জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে আইএমএফের পূর্বাভাস

কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হবে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তথ্য মতে জানা যায়, আগামী অর্থবছরে (২০২০-২১) ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ করেছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার প্রকাশিত আইএমএফের 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক' শীর্ষক প্রতিবেদনে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, চীন-মার্কিন বাণিজ্য বিরোধের প্রভাব পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতেই পড়ছে। মন্দার পর বর্তমান সময়ে বিশ্ব সবচেয়ে ধীর গতিতে এগুচ্ছে। বাণিজ্যবিরোধ বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী নতুন বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আইএমএফ বলছে, চলতি বছর শেষে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হতে পারে মাত্র ৩ শতাংশ। যা ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হবে। আমরা বলতে চাই, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি নিয়ে আইএমএফের পূর্বাভাস আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর উদ্যোগ জারি রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। উলেস্নখ্য যে, বিশ্ব অর্থনীতির হালনাগাদ প্রতিবেদন 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক'-এ অর্থনীতিতে নানা আশঙ্কা সত্ত্বেও উদীয়মান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়বে বলে আশা করছে আইএমএফ। ফলে এটিকে সামনে রেখেও নিজেদের করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক তাদের পূর্ভাবাস প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। যদিও সরকার বাজেটে আশা করছে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেয়া সমীচীন, আইএমএফের প্রতিবেদনে এটা স্পষ্ট যে, উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে প্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশের। পূর্বাভাস অনুযায়ী ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ, নেপালের ৭ দশমিক ১ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ২ দশমিক ৭ শতাংশ, ভিয়েতনাম সাড়ে ৬ শতাংশ। এ ছাড়া এমন বিষয়ও সামনে এসেছে, প্রতিবেদনে বিশ্ব অর্থনীতির গতি কমে যাওয়ার পেছনে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কমে যাওয়াকে অন্যতম কারণ বলা হয়েছে- যদিও বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের রপ্তানি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবু এই বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক পদক্ষেপ জারি রাখা আবশ্যক বলেই আমরা মনে করি। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটা ভালো অবস্থায় রয়েছে- কিছুদিন আগে এই বিষয়টি বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরও জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া আলোচনায় এসেছিল যে, ভালো অবস্থা ধরে রাখতে হলে শুধু পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। সেই সঙ্গে অন্যান্য খাতকেও শক্তিশালী করতে হবে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, এই বিষয়গুলো সামনে রেখেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। সর্বোপরি, এটা লক্ষণীয় এপ্রিলের পূর্বাভাসের চেয়ে কমিয়ে অক্টোবরের পূর্বাভাস দেয়া হলো। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আইএমএফ বলছে, ২০০৭-২০০৮ সালে শুরু হওয়া বিশ্বমন্দার পর এটি সবচেয়ে কম অগ্রগতি। সংস্থাটির ভাষ্য, বাণিজ্য শুল্ক এবং ভূ-রাজনীতির কারণে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে আমাদেরও সচেতন থাকতে হবে এবং লক্ষ্যপূরণে কাজ করতে হবে। এটা মনে রাখা সমীচীন- দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে অর্থনীতির অগ্রগতির কোনো বিকল্প নেই। দেশের পোশাক খাতের পাশাপাশি অন্যান্য খাতগুলো শক্তিশালী করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা বজায় রাখতে হবে। আইএমএফের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ জারি রাখুক এমনটি কাম্য।