প্রক্রিয়াজাত খাবার রপ্তানি

আয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পোশাক, চামড়া, পাট কিংবা পস্নাস্টিকে রপ্তানি আলোচিত খাত। কিন্তু কিছু খাত রয়েছে যেগুলো রপ্তানি আয়ে অপ্রচলিত। তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো রুটি, বিস্কুট, ফলের রস কিংবা চানাচুর। অথচ এগুলোতে রয়েছে আয়ের বিশাল সম্ভাবনা এমন বিষয় আলোচনায় আসছে। আর এমন সব প্রক্রিয়াজাত খাবারের রপ্তানিতে আশার আলো দেখছে বাংলাদেশ। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনার কারণে প্রক্রিয়াজাত খাবার রপ্তানি হোঁচট খাচ্ছে। আমরা মনে করি, ব্যবস্থাপনার অভাবে যদি সম্ভাবনাময় রপ্তানি আয় হোঁচট খায় তবে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক অবস্থাকেই স্পষ্ট করে- যা আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ সমীচীন। রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রক্রিয়াজাত খাবার রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ২২ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) এ খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ কোটি ডলার। এ সময়ে খাতটিতে আয় হয়েছে ৫ কোটি ৯২ লাখ ২০ হাজার ডলার। গত বছর একই সময়ে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল ৭ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ডলার। অর্থাৎ সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় আয় কমেছে ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেয়া জরুরি যে, রপ্তানিকারকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য তো আছেই বরং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোও এখন বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাত খাবার নিচ্ছেন। বিশেষ করে ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশে এসব পণ্যের বাজার বাড়ছে। এ ছাড়া আফ্রিকার কয়েকটি দেশের মতো ইউরোপের বাজারেও রপ্তানি বাড়ছে। রপ্তানি আয়ের বড় খাত হয়ে উঠছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য। ইপিবির তথ্য হালনাগাদেও দেখা যায়, গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের মধ্যে বেশি রপ্তানি হয় রুটি, বিস্কুট ও চানাচুরজাতীয় শুকনা খাবার, ভোজ্যতেল ও সমজাতীয় পণ্য, ফলের রস, বিভিন্ন ধরনের মসলা, পানীয় এবং জ্যাম-জেলির মতো বিভিন্ন সুপার কনফেকশনারি। যেমন বিস্কুট, রুটিজাতীয় শুকনা খাবার রপ্তানি করে সর্বশেষ অর্থবছরে দেশীয় কোম্পানিগুলো ২২ কোটি ৭০ লাখ ডলার আয় করেছে- যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। আমরা বলতে চাই, সম্প্রতি যখন এমন বিষয় সামনে আসছে যে, খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন- রপ্তানির অর্ডার কমেছে। সঙ্গে সঙ্গে পণ্যের মূল্যও কমেছে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত সমস্যা, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন না করা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন কারণে রপ্তানি বাণিজ্য কমে গেছে এবং রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে হলে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে তালমিলিয়ে সরকারের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তা না হলে আগামীতে রপ্তানি আয় আরও কমে যাবে। তখন বিষয়টি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, প্রক্রিয়াজাত খাবার রপ্তানিসহ সম্ভাবনাময় প্রত্যেকটি খাতের দিকে নজর দিতে হবে এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা রোধে নিতে হবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। এ ছাড়া অবকাঠামোগত সমস্যা, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন না করা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন কারণে রপ্তানি বাণিজ্য কমে গেছে- এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়েও কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এ কথা মনে রাখা জরুরি যে, দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে রপ্তানি আয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। সঙ্গত কারণেই প্রক্রিয়াজাত খাবার রপ্তানিসহ সার্বিকভাবে দেশের রপ্তানি পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।