এসএ গেমসে সোনা জয়

বিজয়ীদের অভিনন্দন

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠেয় ১৩তম দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ আরও তিনটি সোনা জয় করেছে। গেমস শুরুর দিনেই বাংলাদেশ ১৬টি পদক জেতে। এর মধ্যে সোমবার তায়কোয়ান্দোতে প্রথম স্বর্ণ জেতেন দিপু চাকমা। প্রথম দিন এই একটি স্বর্ণই আসে বাংলাদেশের পদক তালিকায়। এবারের গেমসে বাংলাদেশের প্রথম পদক জয় করেন নারী কারাতে হোমায়রা আক্তার অন্তরা। মঙ্গলবার কারাতে ডিসিপিস্নন থেকে এসেছে তিনটি সোনা। ছেলেদের বিভাগে আল আমিন দেশকে দ্বিতীয় সোনা জিতিয়ে আনন্দে ভাসিয়েছেন প্রথমে। পরে মেয়েদের বিভাগে মারজানা আক্তার প্রিয়া তৃতীয় ও হোমায়রা আক্তার অন্তরা চতুর্থ সোনা জিতে উপলক্ষ্যটার বিশেষত্ব আরও বাড়িয়ে দেন। তথ্য অনুযায়ী, এবারের এসএ গেমসে বাংলাদেশ ২৫টি খেলার ডিসিপিস্ননে অংশ নেবে। অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার বিদেশের মাটিতে অনেক বেশি ভালো করবে বাংলাদেশ এমন আশাবাদের কথা জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে তার ইতিবাচক রূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন খেলোয়াড়দের আরও নিবিড় প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এটা বলা যেতে পারে যে, সাফল্যের ভিত্তি হচ্ছে মনোভাব বা দৃষ্টিভঙ্গি। খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদদের শক্তি ও সামর্থ্যের কতটা ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে- এটা দিয়ে সাফল্য নির্ধারিত হয়। তা ছাড়া সাফল্য নির্ভর করে খেলোয়াড়দের পরিশ্রম, দক্ষতা, মনঃসংযোগ ক্ষমতা ও পরিকল্পনার পুনরাবৃত্তির ওপর। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এসএ গেমস আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের মান উন্নয়ন, বিভিন্ন খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান অনুপ্রেরণার চত্বর। ক্রীড়াঙ্গনের জন্য আলোর দিশারি। এসএ গেমস আছে বলে আমাদের ক্রীড়াঙ্গন এগিয়ে চলেছে, স্বপ্ন দেখাও সম্ভব হচ্ছে। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন পুরো বিষয়টিকে দেখছে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, আর তাই বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে- যেটি আগে দেখা যায়নি। ফলে সচেতনতা এবং খেলার গুরুত্ব রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে বাড়ছে বলে মনে করাও অযৌক্তিক নয়। পাশাপাশি আমরা এটাও মনে করি, যে উদ্দেশ্য, চেতনা এবং স্বপ্ন নিয়ে এই গেমসের শুরু, সেই চেতনা এবং লক্ষ্য সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সদস্য দেশগুলোকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তা উভয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিপুল প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মনে করেন ক্রীড়া বোদ্ধারা। ফলে আঞ্চলিক ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থেই এই গেমসকে বাঁচিয়ে রাখতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকেই কার্যকর উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। এসএ গেমস নিয়মিতভাবে আয়োজন করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ নিঃসন্দেহে। ফলে ক্রীড়াঙ্গনের এই বড় আসরটি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সার্কভুক্ত দেশগুলোর এনওসির মধ্যে ঐক্য, সুসম্পর্ক ও আস্থাও জরুরি। আস্থা ও বিশ্বাসের অভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে বিরাট জনসম্পদ। যত কিছুই বলা হোক না কেন, দক্ষিণ এশিয়ার ক্রীড়াঙ্গন কেন অলিম্পিকে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না- সংশ্লিষ্টরা এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে যথাযথ উদ্যোগ নিতে পারে। \হদক্ষিণ এশিয়ান গেমসে এ অঞ্চলের ৭ দেশের আড়াই হাজারেরও বেশি অ্যাথলেট ১১১৩ পদকের জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। বলাই বাহুল্য, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের মানের পরিপ্রেক্ষিতে বেশিরভাগ ক্রীড়াবিদ ও খেলোয়াড়ের স্বপ্ন হলো মাল্টিপল স্পোর্টস ডিসিপিস্ননের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক এই গেমসে অংশগ্রহণ এবং এই 'স্পোর্টস কার্নিভালে' দেশের জন্য অবদান রাখার সাধ্যমতো চেষ্টা। জন্মভূমির জন্য ক্রীড়াঙ্গনে লড়ার চেয়ে তো সম্মান ও গৌরবের আর কিছু নেই। সঙ্গত কারণে এই গেমসে অংশ নেওয়া আমাদের খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদরা আরও দূরের চত্বরে বড় স্বপ্ন দেখছেন এবং এটা যে বাস্তবসম্মত তা সোনা জয়ের মধ্য দিয়েও স্পষ্ট। ক্রীড়াঙ্গন চলমান প্যারেড, ফলে এখানে থমকে থাকার সুযোগ নেই। আমাদের দেশের খেলোয়াড়রা সেদিকে নজর দেবেন বলেই আমরা মনে করি। সর্বোপরি, সোনা জয়ের জন্য আমরা দেশের অ্যাথলেটদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি কোচ এবং টিম অফিসিয়ালদেরও সাধুবাদ জানাই। মনে রাখা দরকার, এই কৃতিত্ব অ্যাথলেটদের হলেও আনন্দের অংশীদার সমগ্র দেশবাসীর। দেশবাসীর প্রত্যাশা, এভাবেই আমাদের অ্যাথলেটরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম অর্জন করবে এবং দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনবে। অ্যাথলেটদের বিজয়ের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হোক- এই প্রত্যাশা আমাদের।