নন-লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে কিছু কথা

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সব নির্দেশনার বাস্তবায়ন বিমা কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শাখা ব্যবস্থাপক ও প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র অফিসাররা করে থাকেন। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে তাদের নিয়ে একটি বিশেষ সভা আহ্বান করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

মীর নাজিম উদ্দিন আহমেদ
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ এবং কর্তৃপক্ষের মান্যবর চেয়ারম্যান মহোদয় কর্তৃক উপরোক্ত বিষয়ে ইসু্যকৃত সার্কুলার নং-৬১ থেকে ৬৫ বিমা শিল্পে কমিশনের দৌরাত্ম্য নিরসনে বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত বিমা কোম্পানির চেয়ারম্যান মহোদয়রা ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নিয়ে গত ১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় কমিশনসংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স ফোরাম কর্তৃক গত ২৪ তারিখে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয় তাতেও কমিশনসহ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দুটি সভায়ই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ১৫% কমিশনের বেশি দেয়া হবে না তা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার খবরে প্রকাশ করা হয়। আমরা জানি আইনে আছে কমিশন পাবে এজেন্ট কিন্তু প্রচার প্রচারণায় প্রকাশ পাচ্ছে আমরা ১৫%-৫% টেক্স= ১৪.২৫% কমিশন সর্বসাকুল্যে বিমা গ্রহীতাকেই দেবো। কমিশন যদি বিমা গ্রহীতাকেই দেয়া হয় তবে তা এক সময় বর্তমান অবস্থার মতোই হবে বলে সবার মতামত তাই এই অবস্থা থেকে উত্তরণে মহাশয়ের আশুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিমা কোম্পানিগুলোর উন্নয়ন কর্মকর্তাদের জন্য সমমর্যাদার একটি পে স্কেল প্রণয়নে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বহুদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানির উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন বৈষম্যের কারণেও মার্কেট আবার অস্থির হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স ফোরামের আলোচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ও সধুীজনদের নিয়ে কমিশন বন্ধের এবং বিমা শিল্পের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতায় ফিরিয়ে আনার নিমিত্তে সভা-সমাবেশ ও প্রচারণার ব্যবস্থা করা হবে কিন্তু এখনো দৃশ্যমান কিছুই দেখা যাচ্ছে না। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলায় জেলায় তদারকি সেল গঠন করতে হবে এবং সার্কুলারের শর্ত ভঙ্গকারীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। নন-লাইফ বিমায় অনাদায়ী প্রিমিয়াম একটি মারাত্মক ব্যাধি। বিশেষ করে মেরিন বিমার ক্ষেত্রে এলসি খোলার পর বিমাকৃত মাল আসতে কিছুটা সময় লাগে বলে বিমা গ্রহীতারা মালামাল না আসা পর্যন্ত প্রিমিয়াম দিতে চায় না। এজন্য ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বাধ্য করাতে হবে যেন ব্যাংক তাদের এলসি মার্জিন ও অন্যান্য খরচের সঙ্গে ইন্সু্যরেন্সের পে-অর্ডার ইসু্যর ব্যবস্থা করে। প্রত্যেক বিমা কোম্পানিরই মার্কেটে কিছু অনাদায়ী প্রিমিয়াম রয়েছে। এই প্রিমিয়াম কোম্পানিতে জমার কোনো নির্দেশনা না দিলে এই টাকা দ্বারা বাজার অস্থিতিশীল হতে পারে। বিষয়টি নজরে নিয়ে দ্রম্নত ১ আগস্টের আগেই নির্দেশনা দানের ব্যবস্থা করতে মহাশয়ের আজ্ঞা হয়। বিমা কোম্পানিগুলো যাতে রেগুলার ম্যান পাওয়ারের বাইরে অস্তিত্বহীন অতিরিক্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে না পারে এবং কমিশন বেসিসে কাউকে নিয়োগ দিতে না পারে তা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সব সময় মনিটরিং করতে হবে। প্রয়োজনে বর্তমান ম্যান পাওয়ারের একটি তালিকা এখনি সব কোম্পানি থেকে চেয়ে নেয়া যেতে পারে। ছোট ছোট বিমা কোম্পানিগুলোকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে যাতে বড় কোম্পানিগুলো তাদের (ছোট ছোট কোম্পানির) ব্যবসা গ্রাস করতে না পারে তার জন্য ২-৩ বছরের জন্য লক ইন ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিতে হবে। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সব নির্দেশনার বাস্তবায়ন বিমা কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শাখা ব্যবস্থাপক ও প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র অফিসাররা করে থাকেন। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে তাদের নিয়ে একটি বিশেষ সভা আহ্বান করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। মীর নাজিম উদ্দিন আহমেদ: ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেড