মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস

প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গত দুই মাসে ৩৪ কোটি সাত লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে। আর এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আদায় হয়েছে এক কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত 'মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল, ভেজাল ওষুধ বিক্রয়ে গৃহীত কার্যক্রম' শীর্ষক ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেখানেই এ তথ্যগুলো জানানো হয়। পরে ওষুধের বিষয়ে শুনানি ও আদেশের জন্য ১২ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত। আমরা বলতে চাই, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা এবং জরিমানা আদায়ের বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। কেননা, ওষুধ যদি মেয়াদোত্তীর্ণ হয় কিংবা নকল হয় তবে এর ভয়াবহতা কীরূপ তা নতুন বলার অপেক্ষা রাখে না। যেখানে চিকিৎসার সঙ্গে মানুষের সুস্থতার প্রশ্ন জড়িত- সেখানে যদি ওষুধ নকল হয় বা ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়- তবে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। তথ্য মতে জানা গেছে, জরিমানা আদায় এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস ছাড়াও এ সময়ে ১৩ হাজার ৫৯৩ ফার্মেসি পরিদর্শন শেষে ৫৭২টি মামলা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল, ভেজাল ওষুধ সংরক্ষণের দায়ে দুটি ফার্মেসি সিলগালা করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, নকল ওষুধ যেন বাজারে না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। নকল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ অত্যন্ত শঙ্কাজনক- ফলে এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টরা কোনো প্রকার ছাড় দেবে না এমনটি কাম্য। প্রসঙ্গত, আমরা এটাও বলতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ, যেখানে এমনিতেই বিপুল জনগোষ্ঠীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের বিষয়- সেখানে যদি নকল ওষুধ বাজারে পাওয়া যায় তবে তা ভীতিপ্রদ এবং আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। এ ছাড়া এটাও মনে রাখা জরুরি যে, রোগীর তুলনায় চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং চিকিৎসক সংকটও বিদ্যমান, আছে আরও নানা ধরনের অভিযোগ; সঙ্গত কারণেই আবার যদি বাজারে নকল ওষুধ- এমন ঘটনা ঘটে তবে তা অত্যন্ত ভয়ের। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য বলেই আমরা মনে করি। যারা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ করেন কিংবা নকল ওষুধ বিক্রির সঙ্গে জড়িত তারা কোনোভাবেই ছাড় পেতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। জানা গেছে, অনেক সময় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি তাদের রিপ্রেজেন্টেটিভ দিয়ে চিকিৎসকদের প্রভাবিত করতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার যে প্রতিশ্রম্নতি দেন সেটা বন্ধের বিষয়েও আদালত বলেছেন। এ ধরনের কোনো অনিয়ম বা অন্যায় যেন না হয়। আমরা মনে করি, সামগ্রিক এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের তৎপর হতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, নকল বা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের বিষয়টি আমলে নেওয়ার পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আমলে নিন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করুন। ভুলে যাওয়া যাবে না যে, নানা রকম সংকটের পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযোগও বিদ্যমান। এ ছাড়া যেখানে দেশের বেশিরভাগ পরিবার অভাব-অনটনকে মোকাবিলা করে জীবনযাপন করে, সেখানে চিকিৎসা ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ও আমলে নিতে হবে। সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো এগিয়ে যাক এবং চিকিৎসাপ্রাপ্তি আরো সহজ হোক এমনটি কাম্য।