গণপরিবহণ নিয়ে জনভোগান্তির শেষ কোথায়?

ঢাকার রাস্তায় একই সঙ্গে চলছে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটো, রিকশা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ফলে এক জগাখিচুড়ি অবস্থার কারণে যানজট এখানে নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য একটি সুসমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো প্রয়োজন। সড়ক পথের উন্নয়নের পাশাপাশি ঢাকার চারপাশের নৌপথগুলো চালু করা দরকার।

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ড. হারুন রশীদ
রাজধানীবাসীর কাছে দিন দিন অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠছে গণপরিবহণব্যবস্থার অপ্রতুলতা। শুধু তাই নয়- ভোগান্তির তালিকা দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এখানকার পরিবহণব্যবস্থা, ট্রাফিকব্যবস্থাপনা, রাস্তার সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। যাচ্ছেতাইভাবে সবকিছু চলাটাই যেন অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। নাগরিক মানুষজন সবচেয়ে অসহায় বোধ করে পরিবহণের জন্য অপেক্ষার সময়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে রাজধানীর রাস্তাঘাটগুলোর বেহাল দশা, যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে এই ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে। সত্যি বলতে কি গণপরিবহণের অব্যবস্থাপনা দুঃসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে অনেক আগেই। কোথাও যাওয়ার জন্য নাগরিকদের রাস্তায় নেমেই এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তাড়া আছে কিন্তু যানবাহনের তীব্র সংকট। অফিসে যাওয়া, বাচ্চার স্কুল, বিয়ে-দাওয়াত, পার্টিতে যাওয়া, এমনকি রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া-প্রয়োজনীয় কোনো গন্তব্যেই যে সময়মতো পৌঁছানো যাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বাসে উঠতে গেলে তিলধারণের ঠাঁই নেই। ট্যাক্সিক্যাব অপ্রতুল, ভাড়াও অতিরিক্ত। সিএনজিচালিত অটোরিকশা মিটার বহির্ভূত অধিক ভাড়া নিয়েও প্রয়োজনীয় গন্তব্যে যেতে নারাজ। এর বাইরে বিকল্প যানবাহনও অপ্রতুল। এ অবস্থায় মানুষজনের ভোগান্তির কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। যানজটের কারণে তো রাজধানী স্থবির হয়ে থাকে অধিকাংশ সময়। অথচ একটি দেশের রাজধানীর কর্মচঞ্চলতা যদি এভাবে রাস্তাতেই নষ্ট হয় তাহলে সেই দেশের ভূতভবিষ্যৎ যে কি তা আর লেখার অপেক্ষা রাখে না। যানজটের ফলে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা, বাড়ছে রোগ-ব্যাধি। এ ছাড়া যানজট একটি স্থায়ী সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়ায় পরিবহণ খাতে বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো ছাড়া কোনো উপায় নেই। যানজট সমস্যার সমাধান না হওয়ায় প্রতিদিনই অনেক কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। পিছিয়ে যাচ্ছে উন্নয়ন। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অগ্রগতি। শুধু তাই নয়- শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণে নানা সংক্রামক ব্যাধিতেও আক্রান্ত হচ্ছে রাজধানীর বিপুলসংখ্যক মানুষ। যানজটে নগরবাসীর প্রাত্যহিক জীবনযাত্রাও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণও বাড়ছে দিন দিন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায়, যানজটের কারণে বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সাম্প্রতিক এক গবেষণা রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, রাজধানী ঢাকায় যানজটের কারণে দিনে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। গত ১০ বছরে যানচলাচলের গড় গতি প্রতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত নেমে এসেছে। যা পায়ে হেঁটে চলার গড় গতি (৫ কিলোমিটার) থেকে একটু বেশি। বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশ বৃহত্তর ঢাকায় বাস করে। ঢাকা এখন হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর অন্যতম। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই ঢাকার শহরায়ন সম্প্রসারণে যথাযথ ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। গত বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ২০৩৫ সালে ঢাকার উন্নয়ন শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত 'টোয়ার্ডস গ্রেট ঢাকা: এ নিউ আরবান ডেভেলপমেন্ট প্যারাডাইম ইস্টওয়ার্ড' শীর্ষক খসড়া প্রতিবেদনে এসব তথ্য উলেস্নখ করা হয়েছে। যানজটের কারণে বিপুল পরিমাণ জ্বালানিরও অপচয় হয়। কিন্তু এ থেকে পরিত্রাণের যেন কোনো উপায় নেই। বিভিন্ন সময়ে নানামুখী কর্মসূচি-পরিকল্পনা হাতে নেয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়েছে খুবই কম। ফলে সমস্যা যে তিমিরে ছিল সেখানেই রয়ে গেছে। অথচ দুর্বিসহ যানজটের জন্য পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতার অভাবকেই দায়ী করা হয়। রাজধানীতে দিন দিন জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে গাড়ি-ঘোড়া। কিন্তু সে তুলনায় রাস্তাঘাট বাড়ছে না। রাজধানীতে রাস্তার তুলনায় প্রায় ৩ লাখ যানবাহন বেশি চলছে। এ ছাড়া প্রতিদিন গড়ে ২৩০টি নতুন গাড়ি রাস্তায় নামছে। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী যে কোনো শহরে মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ যান চলাচলের জন্য রাস্তা থাকা আবশ্যক। ঢাকা শহরের মোট আয়তন ৮১৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। এ হিসেবে ২০৪ কিলোমিটার রাস্তার প্রয়োজন হলেও ঢাকা শহরে প্রধান রাস্তার পরিমাণ মাত্র ৮৮ কিলোমিটার। এই পরিমাণ রাস্তায় ৫ লাখ যানবাহন চলাচল করছে। অথচ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী এই পরিমাণ রাস্তায় ২ লাখ ১৬ হাজার যানবাহন চলাচল করার কথা। এর ফলে যানজট এক অনিবার্য বাস্তবতা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ট্রাফিকব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ না করায় যানজট থেকে মুক্তি পাচ্ছে না রাজধানীবাসী। যানজট নিয়ন্ত্রণে কঠোর ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ, প্রাইভেট গাড়ির ওপর নিয়ন্ত্রণ, যত্রতত্র পার্কিং নিষিদ্ধ করা, রেল যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, নদীপথ এবং ঢাকার ভেতরের খাল দখলমুক্ত করে নৌপথের উন্নয়ন করা, রিকশামুক্ত সড়কসহ নানা পরিকল্পনার কথা বলা হয়। কিন্তু এগুলো নিয়ে কথাবার্তা যতটা হয় কাজ ততটা হয় না যে তা যানজটের বর্তমান হালই বলে দিচ্ছে। কিন্তু যানজট এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে যে, এ থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যানজট বর্তমান নগরবাসীকে স্থবির ও অচল করে রেখেছে। এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে এর সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক ফলাফল হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। এজন্য পরিবহণ খাতে একটি স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এজন্য অবকাঠামো, সুশাসন অযান্ত্রিক পরিবহণ, পরিবহণের পরিদর্শন ও ব্যবস্থাপনা, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। পরিবহণ সেক্টরে নৈরাজ্য বন্ধ এবং একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন বিআরটিসিকে সত্যিকার অর্থে সচল করতে হবে। সত্যি বলতে কি ঢাকার গণপরিবহণব্যবস্থায় এক অরাজক অবস্থা বিরাজ করছে। জীর্ণশীর্ণ বাসগুলো সিটিংয়ের নামে 'চিটিং' করছে যাত্রীদের সঙ্গে। ব্যস্ত সময়ে লোকাল বাসগুলোও হয়ে যাচ্ছে সিটিং বাস। এতে একদিকে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে অন্যদিকে লোকাল বাসে সিটিংয়ের নামে স্বল্প যাত্রী বহন করায় শত শত যাত্রীর অপেক্ষাকে আরও দীর্ঘতর করছে তারা। মানহীন ভাঙাচোরা রংচটাবাস, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অনিয়মের বেড়াজালে যাত্রীদের বন্দি করছে। সেবা নয় মুনাফাই এদের আসল উদ্দেশ্য। এ অবস্থায় একটি গতিশীল পরিবহণব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য রাষ্ট্রায়ত্ত বিআরটিসিকে সচল করতে হবে। দেশে যদি সত্যিকার অর্থে গণপরিবহন বলে কিছু থাকত তাহলে বেসরকারি বাসমালিকরা যে এই নৈরাজ্যকর অবস্থা তৈরি করতে পারত না সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, গণপরিবহণব্যবস্থা গড়ে উঠতেও এই চক্র প্রবল বিরোধিতা করে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ সংস্থার (বিআরটিসি) বাস চলাচলেও চরম অসহযোগিতা করে পরিবহন খাতে একচেটিয়া প্রাধান্য বজায় রাখছে বেসরকারি পরিবহন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে যাত্রী ভোগান্তির কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। অন্যদিকে বিআরটিসি নিজেও যেন ধুঁকে ধুঁকে মরছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানটি চরম অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে ক্রমাগত লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বিআরটিসি বিকল্প পরিবহণব্যবস্থা হিসেবে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জনসাধারণের ভোগান্তি বেড়েছে। একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় বেসরকারি পরিবহণ মালিকরা ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে। পরিবহণ খাতকে নানাভাবে জিম্মি করে রাখছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিআরটিসিকে সচল করার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু কাজটি যে অতটা সহজ নয় তা তো এর আগের ঘটনাপ্রবাহ থেকেই পরিষ্কার। বিআরটিসিকে কোণঠাসা করতে বেসরকারি পরিবহন মালিকরা একাট্টা। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উত্তরাঞ্চলে বিআরটিসির সার্ভিস চালু হলে ওই অঞ্চলের মানুষজনের কাছে তা ব্যাপক সমাদৃত হয়। কিন্তু বেসরকারি পরিবহণ মালিকদের তা চক্ষুশূলের কারণ হয়। তারা জনপ্রিয় এ সার্ভিস বন্ধে নানা ধরনের তান্ডব চালায়। এমনকি ধর্মঘট ডেকে অচলাবস্থা সৃষ্টি করে। অবশেষে সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। অথচ ১৯৬১ সালের অধ্যাদেশ বলে রাষ্ট্রীয় পরিবহণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিআরটিসির বাস দেশের যে কোনো স্থানে চলাচলের অধিকার রাখে। সরকার দেশে স্বল্পমূল্যে দ্রম্নত, দক্ষ, আরামপ্রদ, আধুনিক ও নিরাপদ সড়ক পরিবহণব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ৮০'র দশকে বিআরটিসি বাস সেবা চালু করে। কিন্তু এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির পেছনে নানা কুচক্রী মহলের দৃষ্টি পড়ে। ২০০৪ সালে তৎকালীন জোট সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী বেসরকারি পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে এক চুক্তি করেন। পরে এই চুক্তির দোহাই দিয়ে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন রুট থেকে বিআরটিসির বাস উঠিয়ে দেয়া হয়। রাজধানীতেও বিআরটিসির পরিবহণ সেবা ক্রমে ক্রমে সীমিত হয়ে আসছে। যদিও প্রতিটি সরকার এসেই নতুন করে বিআরটিসিকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করে। বর্তমান সরকারও বেশ কয়েক দফা বিআরটিসির নতুন বাস রোডে নামায়। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই অজানা কারণে বাসগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে। বাসে সামান্য ত্রম্নটি দেখা দিলেই তা মেরামত না করে বন্ধ করে দেয়া হয়। বাস মেরামতের চেয়ে নতুন বাস কেনার দিকেই আগ্রহ বেশি বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের। এতে টুপাইস কামানো যায়। তা ছাড়া গণহারে লিজ দেয়ার ফলেও বিআরটিসিতে চলছে যাচ্ছে তাই কারবার। আসলে মুক্ত বাজারের নামে বেসরকারি পরিবহণ মালিক শ্রমিকরা এখন পরিবহণ খাতকে জিম্মি করে ফেলেছে। রাজধানীতে প্রায় ২২ হাজার ছোট-বড় বাস চলে। এসবের মালিক মাত্র ২ হাজার জন। দেখা যাচ্ছে অল্প কিছু মানুষ রাজধানীর সামগ্রিক পরিবহণব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অবস্থা থেকে উদ্ধার পেতে হলে বিআরটিসিকে সচল করার কোনো বিকল্প নেই। সারা দেশে বিআরটিসির বাস চলতে দিতে হবে প্রয়োজনীয় সংখ্যায়। বিশেষ করে রাজধানীতে বাসের সংখ্যা বাড়ানো একান্ত অপরিহার্য। জনস্বার্থে বিআরটিসিকে সচল করা এবং একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক প্যারালাল গণপরিবহণব্যবস্থা গড়ে তোলাই এখন সময়ের দাবি। সরকারকে মনে রাখতে হবে মুষ্টিমেয় লোকের দুর্নীতি, লোভ ও লাভের কারণে গণপরিবহণের নৈরাজ্য আমাদের নিয়তি হতে পারে না। ঢাকার রাস্তায় একই সঙ্গে চলছে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটো, রিকশা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ফলে এক জগাখিচুড়ি অবস্থার কারণে যানজট এখানে নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য একটি সুসমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো প্রয়োজন। সড়ক পথের উন্নয়নের পাশাপাশি ঢাকার চারপাশের নৌপথগুলো চালু করা দরকার। \হনৌপথে যাতায়াত অপেক্ষাকৃত সস্তা এবং স্বস্তিদায়কও বটে। এজন্য বুড়িগঙ্গা, তুরাগসহ অন্য নদীগুলোর দখল দূষণ বন্ধ করতে হবে। ঢাকার খালগুলো পুনরুদ্ধার করে সেগুলোতেও নৌরুট চালু করা যায়। এ ছাড়া মেট্রো রেল চালু করেও রাজধানীর গণপরিবহণের চাহিদা অনেকটাই মেটানো সম্ভব। গণপরিবহণের অব্যবস্থাপনা এবং যানজট দূর করে স্থবির ঢাকাকে বদলে না দিতে পারলে দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। ভিশন ২০২১-এর কথা বলা হচ্ছে খুব জোরেশোরে। কিন্তু একটি দেশের প্রাণকেন্দ্র রাজধানীকে অচলাবস্থায় রেখে তা আদৌ সম্ভব। এ কারণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এবং তা অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে। ড. হারুন রশীদ: সাংবাদিক, কলামিস্ট