নিত্যপণ্যের বাজার

নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে

প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এর ফলে বাজারে শাক-সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে বেড়েছে আদা-রসুন ও মুরগির দাম। সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমলেও সবচেয়ে বেশি কমেছে মরিচের দাম। পণ্যটির দাম কেজিতে ১০০ টাকার বেশি কমেছে। আমদানিকৃত চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৪০ টাকা। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। যা আগে বিক্রি হয়েছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। সে হিসেবে প্রতিকেজি আদার দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আমদানিকৃত চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৬০ টাকা কেজি। আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৪০ টাকা কেজি। সে হিসেবে চায়না রসুনে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা, দেশি রসুনে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহ পর ঈদুল আজহা। ফলে আদা ও রসুনের চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য দুটির দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে দেশি ও কক মুরগির চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম, সেজন্য দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের এই যুক্তি পুরনো। আমরা এর আগেও বলেছি মূলত অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারণে বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। তারা একেক সময় একেক অজুহাত দাঁড় করায়। এর আগে পবিত্র রমজানে বন্যা অতিবৃষ্টির অজুহাত তুলেছিল। আর এখন তুলছে আসন্ন ঈদুল আজহার। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের অজুহাতের শেষ নেই। কীভাবে জনসাধারণের পকেট কেটে অতিরিক্ত মুনাফা করা যায় সেদিকেই তাদের মনোযোগ সবচেয়ে বেশি। এ ধরনের অসুস্থ ও অতিলোভী মানসিকতা পরিত্যাগ করতে হবে। আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সঙ্কটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দুই বছর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ১২০ টাকা। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে তো কোনো কিছুর ঘাটতি দেখলাম না। কার্যকর বাজার তদারকি ব্যবস্থা না থাকায়, হঠাৎ পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর ও কঠোর উদ্যোগই পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে।