পাঠক মত

প্রকাশ | ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অকৃতকার্য হলেই সবকিছু শেষ এমনটা ভাবা অনুচিত আলস্নাহর সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। কালে কালে এই মানুষ এমনকিছু উলেস্নখযোগ্য কাজ করেছে যার কারণে তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে পত্রিকার পাতা খুললেই যেন আত্মহত্যার খবর প্রতিনিয়ত চোখে ভাসে! যেটা এখন অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক সভ্যতায় বসবাস করে এমন কর্মকান্ড আমরা কেউ আর দেখতে চাই না। জীবন যেহেতু আছে সমস্যাও আসবে তাই বলে নিজের মূল্যবান জীবনটা এভাবে শেষ করে দিতে পারি না। আসলে, সবকিছুর মূলে আমাদের একটাই সমস্যা, আমরা দুঃসময়ে ধৈর্যধারণ করতে পারি না; যার পরিণাম একসময় অত্যন্ত ভয়াবহরূপ ধারণ করে। অনেকসময় পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া বা প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল না পাওয়া, পারিবারিক কলহ, প্রেমে ব্যর্থ হওয়া এমনকি বেকারত্বের কষাঘাত, বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট, যৌন হয়রানি প্রভৃতি কারণে অনেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন! যারা এমনকাজ করার চিন্তা করেন তাদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন, আত্মহত্যা করলেই কি আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? বিভিন্ন সময়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা এরকম খারাপ মুহূর্তের মুখোমুখি হলেই ভাবতে থাকে, 'আমার জীবন শেষ! এ জীবন রেখে আর কী হবে, তার থেকে আত্মহত্যা করাই ভালো। নিজেও মুক্তি পাই পরিবারকেও মুক্তি দিই!' সত্যিই কি তাই? আপনি ওই নোংরা চিন্তার জগৎ থেকে একটু বের হয়ে এসে সেই কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরার চেষ্টা করুন। নিজের প্রতি সম্মানবোধ বজায় রেখে সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে নেয়ার চেষ্টা করুণ। তাহলে দেখবেন জীবনটা সত্যিই অনেক সুন্দর। সবকিছুই আপনার অনুকূলে চলে আসবে। আলস্নাহ আপনাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন সাময়িক ব্যর্থতায় আত্মহত্যা করার জন্য নয় বরং সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কীভাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখা যায় তার পরীক্ষা নিতে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলেও এটা একটা জঘন্যতম কাজের মধ্যে একটি! যারা মুক্তির জন্য আত্মহত্যাকেই একমাত্র পথ হিসেবে বেছে নেন, তাদের কাছে অনুরোধ, সেই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসুন। সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সাহস অর্জন করুন। এ পর্যন্ত যারা সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য আত্মহত্যা করেছেন তার সমস্যা আদৌ কি সমাধান হয়েছে নাকি সমস্যা আরও বেড়েছে? একে একে যদি জাতির মেধাবী সন্তানরা এভাবে ভুল পথে পা বাড়াতে থাকে তাহলে আত্মহত্যা করা একসময় ট্রেন্ডে পরিণত হবে। এমন আবহ বাংলাদেশের মাটিতে যেন কখনো তৈরি না হয় সেটাই আমরা চাই। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যসূত্রমতে, পৃথিবীতে প্রতিবছর আত্মহত্যা করেই প্রায় আট লাখ মানুষ মারা যায়। মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এই ঘটনাগুলো আরও বেশি ঘটছে। সেদিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান দশম! সাধারণত ১৫-২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর ১০০০০-১১০০০ মানুষ আত্মহত্যা করে, যার অধিকাংশই নারী! এটা খুবই দুঃখজনক। আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে, যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিই আসুক না কেন, তার অবশ্যই সমাধান আছে। সমস্যা তৈরিই হয় সমাধানের জন্য। তাই অহেতুক হতাশাগ্রস্ত হয়ে নিজের মূল্যবান জীবনটা অন্ধকারে বিলিয়ে দেয়ার কোনো মানে হয় না। দেশের জন্য অভিশাপ না হয়ে বরঞ্চ আমরা দেশের উন্নয়নের গর্বিত অংশীদার হব। প্রেমিক/প্রেমিকাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে না পেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স না পেলে অথবা এসএসসি/এইসএসসি পরীক্ষায় এ পস্নাস না পেলে আমার জীবন শেষ, এমন মনমানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সবসময় প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখলে জীবনযুদ্ধে অবশ্যই আমরা জয়লাভ করব। এবং শুধু সময়ের ব্যাপার। সবার জীবন অনেক সুন্দর হোক সেই প্রত্যাশা রইল। মনে রাখা দরকার, অন্তত নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করে হলেও আমাদের এই জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে হবে। সোহেল দ্বিরেফ শিক্ষার্থী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর চলুন সবাই এগিয়ে আসি পৃথিবীতে মানুষ কোনো না কোনো কিছুর প্রতি অনুরক্ত বা আসক্ত হয়ে পড়ছে। তার ভিতরে মাদক একটি ভয়ানক নেশা। এক কথায় বলতে গেলে সুস্থ ও সুন্দর সমাজ নিপাত করতে মাদকের বিকল্প কিছু নাই। মাদকাসক্তি বর্তমানে আমাদের তরুণ সমাজের সবচেয়ে বড় ব্যাধি। আজকের তরুণই আগামীর ভবিষ্যৎ আমাদের দেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত করার জন্য প্রয়োজন সুস্থ-শিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ শক্তি। অথচ সেই তরুণ শক্তি দিন দিন ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছে। মাদকাসক্তের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ কাজ করে। তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য কয়েকটি হলো- পারিবারিক অশান্তি, সঙ্গদোষ, কৌতূহল, অনুকরণ, প্রেমে ব্যর্থতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, বেকারত্ব ও দারিদ্র্য মূল্যবোধের অবক্ষয় ইত্যাদি। মাদকাসক্ত তরুণরা নেশার খরচ জোগানোর জন্য চুরি- ছিনতাই-অপহরণ-খুন ও ধর্ষণের মতো নানারকম সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত হচ্ছে। মাদক সেবনের ফলে ব্যবহারকারীর রক্তচাপ বেড়ে যায়। লিভার-কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যৌনক্ষমতা হ্রাস পায় ক্যান্সার ও ব্রেন টিউমার এবং এইডসসহ নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর স্বভাবিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিচ্ছে। অনেকে অকালে মৃতু্যবরণ করছে। তাই দেশকে ভয়াবহ মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পরিবারের সবার প্রতি সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য বজায় রাখতে হবে। তাই নেশা ছেড়ে কলম ধরি মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি। আকাশ হোসেন করিম শিক্ষার্থী সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর