জনকে স্থিমিত করার যে কার্যক্রম তা কোনোভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। যদিও সাধারণ কৃষক, গরিব মানুষসহ এই বাংলার সাধারণ জনগণ স্থানীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নেতাদের তোপের মুখে ছিলেন। \হভারত ছাড় আন্দোলন শুধু ভারতবাসীর নয়- এই বঙ্গের মানুষেরও উদার, মুক্তমনা ও প্রগতিবাদী হতে এবং সর্বোপরি স্বাধিকারের কথা ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছিল। তাই এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় বাংলাদেশের অঙ্গনেও ভারত ছাড় আন্দোলনের রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ: লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট