অসাধু ব্যবসায়ী

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই কাম্য

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গত কয়েক মাস ধরেই অস্থিরতা রয়েছে পেঁয়াজের বাজারে। অস্থিরতা রয়েছে চালের বাজারেও। মাত্র ৩০ টাকা কেজি থেকে ধাপে ধাপে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ২৬০ টাকায় উঠে আসে, যা রীতিমতো বিস্ময়কর এবং অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। পেঁয়াজ বিমানে আমদানি করা সত্ত্বেও এখনও অস্থিরতাভাব কমেনি পেঁয়াজ বাজারে, তবে দাম কমতে শুরু করেছে। এর মধ্যে যোগ হলো এবার চালের বাজার। মাত্র চারদিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি বেড়েছে ২৫০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা। পেঁয়াজের পর হঠাৎ চালের বাজার চড়া হওয়ায় মিশ্র-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। ক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের মতোই চালের বাজারেও সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যবসায়ীরা দায়ী নয়। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছেন, ফলে প্রভাব পড়ছে বাজারগুলোতে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, পেঁয়াজের খোঁজে নতুন নতুন দেশে ধরনা দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানের পর এবার ইউরোপের চার দেশ থেকে আনা হচ্ছে পেঁয়াজ। এসব দেশ হলো নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ইউক্রেন ও স্স্নোভাকিয়া। এই চার দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, বিমানে করে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আমদানি করতে যে টাকা খরচ হয়েছে তা কৃষকের হাতে দিলে দেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হতো তাতে চাহিদা মেটানোর পরে রপ্তানিও করা যেত। সরকারের পেঁয়াজ আমদানি ব্যর্থতার পরিচয়। তার কথার মধ্যে এক ধরনের যুক্তি রয়েছে। চাল ও পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার মূল কারণ বাজার সিন্ডিকেট তথা অসাধু ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা। দামবৃদ্ধির জন্য মূলত ব্যবসায়ীরাই দায়ী। পেঁয়াজের কারসাজির জন্য এই পর্যন্ত তারা আড়াই হাজার 'অসাধু' ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন বলেছেন, সরকারের নানা উদ্যোগে পেঁয়াজের বাজার 'অতি দ্রম্নত' স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে তারা আশা করছেন। সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পেঁয়াজ নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। আমরা এর আগেও বলেছি, মূলত অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারণে বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। তারা একেক সময় একে অজুহাত দাঁড় করায়। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজন দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। আমরা মনে করি, সব অসাধু ব্যবসায়ী দেশের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাল ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। নিত্যপণ্য নিয়ে এই ধরনের অরাজক পরিস্থিতি যাতে তারা ভবিষ্যতে সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ ও তৎপর থাকতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।