কাঁচামরিচ ও সবজির উচ্চ মূল্য

দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণে আনুন

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বন্যার কবলে পড়েছে দেশের ২৮ জেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২০ লাখ মানুষ। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছেই। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে বৃষ্টি ও বন্যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারে। বৃষ্টি ও বন্যার অজুহাত তুলে বিক্রেতারা নিত্যপণ্যের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে কাঁচামরিচ ও সবজির বাজারে এখন আগুন। কদিন আগেও কাঁচামরিচের কেজি ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সেই কাঁচামরিচ এখন ২০০ টাকা কেজি। ১০ টাকার কাঁচামরিচ চাইলে বিক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নেন। রাজধানীর কোনো কোনো বাজারে ২০০ টাকার ওপরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। কেবল কি কাঁচামরিচের দাম, বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে। এ নিয়ে টানা দুই সপ্তাহ পেঁয়াজের দাম কমলো। অবশ্য এর আগে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছিল। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমলেও দাম বেড়ে তিন গুণ হয়েছে কাঁচামরিচের। সেই সঙ্গে দাম বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির। বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে কাঁচামরিচ ও সবজির দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। পটল, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, করলা, ঢেঁড়শ ও কাকরল সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। এসব সবজি আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। আগে টমেটো বিক্রি হতো ১০০ টাকা কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। অবাক ব্যাপার বন্যা কিংবা অতিবৃষ্টির অজুহাত তোলা হলেও বাজারে পণ্য সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও আমরা দেখেছি একই দৃশ্য। বাজারে প্রচুর সরবরাহ রয়েছে পেঁয়াজের- তারপরেও কেজি প্রতি ২০ টাকা দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। এখন অবশ্য বাজার ভেদে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের অতি লোভী মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দু'বছর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ১২০ টাকা। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, আমরাও সম্পাদকীয় কলামে বহুবার লিখেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। জনগণকে অসহায়ত্বে বা জিম্মিদশায় ফেলে দেয়া কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের কাজ নয়। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে ভালো কথা, সেই উন্নয়নের সুফল যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারে সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ জন্য দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।