সুস্থ বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করুন

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আমাদের দেশের তরুণ সমাজের একটা বড় অংশ আজ নেশায় আসক্ত। মাদকে আসক্ত তরুণদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে নেশা জাতীয় দ্রব্যের বেচাকেনা। যৌন উত্তেজক উপকরণ ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রবের বেচাকেনা রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আসক্ত হচ্ছে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা। বিপথগামী তরুণদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এগুলো বেচাকেনা করছে এবং রাজধানীতে গড়ে উঠেছে গোপন বাজার। অনেক শিক্ষিত যুবক ও ধনীর দুলাল এখন এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানা যাচ্ছে। যুব সমাজের এ অধঃপতনের দায় সমাজ এড়াতে পারে না। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের উদাসীনতা তো আছেই, পাশাপাশি সামাজিক অবস্থাও এর জন্য দায়ী। পর্যাপ্ত বিনোদনের সুযোগ-সুবিধা না থাকায় দেশের যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। এক সময় পাড়া-মহলস্নায়, স্কুল-কলেজের সামনে বিশাল খেলার মাঠ থাকলেও এখন তা দখল করে বিল্ডিং বানানো হচ্ছে। নগরীতে খোলা জায়গা, পার্ক ও পর্যাপ্ত বিনোদনের অভাব প্রচন্ডভাবে অনুভব করছে আমাদের তরুণ সমাজ। চার দেয়ালের মধ্যে টিভি দেখে আর ভিডিও গেমস খেলে বড় হচ্ছে তারা। এতে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিপথগামী তরুণরা আমাদেরই সন্তান। এদের সুপথে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের। সর্বনাশা এ জগৎ থেকে তরুণ সমাজকে কিভাবে বের করে আনা যায় তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। মাদক ব্যবসা বন্ধে সীমান্ত পথ ও অন্যান্য রুটে সতর্ক পাহারার পাশাপাশি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশন নিতে হবে। তবে অভিযান বা আইন করে এ থেকে তরুণদের রক্ষা করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন তরুণদের সুস্থ বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা এবং তাদের সৃষ্টিশীল ও গঠনমূলক কাজে ব্যস্ত রাখা। স্কুল-কলেজ, পাড়া-মহলস্নায় ক্রিকেট-ফুটবলসহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে হবে। তরুণ সমাজকে সৃষ্টিশীল কাজে ব্যস্ত রাখার জন্য বিতর্ক ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা, রক্তদান কর্মসূচি, মুভি শো, ফুটবল-ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, স্কাউট, বিএনসিসি ও পাঠাগার কেন্দ্রিক কার্যক্রম বাড়াতে হবে। শুধু স্কুল-কলেজে নয়, প্রতিটি এলাকায় এ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। এসব আয়োজনে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা খুবই দরকার। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের মানুষের বিনোদনের চাহিদা অনেকাংশেই পূরণ করছে সে দেশে তৈরি মুভি। একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে সে দেশে মুভির মাধ্যমে বিনোদন দেয়া হচ্ছে। সে দেশের হলগুলো একেকটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আমাদের দেশে তৈরি মুভি তরুণদের বিনোদন দেয়ার বদলে বিপথগামীই বেশি করছে। আমাদের দেশের সিনেমা হলগুলোর পরিবেশ সুস্থ বিনোদনের জন্য মোটেই উপযোগী নয়। সুস্থ ধারার মুভি নির্মাণ এবং হলগুলোতে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনলে তরুণদের বিনোদনের অভাব কিছুটা হলেও দূর করা সম্ভব হবে। তরুণদের বিনোদন চাহিদা পূরণে সরকারকে এ বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগী হতে হবে। খেলাধুলা ও সুস্থ বিনোদনের পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরি হলে তরুণরা খারাপ পথ পরিহার করে সুপথে ফিরে আসবে। নোমান ভুইয়া ধানমন্ডি, ঢাকা চিকিৎসকদের মফস্বলে যাওয়া উচিত দীর্ঘদিন ধরে আমরা লক্ষ্য করে আসছি, আমাদের দেশের চিকিৎসকরা বিভিন্ন উপজেলা সদর ও মফস্বল শহরে কাজ করতে চান না। থানা সদরে/জেলা পর্যায়ে ডাক্তারদের বদলি করা হলে তারা নানা প্রকার উৎকোচ-তদবির করে তা বন্ধ করে দেন। যারা বদলি ঠেকাতে পারছেন না তারা তদবির করে ওএসডি হিসেবে ঢাকায় অবস্থান করেন। ওএসডি অর্থাৎ 'অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি' হওয়ার সুবিধা পাচ্ছেন, বসে বসে সরকারি বেতন পান। তাদের কাজ করা লাগছে না। এরই ফাঁকে চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস চেম্বারে বসেন। তারা ক্লিনিকেও প্র্যাকটিস করেন। একশ্রেণীর চিকিৎসকের বিশেষ বন্দোবস্তের ফলেই হয়েছে এ অবস্থা। ডাক্তারি যখনই পড়তে আসে তখন শপথ নেন মানুষের সেবা ও কল্যাণে সব সময়ে থাকবো। একজন চিকিৎসক হতে হলে যে টাকা ব্যয় হয়, তা সরকার বহন করে। সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে জনগণের রাজস্ব থেকে, জনগণের টাকা থেকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, জনগণের টাকায় ডাক্তার হয়ে পরে জনগণের সেবক ভুলে গিয়ে বিরাট ব্যবসায়ী হতে চায় বা হচ্ছেন। ক্লিনিক নামে লাভজনক পেশায় জড়িয়ে যান। আমরা জানি প্রত্যেক থানায় থানা কমপেস্নক্সে ৯ জন করে ডাক্তার থাকার কথা। নিয়োগ পাচ্ছেন ৯ জন, বাস্তবে কর্মদিবসে ৩/৪ ডাক্তার পাওয়া যায়। আমরা চিকিৎসকদের বলব গ্রামের রোগাক্রান্তদের নিয়ে ভাবুন। তাদের চিকিৎসার স্বার্থে গ্রামে যান। কর্তব্য ও মানবিক বোধকে বড় করে দেখুন। একিউএম মাহফুজ উলস্না (বাচ্চু) শাহজাহানপুর, ঢাকা