গুজব ও অপ্রীতিকর ঘটনা

বাংলাদেশের কয়েকটি স্থানে অনুরূপ অনেক ঘটনা ঘটেছে। সমাজে দুর্বল শক্তির অধিকারী ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা, তা তারা যে কোনো ধর্মবিশ্বাসীই হোক না কেন- মিথ্যা এক পোস্টকে কেন্দ্র করে তাদের ওপর সদলবলে আক্রমণ করে জানান দিচ্ছে, সংখ্যালঘুরা এ দেশের অনাকাঙ্ক্ষিত বাসিন্দা।

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

রণেশ মৈত্র
গত ১২ অক্টোবর ঢাকা থেকে কলকাতা এসেছি মাসখানেকের জন্য। কলকাতায় এলাম প্রায় ১১ বছর পর। বয়সটা তো অনেক ভারি হয়ে গেল। বাঁচব হয়তো ১০০ বছর; বাকি আছে ১৪ বছর। তবুও তো বলা যায় না কখন কী হয়। তাই শেষ মোলাকাত করতে আমার উদ্দেশ্য এবারের আসা। দেশে ফিরে কলকাতা নিয়ে লিখব আশা রাখি- যদি লেখার মতো তেমন কোনো উপাদান পাই। সঙ্গে এনেছি ল্যাপটপ। তাই অভ্যেসবশত ভোরে উঠেই চায়ের পেয়ালা হাতে নিয়ে ইন্টারনেটে দেশের পত্রিকাগুলোর দিকে চোখ বুলাই। দেখি নানা খবর- কিন্তু ভালো খবরের সাক্ষাৎ কদাপিই মেলে। কিন্তু নতুন নয় যদিও, ২১ অক্টোবরের পত্র-পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত একটি খবরে মনটা প্রচন্ডভাবে ভারাক্রান্ত হলো। যেন মনে করিয়ে দিল পাকিস্তান আমলের বা পাকিস্তানপূর্ব যুগের উন্মত্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কথা। ঘটনাটি ভোলার। বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত একটি জেলা। তার দক্ষিণে বিশাল বঙ্গোপসাগর। ইলিশের দেশ বলেও পরিচিত-বৃহত্তর বরিশালের একটি অংশ হিসেবে। সেখানকার ঘটনা সম্পর্কে একটি প্রাচীন দৈনিকে প্রকাশিত বিবরণ নিম্নরূপ- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হজরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে আপত্তিজনক পোস্ট দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ ও স্থানীয় মুসলিস্নদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হলে স্কুল ও মাদ্রাসার ছাত্রসহ চারজনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শতাধিক মুসলিস্ন রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন। মুসলিস্নদের ইট-পাটকেলে পুলিশের ১০ সদস্যও গুরুতর আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে জেলাজুড়ে এক থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এদিকে এ ঘটনার পর বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনা তদন্তে জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্যের এক কমিটি হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহতদের প্রতিবাদে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের ব্যানারে জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। জেলা পুলিশ সুপার পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান, শুভ নামের এক হিন্দু ছেলের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কটূক্তি করার বিষয়ে পুলিশ অনুসন্ধান করে কয়েকজনকে আটক করেছে। বিষয়টি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি জানানো হলে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করবে না বলে জানায়। এরপরও সমাবেশ শুরু করে একটি গ্রম্নপ। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সমাবেশ হয়। কিন্তু শেষে উত্তেজিত বিক্ষুব্ধ কিছু লোক পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এমন পরিস্থিতির মুখে পুলিশ সুপারসহ পুলিশ কর্তকর্তারা ঈদগাহ মসজিদের একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। ওই কক্ষেও হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের গুলি ছুড়ে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা ওই কক্ষের দরজা-জানালা ভেঙে ফেলতে থাকে। বাধ্য হয়ে পুলিশ কয়েকটা ফাঁকাগুলি করে। তিনি জানায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছেন- মিজানুর রহমান, মাহফুজ পাটোয়ারী, শাহীন ও মাহবুব পাটোয়ারী। \হজেলা প্রশাসক জানান, সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ৪। ভোলা ও বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে তাদের লাশ নেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খুলনা থেকে চার পস্নাটুন বিজিবি আনা হয়। বিকেল ৫টার মধ্যে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে। তখন পুলিশ ওর্ যাব মোতায়েন ছিল। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভোলা জেলা শাখার নেতা মাওলানা মীজানুর রহমান ভোলা হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালায়। তিনি দোষীদের বিচার দাবি করেন এবং পরে ওই ঘটনার বিরুদ্ধে বিকেলে আরও একটি সমাবেশও করেন। ঘটনার সূত্রপাত : পুলিশ জানিয়েছে, বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোবাগঞ্জ বাজারের বিপস্নব চন্দ্র বৈদ্য নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ১৮ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা সম্পর্কে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্ট বিপস্নবের বন্ধুদের অ্যাকাউন্টেও পাঠানো হয়। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিপস্নব ওইদিনই বোরহানউদ্দিন থানায় একটি জিডি করে (নং-৪৪০)। জিডিতে উলেস্নখ করা হয়, তার নিজস্ব 'বিপস্নব কুমার শুভ' নামের আইডিটি অজ্ঞাত এক ব্যক্তি হ্যাক করে। তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে আইডি হ্যাক করে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আজেবাজে পোস্ট ছড়িয়ে নানা মন্তব্য করা হচ্ছে। ১৮ অক্টোবর বিকেল ৫:২৪ মিনিটে অজ্ঞতনামা এক ব্যক্তি ০১৮৫৯৫৭৮৮০৪ নম্বর থেকে তাকে ফোন করে তার ফেসবুক আইডি ফেরত নেবে কিনা- জানতে চায়। এ সময় হ্যকার তার সঙ্গে ১০ মি. কথা বলে। পরে সে অপর একটি নম্বর থেকে ফোন করে জানায় আইডিটি ফেরত নিতে হলে দুই হাজার টাকা দিতে হবে। ওই জিডি তদন্তের জন্য এক এসআইকে দায়িত্ব দিলে তিনি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আইডি হ্যাক করার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আটক করেন। তাকে আটক করে বোরহানউদ্দিন থানায় আনার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আলেম সমাজের উপস্থিতিতে জেলার পুলিশ কর্মকর্তারাও সেখানে আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় এমন বিষয়ে তারা কোনো সমাবেশ করবেন না। কিন্তু ১৯ অক্টোবর ঈদগাহে জনসমাবেশে ১৩টি মাইক স্থাপন ও মঞ্চ প্রস্তুতিকালে পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। বেলা ১১টার দিকে উত্তেজিত জনতা পুলিশের প্রতি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে এবং ঘটনাবলির জেরে পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি চালালে ৪ জন নিহত হন। পুলিশ ও বহুসংখ্যক লোক আহত হয়। বিপস্নব পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে নিজ বাড়িতে গিয়ে সেখানেও বিপুলসংখ্যক উত্তেজিত মুসলিস্নকে দেখে থানায় এসে নিরাপত্তা দাবি করলে পুলিশ তাকে কাস্টডিতে নেয়। পরে তাকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সর্বশেষ পরিস্থিতি হলো, ওই তথাকথিত মুসলিস্নরা রাসুলকে নিয়ে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে বিপস্নবের ফাঁসির দাবিতে এবং দায়ী পুলিশদেরও কঠোর শাস্তির দাবি করে ২২ তারিখে আবারও সমাবেশের ঘোষণা দেন। অবশ্য সর্বশেষ জানা গেছে ওই সমাবেশটি হয়নি। যাই হোক, বাংলাদেশের কয়েকটি স্থানে অনুরূপ অনেক ঘটনা ঘটেছে। সমাজে দুর্বল শক্তির অধিকারী ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা, তা তারা যে কোনো ধর্মবিশ্বাসীই হোক না কেন- মিথ্যা এক পোস্টকে কেন্দ্র করে তাদের ওপর সদলবলে আক্রমণ করে জানান দিচ্ছে, সংখ্যালঘুরা এ দেশের অনাকাঙ্ক্ষিত বাসিন্দা। নইলে ধরেই নেওয়া যায়, পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে যে সব জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত থেকে কোনো প্রতিবাদ সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নেন- তারা নিশ্চয়ই ধর্মনিরপেক্ষ দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা। সমাবেশ তাদের অসম্মতিতে ঘটানো হয়েছিল তেমনটিও ভাবা যায় না। কারণ তা যদি হতো তবে আওয়ামী লীগ বা ওই তথাকথিত জনপ্রতিনিধিরাও বিক্ষুব্ধ মুসলমান, বৌদ্ধ-খৃস্টান সবার কাছ থেকে ভোট নিয়েই নির্বাচিত হলেও তার প্রতিবাদে কোনো সমাবেশ মিছিল করলেন না কেন? তাহলে তাদের দায়বদ্ধতার প্রমাণ কী? মুখে জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে ফেনা তুললেই যে জয়বাংলার বা বঙ্গবন্ধুর লোক হয় না তা আজ বুঝবার সময় এসেছে। পুলিশের ভূমিকা- সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু হয়তো পুলিশ আরও বেশি যৌক্তিক ও আইনি ব্যবস্থা নিতে পারতো যদি ঘটনার পেছনে সরকারি দলের মদদ না থাকতো। অভিযোগকারী নির্দোষ বিপস্নবকে গ্রেপ্তারই বা করা হলো কেন? বাইরে রেখেও তো তার নিরাপত্তা দেওয়া যায়। আসলে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিকে বৈধতা দিয়ে শুধু আমাদের পবিত্র বাহাত্তরের সংবিধানকেই কলুষিত করা হয়নি- গোটা সমাজকে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে বিভক্ত ও বিষাক্ত করে তুলতে সহায়ক হয়েছে। এ জাতীয় ঘটনা প্রতি বছরই দু'একটা করে ঘটছে। কিন্তু কোনো ঘটনাতেই দায়ী কোনো অপরাধীকে এক দিনের জন্যও জেল খাটতে হয়নি। ফলে তথাকথিত মুসলিস্নরা দিনে দিনে দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে। আইনকে হাতে তুলে নিতে ওদের মনে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ নেই। হজরত মোহাম্মদ সম্পর্কে কটূক্তি নিঃসন্দেহে আপত্তিজনক, তবে সেটা কে আসলে করল, কেন করল- তা তো ভালো করে দেখতে হবে। সে বালাই নেই। কটূক্তি করা হয়েছে শুনেই, যদি সে হিন্দু হয় তবে মারো, কাটো, ফাঁসি দাও প্রভৃতি দাবি তুলে তবে আসল অপরাধী ওই মুসলিম যুবক বা যুবকদের প্রশ্রয়ই দেওয়া হয়। আর হাজারে হাজারে মানুষ আসবে আইন হাতে তুলে নিতে? এমন মিছিলকারীদের বিষয়ে অনুসন্ধান এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবেই প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। যুবলীগ নেতাদের প্রাক কাউন্সিল সভায় গত ২০ অক্টোবরে তিনি ভোলার ঘটনার কথা উলেস্নখ করে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হবে বলেছেন। উষ্মা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, মুসলিম ছেলে হয়েও ভোলাতে কী করে নবীজির সম্পর্কে কটূক্তি করে পোস্ট দিতে পারল? প্রধানমন্ত্রীকে আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, এক শ্রেণির মুসলমান ছেলেই এ জাতীয় পোস্ট দিয়ে থাকে কদাপি কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ বা খৃস্টান কখনো তা করেনি বা করেও না। বাংলাদেশে বা পাকিস্তানে এমন সাহস বা ইচ্ছা কোনো ধর্মবিশ্বাসী সংখ্যালঘুই পোস্ট করেন না। ঐতিহ্যগতভাবেই অতীতের কোনো কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়কার কথা বাদ দিলে, তারা ওই নীতিতে বিশ্বাসী নয় এবং মূলত এ কারণেই অপরের ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি করেন না- এটা ঐতিহাসিক সত্য। তবে সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি সব ধর্মবিশ্বাসীর মধ্যেই আছে। দাঙ্গাকালীন ঘটনার ব্যাপারেও কথা আছে। পাকিস্তানপূর্ব বা বিভাগ-পূর্বকালের দাঙ্গাগুলো ছিল দো-তরফা। হিন্দু মুসলমানকে, মুসলমান হিন্দুকে মেরেছ স্রেফ ধর্ম বিশ্বাসের কারণে। কিন্তু চিত্রপট তো পাল্টে গেছে ১৯৪৭ সালের বিভাগোত্তর কাল থেকেই। তখন থেকে দাঙ্গা বা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা যা-ই ঘটেছে তার শতভাগই একতরফা। অপরপক্ষ দুর্বল এবং শক্তি সাহসহীন- তাই। বিষয়গুলো উপলদ্ধি করে এবং সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পুনরায় গড়ে তুলতে হলে ভোলার ওই যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছে- তার বা তাদের কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। প্রকাশ্যে মাইকিং করে অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে যারা হাজার লোককে জড়ো করে ক্ষেপিয়ে তুলে এমন ভয়াবহ কান্ড ঘটাল- তাদের সব পক্ষকে কঠোরতম শাস্তির বিধান অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে করা হোক। শিক্ষা ব্যবস্থার সব গলদ অবিলম্বে দূর করে প্রাথমিক থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত সব পাঠ্যপুস্তক থেকে তাবৎ সাম্প্রদায়িক বিষয় পরিহার করা হোক এবং ধর্মনিরপেক্ষতা কাকে বলে- সে বিষয়েও সব স্তরের পাঠ্যপুস্তকে গল্প, প্রবন্ধ, কবিতাদির স্থান দিয়ে নতুন নতুন বই লিখিত ও প্রকাশিত হোক। ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিষয়। তাই রাষ্ট্রধর্ম অবিলম্বে তুলে দিয়ে অবিকল বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া হোক। ইসলাম ধর্মের অবমাননা যেমন আপত্তিকর তেমনই অপরাপার ধর্মাবলম্বীর মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা এবং নানা দেব-দেবতার মূর্তি ভাঙা, তাতে অগ্নিসংযোগ বা তার প্রতি প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে অশ্রদ্ধা গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ২০০১ থেকে আজতক এ জাতীয় যত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেগুলোর বিচার করার জন্য মুনিদৃষ্ট মোকদ্দমা দায়ের করে, বিশেষ ট্রাইবু্যলানে তাদের বিচার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এই তথাকথিত মুসলিস্ন নেতারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপকতা, শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকারদের বেকারত্ব মোচনের দাবিতে কোনোদিন কোনো আন্দোলনে নামে না, নামে না স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতেও। সব মিলিয়ে এটা প্রমাণিত যে মুক্তিযুদ্ধ আজও অসমাপ্ত। রণেশ মৈত্র: সাংবাদিকতায় একুশে পদকপ্রাপ্ত