পাট ও চামড়াশিল্প

উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে রপ্তানি আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঙ্গত কারণেই রপ্তানির প্রধান খাতগুলোকে সামনে রেখে যেমন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে হবে, তেমনিভাবে সম্ভাবনাময় খাতের দিকেও মনোযোগী হতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, একটা সময় পাট ছিল প্রধান অর্থকরী ফসল আর চামড়াশিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি শিল্প- ফলে এই দুটি খাতসংক্রান্ত বিষয় যখন সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে, তখন সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা পাটশিল্পের রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। আমরা মনে করি এই বিষয়টি অত্যন্ত সুখকর। কিন্তু একই সঙ্গে যখন জানা যাচ্ছে যে, চামড়া খাতে ধীরগতি তো আছেই, উপরন্তু নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে ডুবে আছে এ খাতের রপ্তানি আয়। আমরা মনে করি এই বিষয় আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা জরুরি, সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাট ও চামড়া- এ দুটি খাতের পণ্যের বৈচিত্র্য আরও বেশি প্রয়োজন। এর পাশাপাশি সরকারি মহলের একাগ্রতাও চান রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা। সঙ্গত কারণেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা এবং যে বিষয়গুলো আলোচনায় আসছে তা বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সরকার সংশ্লিষ্টদেরই। রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধিতে আশার আলো দেখা গেছে। একই সঙ্গে অর্জন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রাও। তিন মাসে পাট ও পাটজাত খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছে ২২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, প্রথম তিন মাসে এ খাতের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ডলারের। গত বছরের একই সময়ে এ খাতের আয় ছিল ২১ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ডলারের। সে হিসেবে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। স্মরণ করা যেতে পারে, দেশের এক সময়ের রপ্তানি আয়ের মূল ভরসা ছিল পাট। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয় ছিল প্রায় ৩৫ কোটি ডলার যার ৯০ শতাংশ আসত এই পাট থেকে। কিন্তু গত চার দশকে তা ২ দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে। কিন্তু সম্প্রতি যখন ধুঁকতে থাকা এই খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে তখন তা আশাব্যঞ্জক। কিন্তু পাটশিল্পে উন্নতি হলেও কমেছে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি- এই বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। গত তিন মাসে চামড়া পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৫ কোটি ৪৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ কম। প্রবৃদ্ধিও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫.০৬ শতাংশ কমেছে। এর মধ্যে শুধু কাঁচা চামড়া রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৯ হাজার ডলার। অথচ গত বছর একই সময়ে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল ৪ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আমরা মনে করি, যে তথ্য সামনে এলো এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে উদ্যোগী হতে হবে। পাটশিল্পকে আরও এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি চামড়াশিল্পের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নও নিশ্চিত করতে হবে।