রিকশাচালকদের অবরোধ সমাধান জরুরি

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলচল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন রিকশা শ্রমিক ও মালিকরা। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার যে, আন্দোলনের এ সময় কুড়িল-রামপুরা-মালিবাগ সড়কের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। ফলে এসব এলাকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় স্বাভাবিকভাবেই। আর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট ছড়িয়ে পড়ে শহরের অন্যান্য সড়কে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজধানী ঢাকা একটি জনসংখ্যাবহুল শহর। ফলে আন্দোলন বা অবরোধ হলে জনভোগান্তি বাড়বে এমনটি স্বাভাবিক, এ ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। আমরা মনে করি, রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ- এই বিষয়টি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসতে হবে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে, দাবি না মানলে ফের সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দেয়ার বিষয়ও জানা গেছে। তবে এটি ইতিবাচক বিষয় যে, রাস্তা বন্ধ করে রিকশাচালক-মালিকদের আন্দোলনে দুঃখ প্রকাশ করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। আমরাও চাই, যথাযথ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান নিশ্চিত হোক। আন্দোলন বা অবরোধকে কেন্দ্র করে জনভোগান্তি সৃষ্টি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এ ছাড়া নিম্ন আয়ের রিকশাচালকরা যে দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন, তাদের দাবির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে এবং সংকট নিরসনে উদ্যোগী হতে হবে। প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথোরিটির (ডিটিসিএ) এক বৈঠকে রাজধানীর তিনটি রুটে রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর রোববার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। জানা যায়, প্রাথমিকভাবে গাবতলী থেকে আসাদগেট হয়ে আজিমপুর, সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ ও কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা হয়ে খিলগাঁও-সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিকশাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অননুমোদিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মূলত এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজধানীর মুগদা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলন শুরু করে রিকশাচালক ও মালিকরা। এর ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবারও আন্দোলন করে রিকশাচালক-মালিকদের নিবন্ধিত ছয়টি সংগঠনের সমন্বয় পরিষদ। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, দাবির বিষয়ে জানা গেছে যে, প্রথম দাবি হলো অনুমোদিত রিকশার জন্য আলাদা লেন তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, চালকদের লাইসেন্স প্রদান করা। তৃতীয়ত, অবৈধ রিকশা চলাচল বন্ধ করা। অবৈধ রিকশা চলাচল বন্ধ হলে সড়কের যানজট এমনিতেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এমন বিষয়ও সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে দাবির বিষয়গুলো যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি অবরোধকে কেন্দ্র করে ভোগান্তির বিষয়ও এড়ানো যাবে না। সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্টদের দ্রম্নত পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলচল বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ- এই বিষয়গুলো আমলে নিয়ে দ্রম্নত সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমলে নেয়া দরকার, সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষ সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আন্দোলনরত চালকরা বলছেন, সিটি করপোরেশন হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দ্রম্নত গ্রহণযোগ্য সমাধান নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।