শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার হ্রাস

এটা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার হ্রাসে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশি নবজাতক ও প্রসূতি মা বেঁচে থাকেন সুষ্ঠু সেবা ও যথাযথ চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে। তা সত্ত্বেও বিশ্বে এখনও প্রতি ১১ সেকেন্ডে একজন প্রসূতি কিংবা নবজাতকের মৃতু্য ঘটছে। এই চিত্র হতাশাজনক। যে করেই হোক, এই হতাশাজনক চিত্র বদলাতে হবে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল- ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালের পর থেকে বিশ্বে শিশু মৃতু্যহার প্রায় অর্ধেক এবং মাতৃমৃতু্য এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি কমেছে। এ অগ্রগতি বা সাফল্যের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু ও মাতৃমৃতু্য হ্রাসে সবচেয়ে অগ্রগতি ঘটানো দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, বেলারুশ, কম্বোডিয়া, কাজাখস্তান, মরক্কো, মঙ্গোলিয়া, রুয়ান্ডা, পূর্ব তিমুর ও জাম্বিয়া অন্যতম। দেশগুলোর রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়া, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিনামূল্যে মা ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যার সুযোগ বাড়ানোর মতো পদক্ষেপগুলো বড় ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। আমরা মনে করি, এটা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক সংবাদ। এমন এক সময় উপযুক্ত সেবা ও চিকিৎসার অভাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার অনেক বেশি ছিল। অনুন্নত দেশে এই চিত্র এখনো বেশি। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক। তবে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির কারণে এখন দেশে দেশে শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার অনেক কমে গেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সফলতা অর্জন করেছে। এর কৃতিত্ব বর্তমান সরকারের। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে রেকর্ড সৃষ্টি করে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছেন। তার গৃহীত নানা ইতিবাচক পদক্ষেপে দেশবাসী আজ তার সুফল পাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম ও অতুলনীয়। অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বাংলাদেশের সব সামাজিক সূচকেই উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ অনন্য নজির স্থাপন করেছে। শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার রোধ ও ডেঙ্গু মোকাবিলা তার উজ্জ্বল প্রমাণ। যে করেই হোক এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। উলেস্নখ্য, ১৯৯০ সালের পর থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃতু্যহার কমেছে ৫৬ শতাংশ- যা সংখ্যায় ১ কোটি ৪২ লাখ থেকে কমে ২০১৮ সালে দাঁড়িয়েছে ৬২ লাখে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি ঘটেছে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। এর অন্যতম উদাহরণ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মসূচি অনুকরণীয়। এ অঞ্চলে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃতু্য কমেছে ৮০ শতাংশ। আমরা আশা করব, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব। এর ফলে মায়েরা যেমন রক্ষা পাবে, একইভাবে শিশুদের জন্য গড়ে উঠবে নিরাপদ বিশ্ব এবং এর কোনো বিকল্প নেই।