ইয়াবার চেয়েও ক্ষতিকর 'আইস'

কঠোর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাদকের ভয়ঙ্কর ছোবলে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া নেশার ভয়ানক থাবায় তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন গর্হিত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এমন খবরও বিভিন্ন সময়ে পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। আর ইয়াবা নামক এক মরণঘাতী নেশা কীভাবে ভয়ানক হয়ে উঠেছে তা নিয়ে কম আলোচনা হয়নি, এমনকি নেশায় জড়িয়ে এক সময় ইয়াবা ব্যবসা ও অন্যান্য অনৈতিক কাজে জড়াতেও পিছপা হচ্ছে না অনেকেই এমনটিও জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তরুণ সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধ করতে হলে নেশার বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, ইয়াবার মতো মরণঘাতী মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি ও অভিযানের কারণে কৌশল পাল্টাচ্ছে মাদককারবারিরাও! সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ইয়াবার বিকল্প হিসেবে নতুন মাদকের বাজার তৈরির অপচেষ্টাও থেমে নেই। মাদকসেবীরাও ঝুঁকছে নতুন মাদকে। ইয়াবার বিকল্প হিসেবে বাজারে খাত বা এনপিএসের পর আবির্ভাব ঘটেছে 'আইস' বা ক্রিস্টাল মেথ নামক নতুন মাদকের! এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, এই মাদক নিয়ে তটস্থ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেই চলতি বছরের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি নতুন মাদক হিসেবে আবির্ভূত হয় ক্রিস্টাল মেথ বা আইস। সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া জরুরি যে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 'আইস' লবণের মতো দানাদারজাতীয় মাদক। দেখতে কখনো চিনির মতো কখনো মিসরির মতো। আইস উচ্চমাত্রার মাদক, যা সেবনের পর মানবদেহে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। আইসের দাম ইয়াবার চেয়ে অনেক বেশি। আবার ক্ষতি বা প্রভাবও বেশি। এটি সেবনে মস্তিষ্ক বিকৃতিতে মৃতু্যও হতে পারে। তা ছাড়া অনিদ্রা, অতিরিক্ত উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, হৃদরোগকে বেগবান করে। এমন আশঙ্কার বিষয়ও সামনে এসেছে যে, যদি এই মাদক সয়লাব হয় তবে ইয়াবার চেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে তরুণ সমাজ। সঙ্গত কারণেই এই আশঙ্কাকে সামনে রেখে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। আমরা বলতে চাই, ইয়াবার দৌরাত্ম্যে পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে তা বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর আমলে নিলেই স্পষ্ট হয়। আবার যখন ইয়াবার বিকল্প হিসেবে বাজারে খাত বা এনপিএসের পর আবির্ভাব ঘটেছে 'আইস' বা ক্রিস্টাল মেথ নামক নতুন মাদকের- যার ভয়াবহতা আরো বেশি- তখন সংশ্লিষ্টদের সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়। মনে রাখতে হবে যে, যদি নেশার ছোবলে তরুণ সমাজ বিক্ষত হয়, তবে এই ক্ষতি সবার এবং এর পরিণতি হিসেবে আগামী দিন হবে আরো বেশি ভয়ঙ্কর- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। প্রসঙ্গত, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি জিগাতলার একটি বাসায় আইস ও এমডিএমএ নামের নতুন মাদকের সন্ধান পায় তারা। অভিযানে ওই ভবনের বেজমেন্টে মাদক তৈরির অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরির সন্ধানও মেলে। সেখান থেকে ৫ গ্রাম আইসসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আইস নামে ওই মাদক সরবরাহের মূলহোতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা মনে করি, এই মাদকের সঙ্গে জড়িত চক্র বা সদস্যদের গ্রেপ্তার করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এটা মনে রাখা দরকার, নেশার ছোবল কতটা ভয়ানক হতে পারে। ফলে আইস ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। আর যত দ্রম্নত সম্ভব সময় থাকতে আইসের সব পথ বন্ধ করতে হবে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে মাদক নির্মূলে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।