চালের দাম বৃদ্ধি

বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
হঠাৎ করেই বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। চালের ধরন ভেদে কেজিতে ২ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত মূল্য বেড়েছে। তবে, মূল্য বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টিতে সরবরাহ কমেছে, চাহিদা অনুযায়ী চাল আসছে না বাজারে, তাই মূল্য বেড়েছে। আড়তদাররা বলছেন, একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে পরিবহন খরচ বাড়ায় চালের মূল্যও কিছুটা বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, সব ধরনের চালের মূল্য বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা। ৩৪ টাকা কেজি দরের মোটা চাল (স্বর্ণা) রাজধানীর কোনাপাড়া বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকায়। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া নাজিরশাইল চাল এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। সরু চাল নামে পরিচিত মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা কেজি দরে- যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। পাশাপাশি মূল্য বেড়েছে সুগন্ধি চালেরও। ৯০ টাকা কেজি দরের খোলা কালিজিরা চাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কালিজিরা চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। \হআমরা মনে করি, হঠাৎ করে চালের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এটা অতি মুনাফাখোর ও লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কখনোই ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনা করে না। বিক্রেতাদের অভিমত 'আমরা বেশি মূল্য দিয়ে কিনলে কম মূল্যে বিক্রি করব কীভাবে?' বেশি মূল্য দিয়ে কিনেছে- তাদের এই বক্তব্য কি প্রমাণ সাপেক্ষ। তারা যে অজুহাত তুলেছে এই অজুহাত অত্যন্ত পুরনো। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে ভাতপ্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে, তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। তাদের পরিবারে অধিকসংখ্যক পোষ্য থাকায়, চালের পরিমাণও বেশি লাগে। মনে রাখতে হবে চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের হীনমানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দুবছর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ১২০ টাকা। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। আর চালের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়লো। এ ক্ষেত্রে সবজির কথা বলাই বাহুল্য। এটা তাদের অসুস্থ ব্যবসায়িক-সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা কখনোই জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে বারবার। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন চালসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।