বুয়েটে অপশক্তি রুখে দেয়ার প্রত্যয়

সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত হোক

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হবে এমনটি জরুরি। কেননা, যদি আধিপত্য বিস্তারের মহড়াকেন্দ্রে পরিণত হয়, কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হত্যা, অন্যায় বা নানা ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে তবে তা কতটা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি যখন এমন বিষয় জানা গেল যে, সব ধরনের সন্ত্রাস, অন্যায় ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখে দেয়ার শপথ নিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা, পাশাপাশি সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার সমূলে উৎপাটন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা- তখন বিষয়টি ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করবে, যে কোনো ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে- এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা সার্বিক অর্থেই সুখকর। তথ্য মতে জানা গেছে, বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে বুয়েট মিলনায়তনে এই শপথ অনুষ্ঠান হয়। বুয়েটের ভিসি, বিভিন্ন হলের প্রভোস্টও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শপথ নেন। প্রসঙ্গত বলা দরকার, আবরার হত্যার বিচার দাবিতে মাঠের কর্মসূচি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়ে শপথ গ্রহণ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, শপথে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কল্যাণ ও নিরাপত্তার নিমিত্তে আমার ওপর অর্পিত ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক, নৈতিক ও মানবিক সব ধরনের দায়িত্ব সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব।' এ ছাড়া নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান সম্মিলিতভাবে রুখে দেয়া, নৈতিকতার সঙ্গে ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার সমূলে উৎপাটন করার বিষয়েও শপথ নেয়া হয়। শপথে এটাও বলা হয়, বুয়েটের আঙ্গিনায় আর যেন নিষ্পাপ কোনো প্রাণ ঝরে না যায়, আর যাতে কেউ অত্যাচারিত না হন, সেটা সবাই মিলে নিশ্চিত করবেন। আমরাও মনে করি, যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় শিক্ষার্থীদের জ্ঞাতসারে হওয়া প্রতিটি অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সবাই সর্বদা সোচ্চার থাকেন তবে তা আশাব্যঞ্জক। কেননা, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে, শিক্ষার যথাযথ মান নিশ্চিত হবে, শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবেন এমনটি সবাই প্রত্যাশা করে। কেউ যদি অন্যায়ের শিকার হন, পড়তে এসে ঘরে ফিরে যায় তার লাশ, কিংবা নানা ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ে তবে তা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। উলেস্নখ্য, আবরার ফাহাদ খুনের পর থেকেই বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ। ফাহাদের মৃতু্যর পর থেকেই বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে টানা আন্দোলন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। আমরা মনে করি, শপথ গ্রহণের যে বিষয়টি সামনে এলো- সেটি আমলে রেখে প্রত্যেকে নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হোক এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন সামগ্রিকভাবে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ বজায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের তৎপর থাকতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন সময়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস অশান্ত হয়েছে। দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এই পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যাদের হাতে রচিত হবে দেশের আগামী দিন, তারা যদি সঠিক পরিবেশ না পায় তবে তা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ ও উৎকণ্ঠার। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সবসময় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবেন এমনটি কাম্য।