প্রতারণার মাধ্যমে বুথ থেকে টাকা চুরি

গ্রাহক সচেতনতা জরুরি

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন সময়েই এটিএম বুথে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। উঠে এসেছে গ্রাহক ভোগান্তির কথাও। এছাড়া বলার অপেক্ষা রাখে না, ব্যাংকিং খাতে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও আলোচিত। সম্প্রতি প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, এবার প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরি করার অভিযোগে শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জানা গেছে, আসামি শহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরি করে আসছেন। তার নামে ঢাকায় অন্তত তিনটি মামলা থাকার তথ্য মিলেছে। টাকা তোলার নাম করে ব্যাংকের বুথে অপেক্ষা করতেন, কোনো গ্রাহক যখন এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তেন, তখন শহিদুল তাকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে যেতেন। কৌশলে ওই গ্রাহকের পিন নম্বরটি জেনে নিতেন। আসল এটিএম কার্ডটি নিজের কাছে রেখে নকল কার্ডটি গ্রাহককে ধরিয়ে দিতেন। এভাবে কয়েক বছর ধরে দুই থেকে তিন লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন এমনটি জানা যাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, যখন এমন ঘটনা ঘটে তখন তা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। কেননা এভাবে যদি টাকা উত্তোলন করে, তবে গ্রাহক ভোগান্তি এবং সার্বিকভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সামনে আসে। সঙ্গত কারণেই এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার বিষয়টি আমলে নেয়া এবং বুথের সার্বিক নিরাপত্তায় করণীয় নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার, প্রতারণার মাধ্যমে ডাচ্‌?-বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাক থেকে টাকা চুরির অভিযোগে ব্যাংকটির অল্টারনেট ডেলিভারি চ্যানেলের প্রধান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। তিনি বলেছেন, দীর্ঘদিন থেকে ডাচ্‌?-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে কর্মরত নিরাপত্তারক্ষীদের মাধ্যমে জানতে পারেন, সংঘবদ্ধ একটি চক্র কৌশলে গ্রাহকের ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ড এবং পিন নম্বর সংগ্রহ করে টাকা তুলছে। আমরা বলতে চাই, এই চক্রের তৎপরতা কতটা উদ্বেগের তা অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। লক্ষণীয় যে, শুধু এই ঘটনাই নয়- এর আগে গত জুনে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে এটিএম বুথের সিস্টেম হ্যাকিং করে টাকা তোলার মামলায় গ্রেপ্তার হন ছয় বিদেশি নাগরিক। তখন ডিবি পুলিশ আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে জানায়, সংঘবদ্ধ ডিজিটাল জালিয়াত চক্রের সদস্যরা খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের সামনের ডাচ্‌?-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের সিস্টেম হ্যাক করে। এমন ঘটনা ঘটেছে যে, বুথ থেকে টাকা তোলা হয়েছে কিন্তু এর কোনো রেকর্ড ব্যাংকের সার্ভারে নেই, এমনকি কোনো গ্রাহকের হিসাব থেকেও টাকা কমে যায়নি। এছাড়া এর আগে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য চুরি করে ক্লোন কার্ড তৈরি করেছিলেন এমন খবরও উঠে এসেছিল যেখানে গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। আমরা মনে করি, যে কোনোভাবেই যদি কুচক্রীরা টাকা উত্তোলনে সক্ষম হয় তবে বিষয়টি ভয়ানক বাস্তবতাকেই সামনে আনে। যা সামগ্রিক অর্থে ব্যাংকিং নিরাপত্তার প্রশ্নে হুমকিস্বরূপ। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সাধারণত এটিএম বুথ থেকে প্রতিবার টাকা উত্তোলনের সময় কয়েক ধরনের তথ্য ব্যাংকের সার্ভারে জমা হয়। ব্যাংকগুলো এসব তথ্য এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে। ফলে এর যেমন সুরক্ষা জরুরি তেমনিভাবে গ্রাহকদের কাছে কৌশলে যেন তথ্য কেউ হাতিয়ে নিতে না পারে সে জন্য গ্রাহক সচেতনতাও অপরিহার্য। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ প্রয়োজন। সংশ্লিষ্টরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নিশ্চিত করবে এমনটি কাম্য।