পাঠক মত

চট্টগ্রামের বঁাশখালীর ৯টি ইউনিয়নের সমস্যা ও কিছু কথা

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

এস এম ফরিদুল আলম চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম জেলার বঁাশখালী উপজেলার উপক‚লীয় প্রায় ৯টি ইউনিয়নের ৪ লাখ জনগণ প্রতিনিয়ত বঙ্গোপসাগর ও শঙ্খ নদীর সঙ্গে যুদ্ধ করেই বেঁচে আছে। ৯১ এর ২৯ এপ্রিল থেকে দীঘর্ আড়াই যুগের অধিককাল পযর্ন্ত একাধিক মহাপ্রলয়ঙ্কারী ঘূণির্ঝড় জলোচ্ছ¡াসে উপক‚লীয় ১৩ ইউনিয়নের মধ্যে অধিকাংশ ইউনিয়নের জনগণ বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৯৬০ সালের পর দীঘর্ ৫৮ বছরের মধ্যে সরকার উপকূলবাসীর জানমাল রক্ষাথের্ উপকূলীয় বেড়িবঁাধ নিমাের্নর কাজ জনস্বাথের্ শুরু করেন বটে ৯১ এর ২৯ এপ্রিলের প্রচন্ড ঘূণির্ঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে সমগ্র উপকূলীয় এলাকার বেড়িবঁাধ মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। ঘূণির্ঝড়ের পর সরকার আবারো বিধস্ত বেড়িবঁাধের সংস্কার কাজে হাত দেন। বতর্মানে প্রকল্পের কাজ নাকি পাউবোর মতে ৭২ শতাংশ শেষ হয়েছে। দঃখের বিষয় শঙ্খ নদীর নি¤œমানের লবণ মিশ্রিত বালি ব্যবহার করায় বøকগুলো টেকসই হয়নি। ফলে প্রেমাশিয়া, মৌলভিপাড়া কদম রসুল এলাকায় বেড়িবঁাধ ডেবে যায়। নি¤œমানের বালি, পাথর, সিমেন্ট দিয়ে বøক বানানো হয়েছে। কাজের মান সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে মান বজায় রেখে কাজ শেষ করার জন্য এলাকাবাসী সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন। অবিলম্বে পুকুরিয়া ইউনিয়নের বরুমচড়া, তেচ্ছি পাড়া, ও উত্তর পুকুরিয়া এলাকার ভাঙ্গন রোধের জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা করা। উত্তর পুকুরিয়া ও তেচ্ছিপাড়া এলাকাকে পাউবোর আওতাভুক্ত করে বিশেষ বিবেচনায় মানবিক কারণে তড়িৎ ভাঙ্গন রোধ করে নিরীহ অসহায় জনগণের জানমাল রক্ষা করার জন্য ঊধ্বর্তন কতৃর্পক্ষের কৃপাদৃষ্টি কামনা করছি। বঁাধের তলদেশ ১৫০ ফুট, দৈঘর্্য উপরের প্রস্থ ১৪ ফুট ও উচ্চতা ১৮ ফুট করার কথা রয়েছে। বঁাশখালীর ৫৮ বছরের নিরীহ জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্থায়ী এ বেড়িবঁাধটি কোনো ত্রæটি ছাড়ায় কাজের সমাপ্তির আশা করছে নিরীহ সাধারণ জনগণ এবং বঁাধ নিমার্ণ কাজ চলার প্রেক্ষিতে গত বছরে বেশ কিছু বন্যায় উপক‚লীয় এলাকায় বঙ্গপসাগরের সামুদ্রিক লবণাক্ত জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেয়েছে। অপরদিকে ৩নং খানখানাবাদ ইউনিয়ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। অত্র ইউনিয়ন আয়তনে ১০২৮ বগর্ মাইলজুড়ে ৪টি গ্রাম নিয়ে তথা ডোংরা কদমরসূল, প্রেমাশিয়া, রায়ছটা। এ উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হলেও তৎমধ্যে সবচেয়ে পশ্চাদপদ, উপেক্ষিত ও অবহেলিত ৩নং খানখানাবাদ ইউনিয়ন। এই ইউনিয়ন বঁাশখালী জেলার উত্তর পশ্চিমমাংশে অবস্থিত। রায়ছটা ঈশ্বরবাবুর হাট হতে প্রেমাশিয়া নয়াহাট পযর্ন্ত উপক‚লীয় সংযোগ সড়কটি ৩নং খানখানাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা ছাড়াও পুরো ৩৭ কিলোমিটার ব্যাপী উপক‚লীয় এলাকা, বাহাড়ছড়া, রতœপুর, গন্ডামারা, ছনুয়া, সরল, পাশ্ববতীর্ ২নং সাধনপুর ইউনিয়নের জন্য উপক‚লীয় জনগুরুত্বপূণর্ সংযোগ সড়ক বিধায় দুযোর্গ চলাকালীন সময়ে যাতায়তের অতিব জরুরি যোগাযোগ মাধ্যম। তাছাড়াও এতদাঞ্চলের জনগণ প্রতিনিয়ত শহরে গমনাগমন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাটবাজার ১৫ কি.মি. দূরে অবস্থিত জলদি উপজেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা সদরে বিভিন্ন জরুরি কাজে যাতায়াত করে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য কোমলমতি শিক্ষাথীর্, মুমূষুর্ রোগী পরিবহন ও চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। বিশেষ করে এই রাস্তা দিয়ে বঁাশখালীর ঐতিহ্যবাহী খ্যাতিমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান হওয়াতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার ছাত্র- ছাত্রীকে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে যাতায়ত করতে হচ্ছে। দুযোর্গপূণর্কালীনে উপকূলীয় এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হলো এই উপকূলীয় এলাকার সংযোগ সড়কটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূণর্ বিধায় অনতিবিলম্বে তড়িৎ আশু সংস্কার অপরিহাযর্ হয়ে দঁাড়িয়েছে। রাস্তাটির কিছু অংশ কাদামাটি আবার কিছু অংশ ব্রিক সলিং উঠে গিয়ে দীঘির্দন ধরে বড় বড় গতের্র সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল ও পথচারীদের আবণর্নীয় দুভোের্গর মধ্য দিয়ে পথ চলতে বাধ্য হচ্ছে। সেই ২৯ এপ্রিলের ঘূণির্ঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে উপক‚লীয় বেড়িবঁাধ বিধ্বস্ত হওয়ার পর কতিপয় স্বাথাের্ন্বষী গোষ্ঠীর অবহেলার কারণে ক্রমেই চরম ঝুঁকিপূণর্ অবহেলিত প্রাকৃতিক দুযোর্গ বন্যা ও নদী ভাঙনকবলিত একটি জনপদে পরিণত হয় এলাকাটি। বঁাশখালী উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হলেও উক্ত ইউনিয়নের উক্ত রাস্তাঘাটগুলোর উন্নয়নের কোনো হদিস দীঘর্ ৩০ বছরেও মিলছে না। বতর্মানে আনন্দভ্রমণ বা পিকনিট স্পটের বিকল্প হিসেবেও পযর্টকরা বেঁচে নিয়েছে এ সমুদ্রসৈকতকে। প্রেমাশিয়ার আশেপাশে কোন বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় না থাকাতে এবং যাতায়াতের ভোগান্তির কারণে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষাথীর্রা স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে। এতে ঝড়ে পড়ার সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি শিক্ষা প্রবৃদ্ধির হারও আশঙ্কাজনক ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। তাই অবিলম্বে জনস্বাথের্ রাস্তাগুলো জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা হোক।