সড়কে বাড়ছে মৃতু্যর মিছিল

যথাযথ পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। আর এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দুর্ঘটনায় মৃতু্যও থেমে নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, গত শনিবারও দেশের বিভিন্নস্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬ জন। এর মধ্যে ফরিদপুরে ব্রিজের রেলিং ভেঙে বাস খাদে পড়ে ৮ জনসহ ১১ জন এবং বগুড়া, ঠাকুরগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা ও ময়মনসিংহে ১ জন করে নিহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর কারণ হিসেবে জানা যাচ্ছে যে, ব্রিজের রেলিং ভেঙে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে যাত্রী নিহত হওয়া ছাড়াও- অটোরিকশায় বাসের ধাক্কা, যাত্রীবাহী বাস উল্টে যাওয়া, মহাসড়কে নৈশকোচ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা, নসিমনের ধাক্কা রিকশার সঙ্গে, ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যানের সঙ্গে বাসের ধাক্কার ঘটনা ঘটেছে। আমরা বলতে চাই, পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই প্রতিনিয়ত সড়ক পথে দুর্ঘটনার চিত্র সামনে আসে। এত মৃতু্যর বিভীষিকা- যেন সড়ক পথ একটা মৃতু্যর ফাঁদ! সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক বাস্তবতা অনুধাবন করে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার দুর্ঘটনার কারণগুলো আমলে নেয়া এবং সেই মোতাবেক কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। বিভিন্ন সময়েই ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার সামাগ্রিক চিত্র আমলে নিলে- মুখোমুখি সংঘর্ষ, চালকদের বেপরোয়া গতি, অসবাধনতা, রাস্তায় খানাখন্দ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অনভিজ্ঞ চালক দিয়ে গাড়ি পরিচালনাসহ নানা কারণই সামনে আসে। যেখানে দেশের প্রতিটি মানুষই চায় যাত্রা পথ যেন হয় নিরাপদ- সেখানে বাস্তবতা এমন যে, অদক্ষ চালক ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি থেকে শুরু করে লাইসেন্স ছাড়াও গাড়ি চালাচ্ছে অনেক চালক। আমরা মনে করি, লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং নিয়মনীতি মানতে বাধ্য করতে হবে। কেননা, একের পর এক সড়কে তরতাজা প্রাণ ঝরে যাবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া সমীচীন, 'নিরাপদ সড়ক চাই'-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছ, এবার পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে ৯ দিনে সারাদেশে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৩৫টি। আর এতে নিহত হয়েছেন ১৮৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৩৫৫ জন। এর মধ্যে শুধু সড়কেই ১৩০টি দুর্ঘটনায় ১৮০ জন নিহত এবং ৩৪৪ জন আহত হয়েছেন। এভাবে যদি সড়ক দুর্র্ঘটনা ঘটতে থাকে এবং ঝরে যেতে থাকে একেকটি তরতাজা প্রাণ তবে এর ভয়াবহতা কীরূপ তা আমলে নিতে হবে। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ও বেপরোয়া গতির কাছে হারিয়ে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। গণপরিবহনে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং রেষারেষির কারণেও দুর্ঘটনাও বাড়ছে। সঙ্গত কারণেই সড়ককে নিরাপদ করতে হলে সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সারাদেশে যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। নাকের ডগা দিয়ে প্রকাশ্যে সড়কে গাড়ি চালাচ্ছে শত শত লাইসেন্সবিহীন চালক! রাজপথ দাপিয়ে বেড়ানো অনেক বাস-মিনিবাসই ফিটনেসবিহীন এমনটিও আলোচিত বিষয়, ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক তা আমলে নেয়া অপরিহার্য। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যে কোনো মূল্যে সড়ক নিরাপদ করতে হবে। আর এ জন্য যত রকম প্রতিবন্ধকতা আছে তা চিহ্নিতকরণ এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় লাশের সংখ্যা বাড়বে এটা কাম্য নয়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হচ্ছে ক্রমাগত। অথচ সড়ক যদি নিরাপদ না হয় তবে যোগাযোগ সহজ হলেও তার সুফল অনিশ্চিতই থেকে যাবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ চালক, রাস্তাঘাটের পরিস্থিতিসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি প্রত্যাশিত।