বয়স্ক শিক্ষা পরিস্থিতি

নারীদের এগিয়ে নিতে হবে

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সাক্ষরতা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেই প্রতীয়মান হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, শিক্ষার সঙ্গে সাক্ষরতার আর সাক্ষরতার সঙ্গে উন্নয়নের সম্পর্ক জড়িত। বাংলাদেশ সাক্ষরতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে- এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রাখা। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে যে, বয়স্ক সাক্ষরতার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। বিষয়টি উদ্বেগজনক বলেই আমরা মনে করি। তথ্য মতে, ৬০ বছরের বেশি বয়সি ৫৮ শতাংশ শহুরে ও ৪০ শতাংশ গ্রামীণ পুরুষ স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন, যেখানে মাত্র ২৪ শতাংশ শহুরে ও ১২ শতাংশ প্রামীণ নারী স্বাক্ষরজ্ঞান রয়েছে। উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বয়স্ক শিক্ষা নিয়ে ইউনেস্কোর চতুর্থ বৈশ্বিক প্রতিবেদনে গ্রাম ও শহরে লিঙ্গভিত্তিক সাক্ষরতার হার তুলে ধরা হয়। তবে এই বিষয়টি ইতিবাচক যে, নতুন প্রজন্মের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে সাক্ষরতার বৈষম্য মোচনে সফল হয়েছে বাংলাদেশ। জানা গেছে, ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি ছেলেদের মধ্যে সাক্ষরতার হার শহরে ৮০ শতাংশ ও গ্রামে ৭৪ শতাংশ, যেখানে একই বয়সি মেয়েদের মধ্যে এই হার যথাক্রমে ৮৩ শতাংশ ও ৮১ শতাংশ। আমরা মনে করি, এখন সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়টি আমলে নেওয়া সমীচীন যে, বয়স্ক সাক্ষরতার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আমরা এটাও উলেস্নখ করতে চাই- প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষাই প্রধান হলেও প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশে পাঁচ শতাংশেরও কম ১৫ বছর বা তার চেয়ে বয়সিরা শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়। বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিতগোষ্ঠী শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, যাদের মধ্যে প্রতিবন্ধী প্রাপ্তবয়স্ক, বৃদ্ধ, শরণার্থী ও অভিবাসী এবং সংখ্যালঘুগোষ্ঠীর সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া গ্রামে যথাযথভাবে বয়স্ক শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে এশিয়ায় গণশিক্ষা কেন্দ্রগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলেও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে উলেস্নখযোগ্য হারে বেড়েছে এসব শিক্ষা কেন্দ্রের (সিএলসি) সংখ্যা, যেগুলোতে সাক্ষরতা, দক্ষতা ও নানা কারিগরি প্রশিক্ষণে গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বয়স্ক শিক্ষায় অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে বলে প্রতিবেদনে সতর্ক করেছে ইউনেস্কো। আমরা মনে করি, এই সতর্কতার বিষয়টিকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করা অপরিহার্য। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বয়স্ক শিক্ষায় সবার সুযোগ ও সুবিধা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগসহ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের যে আহ্বান জানানো হয়েছে তা আমলে নিতে হবে এবং এর পাশাপাশি যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে বয়স্ক সাক্ষরতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে, এই বিষয়টি কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রতিবন্ধকতাগুলো কী- তা চিহ্নিত করে সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করা। এ কথাও কোনোভাবে ভুলে যাওয়া যাবে না যে, বাংলাদেশের সাক্ষরতার হারকে বৃদ্ধি করতে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা বজায় রাখার পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়াতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ এবং এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক- এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।