পানিতে ডুবে শিশুর মৃতু্য

যথাযথ উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একের পর এক পানিতে ডুবে শিশু মৃতু্যর ঘটনা ঘটছেই। সঙ্গত কারণেই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যখন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ হচ্ছে না- তখন স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আমলে নেয়া সমীচীন যে, পত্রপত্রিকায় প্রতিনিয়তই এমন খবর উঠে আসে যে- শিশুরা পানিতে ডুবে মারা গেছে। অথচ এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পানিতে ডুবে সায়েম নামের পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর মৃতু্য হয়েছে। রোববার দুপুরে উপজেলা ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ভাগদরিয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। বাড়িরে পাশে খেলা করার সময় সবার অলক্ষ্যে পুকুরের পানিতে পড়ে গিয়েছিল সে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের ধরমপাশা ও নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে রোববার পানিতে ডুবে পাঁচ শিশুর মৃতু্য হয়েছে বলেও জানা গেছে। পাঁচ শিশুর মৃতু্যর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা গেছে, খেলাধুলা করার একপর্যায়ে পানিতে ডুবে যাওয়া, গোসল করতে যাওয়া, বিলের পানিতে ফুল তুলতে যাওয়া। আমরা বলতে চাই, শুধু এ ঘটনাগুলোই নয়, প্রতিনিয়তই পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালে শিশুদের পানিতে ডুবে মৃতু্যর খবর সামনে আসে। বলাই বাহুল্য, এই ধরনের ঘটনাতে অসচেতনতা বা অসাবধানতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। বিভিন্ন সময়ের সংঘটিত ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণে এটাই সামনে আসে যে, পানিতে ডুবে মৃতু্যর মতো বেদনাদায়ক ঘটনার ক্ষেত্রে অভিভাবক অসচেতনতার বিষয়টি স্পষ্ট। আমরা মনে করি, যখন পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটছেই, তখন বিষয়টি আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। কেননা, এইভাবে ঝরে যাবে একেটি তরতাজা প্রাণ, এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। এর আগে এমন তথ্যও সামনে এসেছিল যে, নদীপ্রধান বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এ হিসাবে প্রতিবছর পানিতে ডুবে মারা যায় ১২ হাজার শিশু। সঙ্গত কারণেই এই চিত্র কতটা ভয়ানক তা অনুধাবন করা জরুরি। এ ছাড়া এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল, শিশুদের পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার বড় কারণই হলো পরিবারের অসচেতনতা। আমরা মনে করি, একদিকে অভিভাবক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে অন্যদিকে সাঁতার শেখার বিষয়টিও অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাও চালাতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, শিশুর অন্যতম ঘাতক এই পানিতে ডুবে মৃতু্য রোধে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। শিশুরা জলাধারের কাছে যেন যেতে না পারে সেই খেয়াল রাখা এবং সতর্কতার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের এটাও মনে রাখতে হবে, সাঁতার না জানার কারণেও অনেক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এমনকি শুধু শিশুরাই নয় প্রাপ্তবয়স্কদেরও পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে, তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে দেশ। সর্বোপরি আমরা সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, শিশুর সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিকল্প নেই। একের পর এক পানিতে ডুবে শিশুমৃতু্যর ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এ ব্যাপারে অভিভাবক তথা পরিবারসহ সবারই দায়িত্ব আছে সেটি মনে রাখতে হবে। সমাগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।