বাস চলাচল স্বাভাবিক নয়

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সড়ক পরিবহণ আইন সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনরত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিলেও বাস চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি- এমন খবরই শুক্রবারে প্রকাশিত পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণেই বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার যে, আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না থাকলেও তিন দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছিলেন দেশের অনেক এলাকার বাসচালক ও শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গাবতলী ও সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপালস্নার বাস ছাড়লেও সংখ্যায় ছিল কম। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে অর্ধেক বাসও ছাড়েনি। আমরা মনে করি, যখন সড়ক পথে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে তখন তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। ফলে দুর্ঘটনা রোধ করাসহ সড়ক পথের সামগ্রিক শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। এ ক্ষেত্রে যখন সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ কার্যকরের জন্য সোমবার থেকে মাঠে নামে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত- তারপর থেকেই সড়ক পরিবহণ আইন সংশোধনের দাবিতে অঘোষিত ধর্মঘট পালন করতে থাকে পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রীরা ভোগান্তির কবলে পড়েন দেশের বিভিন্ন স্থানে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করা এবং একই সঙ্গে জনসচেতনতার বিষয়টিও আমলে নিয়ে আইন বাস্তবায়নে সার্বিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। মনে রাখা দরকার সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং যথাযথ সচেতনতা ও সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্যদিয়েই এর সুফল পাওয়া যেতে পারে। প্রসঙ্গত এটাও বলতে চাই যে, এমন অভিযোগ বিভিন্ন সমেয়ই সামনে এসেছে- আইনের প্রয়োগ ঠিকমতো হয় না, কিংবা সড়কে নানা ধরনের অনিয়ম, চালকের বেপরোয়া মনোভাবসহ বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা আছে। ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ করতে হলে আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আর এ লক্ষ্যে সুপরিকল্পিতভাবে পদেক্ষপ গ্রহণ জরুরি বলেই আমরা মনে করি। উলেস্নখ্য, গত ১ নভেম্বর নতুন সড়ক পরিবহণ আইন কার্যকর করে সরকার। যদিও নতুন আইনে মামলা ও শাস্তি দেওয়ার কার্যক্রম মৌখিকভাবে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী। এটা ঠিক যে, আইন সম্পর্কে পর্যাপ্ত প্রচার-প্রচারণা এবং সচেতনতার বিষয়টি নিশ্চিত করা আবশ্যক। কিন্তু নতুন আইনটি বাস্তবায়নের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি জেলায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। আর যখন খবরে উঠে এসেছে, যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি, তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে গ্রহণযোগ্য সমাধান এবং আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। গণপরিবহন সংকটসহ বিভিন্ন কারণে যখন ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী সাধারণ তখন তা নিশ্চিতভাবেই পরিতাপের জন্ম দেয়, যা কাম্য হতে পারে না। লক্ষণীয়, কোনো ধরনের পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও ট্রাফিক পুলিশ নতুন সড়ক পরিবহণ আইন বাস্তবায়নে মাঠে নামায় ফের জনগণকে জিম্মি করে গণপরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা এ পথ থেকে সরকারকে পিছু হটাতে তৎপর হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় সড়ক আইন কার্যকরে অভিযান পরিচালনার প্রথম দিন কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা মনে করি, যে কোনো সংকট বা সমস্যা হলে তা আলাপ-আলোচনার মধ্যদিয়ে সমাধান করাই সঙ্গত। যাত্রীরা যেন কোনোভাবেই জিম্মি হয়ে না পড়ে সেদিকটা আমলে নেওয়া জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সড়ক পরিবহণ আইন সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনরত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিলেও বাস চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি- এই বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রম্নত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি কোনো প্রকার নৈরাজ্য ছাড়াই সড়ক পথে যেন শৃঙ্খলা ফেরে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সামগ্রিকভাবে আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে সড়ক পথে সব ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ হোক এমনটি কাম্য।