চালের দাম বৃদ্ধি

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন হঠাৎ করেই বাজারে চালের দাম বেড়েছে। গত দুই দিনের ব্যবধানে রাজধানীতে চালের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা। এ ছাড়া বিরি-২৮ চালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে দুই টাকা। তবে খুচরা দোকানগুলোতে বিরি-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দরে। কেবল কি চাল, বিস্ময়করভাবে বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। ঘণ্টায় ঘণ্টায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। দুই দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বাজারে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২৬০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। পেঁয়াজের পাশাপাশি চালের দাম কেন বাড়লো তা আমাদের বোধগম্য নয়। অথচ এখন চালের মৌসুম। আমরা মনে করি, হঠাৎ করে চালের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এটা অতি মুনাফাখোর ও লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কখনোই ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনা করে না। যেমন তারা ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিয়েছে পেঁয়াজের দাম। বিক্রেতাদের অভিমত 'আমরা বেশি মূল্য দিয়ে কিনলে কম মূল্যে বিক্রি করব কীভাবে?' বেশি মূল্য দিয়ে কিনেছে- তাদের এই বক্তব্য কি প্রমাণ সাপেক্ষ। চাল ও পেঁয়াজের ক্ষেত্রে তারা যে অজুহাত তুলেছে এই অজুহাত অত্যন্ত পুরনো। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ভাতপ্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে, তবে- এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চাল নির্ভর। তাদের পরিবারে অধিকসংখ্যক পোষ্য থাকায়, চালের পরিমাণও বেশি লাগে। মনে রাখতে হবে, চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দুই বছর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ১৪০ টাকা, আর এবার হয়েছে ২৬০ টাকা। পেঁয়াজের দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। আর চাল ও পেঁয়াজের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়লো। এটা তাদের অসুস্থ ব্যবসায়িক-সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা কখনোই জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে বারবার। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি এর বড় প্রমাণ। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন পেঁয়াজ চালসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।