সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮

সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সড়ক পথে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। ফলে দুর্ঘটনা রোধ করাসহ সড়ক পথের সামগ্রিক শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার যে, সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ কার্যকরের জন্য সোমবার থেকে মাঠে নেমেছে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে আইন সম্পর্কে কেউ কেউ জানলেও অনেক বাসচালকের অভিযোগ- কাগজপত্র না থাকলেও মালিক সড়কে নামতে তাদের নিষেধ করেননি। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহণ, পথচারী পারাপারের চিত্র তেমন বদলায়নি। বাসগুলোয় ধরা পড়েছে চিরাচরিত সব অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা। আমরা মনে করি, আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা যেমন জরুরি, তেমনি সচেতনতার বিষয়টিও আমলে নিতে হবে। কেননা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং যথাযথ সচেতনতা ও সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্যদিয়েই সুফল পাওয়া যেতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না, আইনে প্রয়োগ ঠিকমতো হয় না, কিংবা সড়কে নানা ধরনের অনিয়ম, চালকের বেপরোয়া মনোভাবসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আছে। ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ করতে হলে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আর এ লক্ষ্যে সুপরিকল্পিতভাবে পদেক্ষপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার- গত ১ নভেম্বর নতুন সড়ক পরিবহণ আইন কার্যকর করে সরকার। যদিও নতুন আইনে মামলা ও শাস্তি দেওয়ার কার্যক্রম মৌখিকভাবে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী। আর তথ্যমতে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে। রোববার সেতুমন্ত্রী জানিয়েছেন সেদিন থেকেই আইন কার্যকর শুরু হয়েছে। সোমবার মাঠে নামেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারা এদিন ৮৮টি মামলা ও দুটি গাড়ি জব্দ করেন। এটাও বলা দরকার, আইন সম্পর্কে পর্যাপ্ত প্রচার-প্রচারণা এবং সচেতনতার বিষয়টি নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ ছাড়া এটাও আমলে নেওয়া সমীচীন যে, নতুন সড়ক পরিবহণ আইন কার্যকর হয়েছে গত ১ নভেম্বর। আর প্রয়োগ শুরু হয়েছে সোমবার থেকে- এমন পরিস্থিতিতে জানা গেছে, নতুন আইনটি বাস্তবায়নের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি জেলায় বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। নতুন আইন প্রয়োগের প্রথম দিনে রাজধানীতে আটটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। প্রথম দিনেই রাজধানীর সড়কে দেখা গেছে গণপরিবহণের সংখ্যা খুবই কম। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী সাধারণ। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক এই বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। উলেস্নখ্য, খবরে এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, কোনো ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও ট্রাফিক পুলিশ নতুন সড়ক পরিবহণ আইন বাস্তবায়নে মাঠে নামায় ফের জনগণকে জিম্মি করে গণপরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা এ পথ থেকে সরকারকে পিছু হটাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সড়ক আইন কার্যকরে অভিযান পরিচালনার প্রথম দিন সোমবার কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর স্বাভাবিকভাবেই এতে যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েন। আমরা মনে করি, যথাযথ প্রস্তুতি ও সঠিকভাবে আইনের বাস্তবায়ন যেমন ঘটাতে হবে তেমনিভাবে যাত্রীরা যেন কোনোভাবেই জিম্মি হয়ে না পড়ে সেই দিকটা লক্ষ্য করে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, গণপরিবহণ খাতের পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, বিআরটিসির পর্যাপ্ত যানবাহন রাস্তায় নামানোসহ বিকল্প কোনো পথ উন্মুক্ত না রেখেই এ ধরনের বড় উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকারের কঠোর অবস্থান এবং তা বানচালে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের পাল্টা চ্যালেঞ্জে এ খাতে ফের দীর্ঘমেয়াদি নৈরাজ্যের আশঙ্কা রয়েছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় নিয়ে কোনো প্রকার নৈরাজ্য ছাড়াই সড়ক পথে যেন শৃঙ্খলা ফেরে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সামগ্রিকভাবে আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে সড়ক পথে সব ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ হোক এমনটি কাম্য।