শুরু হচ্ছে চালকদের ডোব টেস্ট

সঠিক বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পরিবহন চালকদের ডোপ টেস্ট, বিষয়টি ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, এই পরীক্ষার মাধ্যমে চালকরা মাদকাসক্ত কিনা, তা রাস্তায়ই পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষায় কোনো চালক ধরা পড়লে তাকে সরাসরি জেলে পাঠানো হবে। তথ্য মতে, রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বুধবার মালিক-শ্রমিকদের এক সভায় এ কথা জানিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক। তিনি বলেছেন, চালকদের ডোপ টেস্টের বিষয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হবে। সেখানে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট থাকবে। টয়লেটে নিয়ে চালকদের মূত্র পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষায় মাদকের নমুনা পাওয়া গেলে সেই চালককে সঙ্গে সঙ্গে জেলে নেয়া হবে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত কার্যকর প্রভাব রাখতে পারে, যদি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, চালকরা যদি মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ি চালায় তবে তা ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। প্রসঙ্গত আমরা এটাও বলতে চাই, সড়ক দুর্ঘটনা কতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তা পত্রপত্রিকায় চোখ রাখলেই স্পষ্ট হয়। প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। কেউ দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হচ্ছে, কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করছে, কেউ আবার চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। ফলে এ কথা মনে রাখা জরুরি, সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে চালক অদক্ষতার বিষয়টি বারবার সামনে এসেছে। এছাড়া বলা দরকার, চালক মাদকসেবন করে যদি গাড়ি চালায়, তবে তাতে যাত্রীর নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এমন আশঙ্কা স্বাভাবিক। যে কোনো যানবাহনে চালকই যদি বেসামাল থাকেন তবে তার ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটবে এমন ভয় থাকবেই। সঙ্গত কারণেই দুর্ঘটনা রোধ এবং সার্বিকভাবে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চালক মাদকাসক্ত কিনা সেটি পরীক্ষা করার বিষয়টি অপরিহার্য বলেও আমরা মনে করি। ফলে এটির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হোক এবং কেউ দোষী হলে আইন মোতাবেক তার শাস্তি নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনা এমন অবস্থায় পৌঁছেছে, যেন একেকটি সড়ক হয়ে উঠছে মৃতু্যফাঁদ। মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে ঘরে ফিরবে এমন নিশ্চয়তা নেই। প্রতিনিয়ত ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। চালকের অবৈধ লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, যত্রতত্র পার্কিং, ওভারটেকিং, ট্রাফিক আইন না মানাসহ বিভিন্ন কারণেই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই চালক মাদকাসক্ত কিনা এই বিষয়টি পরীক্ষার পাশাপাশি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলো আলোচিত, প্রত্যেকটি বিষয় সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত, যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়ন হচ্ছে- এই অগ্রগতিকে ফলপ্রসূ করতে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। সর্বোপরি আমরা এ কথাও বলতে চাই, বিভিন্ন সময়েই সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটলে অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের কথাও সামনে এসেছে; কিন্তু বাস্তবতা হলো সড়ক নিরাপদ হচ্ছে না। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক। আর এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, সড়ক নিরাপদ করতে চালকের সুস্থতা জরুরি। সঙ্গত কারণেই চালক মাদকাসক্ত কিনা এই পরীক্ষার বিষয়টির যথাযথ বাস্তবায়ন হওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।