বাজারে বাতিল ওষুধ

কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ। ফলে জনসাধারণের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করাই যেখানে একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের বিষয়, সেখানে যদি বাতিল ওষুধে বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে তবে তা আমলে নেয়ার বিকল্প থাকতে পারে না। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার সৃষ্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, সম্প্রতি বেশকিছু ওষুধের নিবন্ধন বাতিল করেছে সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে চারটি অ্যান্টিবায়োটিক, তিনটি অ্যানোসথেটিক, পাঁচটি অ্যান্টিসাইকোটিক, ৬১টি ভিটামিন কম্বিনেশন ও নয়টি ইলেক্ট্রোলাইট কম্বিনেশন রয়েছে। কিন্তু নিবন্ধন বাতিলের পরও বেশিরভাগ ওষুধ এখনো উৎপাদন ও বাজারজাত করছে কোম্পানিগুলো। আমরা বলতে চাই, ওষুধের নিবন্ধন বাতিল করার পরও সেসব ওষুধ যদি বাজারে পাওয়া যায়, তবে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যত দ্রম্নত সম্ভব এর পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য মতে, গত ৩০ এপ্রিল 'ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি'র ২৫০তম সভায় ৮২টি ব্র্যান্ডের ওষুধের কম্বিনেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সই করা ওই আদেশ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি গত ৭ মে প্রকাশ করা হয়। এতে মোট ৪১টি ওষুধ (জেনেরিক নাম অনুসারে) নিষিদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে অন্তত ২০টি ওষুধ (জেনেটিক নাম অনুসারে) এখনো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, এমনকি উৎপাদনও হচ্ছে। এগুলো আরও দুই থেকে তিন বছর বাজারে পাওয়া যাবে, সংশ্লিষ্টরা এমনটিও জানিয়েছেন। তবে উলেস্নখ্য যে, এ প্রসঙ্গে এমন বিষয়ও সামনে এসেছে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নতুন করে উৎপাদন করার কথা নয়। এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দুই মাস পরও ওষুধগুলো নতুন করে উৎপাদন করা হয়েছে, যার মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিতে হবে। এমনিতেই চিকিৎসা ব্যয়সহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ আছে, এ ছাড়া রোগীর তুলনায় চিকিৎসক ও সরঞ্জাম সংকটের বিষয়ও আলোচিত হয়। আবার যদি বাতিল ওষুধে বাজার সয়লাব হয়ে যায়, তবে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া অপরিহার্য। আমলে নেয়া দরকার, এমন অভিযোগও উঠে এসেছে যে, যেসব ওষুধের নিবন্ধন বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে, সেখানেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর চতুরতার আশ্রয় নিয়েছে। কারণ সেখানে শুধু বলা হয়েছে, নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি যে, কবে থেকে এ ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করা যাবে না, কেউ করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অর্থাৎ এখানেও ওষুধ কোম্পানিগুলোকে সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা, ওষুধ কোম্পানিগুলো নিবন্ধন বাতিল করা এসব ওষুধ এখনো তৈরি করছে এবং তারা নানাভাবে ওষুধের বাজারে সরবরাহ করছে। বিশেষ করে অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধের অপব্যবহার বেশি এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। এ ওষুধগুলো শরীরে ক্ষতিকারক মাদকতা সৃষ্টি করে। যদিও আইনানুসারে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর এসব ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া যেগুলো বাজারে রয়েছে সেগুলোও দোকান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে ধ্বংস করতে হবে বলেও খবরে উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। বাতিল ওষুধে বাজার সয়লাব এই বিষয়টিসহ চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে কোনো ধরনের অনিয়ম রোধে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এমনটি কাম্য।