প্রাথমিক স্কুলে একবেলা খাবার

যথাসময়ে বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষার বিস্তার ঘটানোর কোনো বিকল্প নেই। সঙ্গত কারণেই শিক্ষার উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষার দিকে গুরুত্ব দেয়া অপরিহার্য। প্রসঙ্গত বলা দরকার, প্রাথমিকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী যেমন বারবার আলোচনায় এসেছে, তেমনি অনেক পরিবারই শিশুদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহ বোধ করে না বরং শিশুকালেই তাদের শ্রমনির্ভর করে তুলতে কাজে পাঠিয়ে অর্থ আয়ের দিকে ঠেলে দেয়- যা শিশুর ভবিষ্যৎকেই হুমকির মুখে ফেলে। এ ছাড়া শিশুদের পুষ্টিজনিত সংকটের বিষয়ও সামনে এসেছে বিভিন্ন সময়েই। সম্প্রতি যখন জানা গেল যে, ২০২৩ সালের মধ্যে সব প্রাথমিক স্কুলে একবেলা খাবার নিশ্চিত করা হবে তখন তা অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করাসহ প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি আমরাও চাই। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, সারাদেশে সব প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেড় কোটি শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে দুপুরের খাবার সরবরাহে একটি নীতির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তথ্য মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে 'জাতীয় স্কুল মিল নীতি-২০১৯' এই অনুমোদন পায়। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি জায়গায় 'মিড ডে মিল' চালু হয়েছে। কীভাবে তা সমন্বিতভাবে সারাদেশে শুরু করা যায়- সে জন্যই এ নীতিমালা। সেখানে বলা হয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে এমন ৩ থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য এই নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। তাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তি চাহিদার ক্যালরির নূ্যনতম ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া জাতীয় খাদ্য গ্রহণ নির্দেশিকা অনুযায়ী দৈনিক প্রয়োজনীয় শক্তির ১০-১৫ শতাংশ প্রোটিন থেকে এবং ১৫-৩০ শতাংশ চর্বি থেকে আসতে হবে। খাদ্য তালিকার বৈচিত্র্য ঠিক রাখতে ১০টি খাদ্যগোষ্ঠীর মধ্যে অন্তত চারটি বেছে নিতে হবে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে। শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর আগে বিভিন্ন সময়েই শিশুদের পুষ্টিজনিত সংকটের বিষয় আলোচনায় এসেছে বারবার। সঙ্গত কারণেই আমরা বলতে চাই, যদি প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তি চাহিদার ক্যালরির নূ্যনতম ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় তবে তা হবে অত্যন্ত ইতিবাচক আর তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একইসঙ্গে আমরা বলতে চাই, যে উদ্যোগই গ্রহণ করা হোক না কেন, তা থেকে সুফল পেতে হলে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। ফলে এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিতে যথাযথ প্রচেষ্টা জারি থাকবে এমনটি কাম্য। জানা গেছে, বর্তমানে তিন উপজেলার স্কুলে রান্না করা খাবার এবং ১০৪টি উপজেলায় বিস্কুট খাওয়ানো হচ্ছে। ওই ১০৪টি উপজেলার মধ্যে ৯৩টিতে সরকার ও ১১টিতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অর্থায়নে এ কর্মসূচি চলছে। এ ছাড়া সুখকর বিষয় হলো, পরীক্ষামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে বলেও জানা গেছে এবং ওইসব এলাকায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আর এসব দিক বিবেচনায় নিয়েই মন্ত্রিসভা জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি নীতি অনুমোদন দিয়েছে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়া শিশুদের স্কুলমুখী করতেও এটি ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করা, স্কুলমুখী করাসহ প্রাথমিক শিক্ষাকে আরও এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।