রাজধানীতে মশার উৎপাত

প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া যখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল, সে সময় মশক নিধন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে পরিচালিত হলেও বর্তমানে ঝিমিয়ে পড়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম। অথচ পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, আসন্ন শীত মৌসুমকে সামনে রেখে বেড়েছে রাজধানীতে মশার উৎপাত। এমন অভিযোগ উঠে আসছে যে, বর্তমানে মশক নিধন কর্মীদের তেমনভাবে আর মাঠে দেখা যাচ্ছে না। অথচ সংস্থা দুটি ঘোষণা দিয়েছিল, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে বছরজুড়ে কাজ করবে তারা। কিন্তু দুই-তিন মাসের ব্যবধানে তাদের কার্যক্রমের গতি কমে এসেছে। আমরা বলতে চাই, যেহেতু রাজধানীতে মশার উৎপাত বেড়েছে বলে জানা যাচ্ছে- সঙ্গত কারণেই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে, যে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেটিও নিরসন করা আবশ্যক। ভুলে যাওয়া যাবে না, মশার উৎপাতে কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, বিশেষজ্ঞরা বলছেন- শুধু বিশেষ মৌসুম বা নির্দিষ্ট সময়ে ডেঙ্গুবিরোধী তৎপরতা দেখালে হবে না, বরং বছরব্যাপী এ কার্যক্রম জোরদার রাখতে হবে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার বিশেষজ্ঞদের মতকে আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ এবং এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। এমন বিষয়ও খবরে উঠে এসেছে, কিছুদিন আগে মশা মারতে সিটি করপোরেশনের ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেলেও বর্তমানে মশক নিধন কর্মীদের দেখা যাচ্ছে না- এটি আমলে নিতে হবে। অভিযোগ আসছে- মশার উৎপাত দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে মশার কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, মশার উৎপাত, নাগরিক সচেতনতা, করণীয়সহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদের এবং পরিস্থিতি নিরসনে কাজ করতে হবে। বলা দরকার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর মোস্তাফিজুর রহমানের বরাদ দিয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেছেন, 'এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ কার্যক্রমে গত ২২ জুলাই থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের টিম মোট দুই লাখ ১৫ হাজার ৮৪৩ বাড়ি পরিদর্শন করে ১ হাজার ৪৯৩ বাড়িতে লার্ভা পেয়েছে। মশক নিধনে আমাদের কার্যক্রম চলছে।' আমরা মনে করি, পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যক্রমকে প্রয়োজনে আরও বেগবান করতে হবে। ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কিউলেক্স মশা ও ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমবিষয়ক পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে তারা। মশা নিয়ন্ত্রণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের নিয়ে এই পর্ষদ গঠিত হয়েছে। প্রতি তিন মাস অন্তর এ পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে গত ৭ অক্টোবর থেকে কিউলেক্স মশার প্রজননস্থল অর্থাৎ হট স্পট চিহ্নিত করার জন্য দুজন কীট বিশেষজ্ঞ এবং ১০ জন শিক্ষানবিশ নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে গবেষণা করে হট স্পট অর্থাৎ কোনো কোনো এলাকায় কিউলেক্স মশার তীব্রতা কত তা নির্ধারণ করেছেন। আমরা মনে করি, ইতিবাচক উদ্যোগ জারি রাখতে হবে যেমন, তেমনি মনে রাখা দরকার মশার উপদ্রব বাড়ছে- ফলে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার ভয়বহতার বিষয়টিকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের তৎপর হতে হবে- যেন ভয়াবহ পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না হয়। সর্বোপরি বলতে চাই- এই বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে, এ সময়ে এসে প্রতি বছর মশার উৎপাত বাড়তে থাকে, তাই আরও বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। যদিও মশক নিধন কর্মী প্রয়োজনের তুলনায় কম এমনটিও জানা গেছে। ফলে এই আমলে নেওয়া, নগরবাসীকে সচেতন করাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে মশার উৎপাত থেকে রাজধানীবাসীকে রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।