মা-ছেলেসহ ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা

কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের পরিপন্থি। সঙ্গত কারণেই অপরাধমূলক ঘটনা রোধে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। কেননা, এটা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, অপরাধমূলক ঘটনা রোধ করতে না পারলে সর্বস্তরে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা অত্যন্ত আতঙ্কজনক বাস্তবতাকেই সামনে আনবে- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সম্প্রতি জানা গেল, এবারে কুমিলস্নায় মা-ছেলেসহ প্রকাশ্যে ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘাতক মোখলেছুর রহমান মানসিক রোগী ছিলেন এমনটিও উঠে এসেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রতিনিয়ত যখন বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে, একের পর এক মানুষ খুন হচ্ছে, তখন এর পরিপ্রেক্ষিতে যেমন সামাজিক অস্থিরতা স্পষ্ট হয়, তেমনি কোনো কোনো ঘটনা এতটাই ভয়াবহ যেন তা আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়। এবারের ঘটনায় জানা যাচ্ছে যে, ঘাতক তিনজনকে হত্যা করাই শুধু নয়, ধারালো ছেনি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেছে ৪ নারীসহ আরও ৫ জনকে। বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ওই ঘটনা ঘটেছে কুমিলস্না জেলার দেবীদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র মতে, দেবীদ্বারের রাধানগর গ্রামের এই ঘাতক পেশায় রিকশাচালক। বুধবার সকাল ১০টার দিকে রিকশা চালিয়ে বাড়িতে এসে ধারালো লম্বা ছেনি নিয়ে সে বেরিয়ে যায়। প্রথমে সে প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম, তার স্ত্রী নাজমা বেগম ও মা মাজেদা বেগমকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এতে ঘটনাস্থলেই নাজমার মৃতু্য হয়। পরে ঘাতক একই বাড়ির মৃত শাহ আলমের শিশুপুত্র আবু হানিফকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় হানিফের মা আনোয়ারা বেগম ছেলেকে বাঁচাতে দৌড়ে এলে ঘাতক মোখলেছ তাকেও কুপিয়ে হত্যা করে। মা ও ছেলের মৃতু নিশ্চিত করে ঘাতক মোখলেছ রক্তমাখা উন্মুক্ত ধারালো ছেনি নিয়ে বাড়িতে ও রাস্তায় কয়েজনকে কুপিয়ে আহত করে। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয় লোকজন ঘাতককে পিটিয়ে হত্যা করে বলে জানা যায়। আমরা বলতে চাই, এ ঘটনা অত্যন্ত শোকাবহ এবং এভাবে তরতাজা প্রাণ ঝরে যাবে এর চেয়ে হৃদয় বিদারক ঘটনা আর কি বা হতে পারে! প্রসঙ্গত এটাও বলতে চাই যে, ঘাতক মানসিক রোগী ছিলেন বলে যেহেতু জানা যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে বলা দরকার যে, সে মানসিক রোগী হলে তার গতিবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বা সতর্কতার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া গণপিটুনী দিয়ে হত্যা করার বিষয়টিও কোনো সমাধানের পথ হতে পারে না। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এর আগেও গণপিটুনীতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। অথচ ক্রোধের বশে গণপিটুনীতে মানুষ খুন করা হবে এটাও কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। সর্বোপরি আমরা সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, এবারের ঘটনাটি আমলে নিন এবং ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করুন। মনে রাখতে হবে শুধু এই ঘটনাটি নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত মানুষ খুন হচ্ছে নানা কারণেই, নানাভাবে। ফলে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর হতে হবে। একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনায় জনমনে কিরূপ প্রভাব ফেলে এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে তা কতটা নেতিবাচক- সেটিও আমলে নেয়া জরুরি। একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখা এবং জনজীবনের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।