এবার নারায়ণগঞ্জে এক ভয়ংকর অধ্যক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করুন

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছেই। এমন সব ঘটনা সামনে আসছে, তা যেন আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শিক্ষকের হাতে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার পর এবার একই ধরনের অভিযোগে এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে আটক করেছের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)। তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফতুলস্না উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। জানা গেছে, ওই অধ্যক্ষের মুঠোফোন ও কম্পিউটারে তলস্নাশি চালিয়ে পর্নোগ্রাফি ভিডিও পাওয়া গেছে। আমরা বলতে চাই, শিক্ষক হলো মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষকের সুশিক্ষা দানে শিক্ষার্থীরা বিকশিত হবে, তারা মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। কিন্তু যখন একজন শিক্ষক ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপকর্ম করছে তখন তা কতটা বিস্ময়কর এবং ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে সেটি অনুধাবন করা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। উলেস্নখ্য.র্ যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলামের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার সংবাদ ওই মাদ্রাসার এক ছাত্রীর মা ফেসবুকে দেখছিলেন। তখন পাশে শুয়ে থাকা ওই মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তার মাকে বলে, 'এই শিক্ষক গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু আমাদের মাদ্রাসার হুজুরকে কেন গ্রেপ্তার করা হয় না?' এ কথা শুনে ওই শিশুর মা জানতে চান, 'কেন, কী হয়েছে?' তখন ওই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তার মাকে বলে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল আমিন মেয়েদের ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন। পরে ওই ছাত্রীর মা বিষয়টির্ যাবকে জানালের্ যাব অনুসন্ধানে নামে এবং জানতে পারে, ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ওই অধ্যক্ষ মাদ্রাসার ১০-১২ জন ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, মাদ্রাসার ভেতর পরিবার নিয়ে থাকতেন অধ্যক্ষ আল আমিন এবং বাসায় তার স্ত্রী না থাকলে বা মাদ্রাসা ছুটি হলে শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে নানা কৌশলে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করতেন। ফলে এটি কতটা ভয়ংকর পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই অধ্যক্ষ শিশুদের ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছেন। ফলে এই অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হবে এমনটি কাম্য। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে যে, এই ধরনের ঘটনা রোধ করতে না পারলে শুধু বর্তমান সময় নয়, আগামী দিনের জন্যও এর নেতিবাচক প্রভাব আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। প্রসঙ্গক্রমে আমরা এটাও বলতে চাই, এর আগে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। ফলে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এভাবে একের পর এক দেশে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ও বর্বর ঘটনা ঘটতে থাকবে- এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সর্বোপরি বলতে চাই, এসব ঘটনা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করুন। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে, শুধু এই ঘটনাটি নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে স্কুলছাত্রী বখাটের উৎপাতের শিকার হয়েছে, ঘটেছে ভয়ঙ্কর ঘটনা, চলে যেতে হয়েছে না ফেরার দেশে। সঙ্গত কারণেই এবারের ঘটনাটি আমলে নেয়ার পাশাপাশি এ ধরনের বর্বর ও ঘৃণ্য ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।